অনলাইন মাধ্যমে দ্বীনী ভাই-বোনদের অনেকেই ইসলাম এর প্রচার এবং প্রসার নিয়ে অনেক আগ্রহ প্রকাশ করেন। অনেকেই ফেসবুক, টুইটার, বিভিন্ন ই-মেইল গ্রুপ (জিমেইল, ইয়াহু মেইল), ওয়েবসাইট ইত্যাদির মাধ্যমে নিজেদের সামর্থ অনুযায়ী দাওয়াতী কাজ করে থাকেন।
কিন্তু আমরা কি ভেবে দেখেছি ইসলামের আলো আমাদের নিজ পরিবারের মধ্যে কতটা প্রবেশ করেছে? আমার নিজ পিতা-মাতা, ছোট ভাই বা বড় বোন, খালা বা ফুফু, নানী বা দাদা – উনাদের কি আমরা আমাদের নিজেদের ব্যস্ত জীবনের সময় থেকে কিছুটা সময় ব্যয় করে হলেও দাওয়াহ করছি? কুর’আন এর এই আয়াত আমাদের কি মনে থাকে সর্বদা?
”মুমিনগণ, তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের *পরিবার-পরিজন*কে সেই অগ্নি থেকে রক্ষা কর, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও প্রস্তর, যাতে নিয়োজিত আছে পাষাণ হৃদয়, কঠোরস্বভাব ফেরেশতাগণ।” [সূরা আত-তাহরীম , আয়াত ০৬]
আপনি কখনোই একা নিজে পরিপূর্ণ ইসলাম পালন করতে পারবেন না যদি না পরিবারের সদস্যরা আপনাকে সহায়তা করে। এ জন্যে নিজে ইসলাম বুঝার পরপরই তাদের মাঝে দাওয়াতী কাজ শুরু করে দেওয়া উচিত।
-দাওয়াহ টা শুরু হতে পারে আপনার ব্যবহার দিয়ে। ইসলাম মানার পরে আপনার জীবনে যে পজিটিভ একটা পরিবর্তন এসেছে তা কিন্তু আপনার ব্যবহারেই ফুটে উঠবে।
-পরিবারে দাওয়াহ করার জন্যে প্রয়োজন অনেক ধৈর্যের, কেননা আমাদের পরিবারের মানুষদের মাঝে অনেকদিনের জমে থাকা শিরক-বিদাত-কুসংস্কার রয়েছে। সঠিক তাওহীদ এর জ্ঞানই পারে আল্লাহর রহমতে উনাদের সঠিক ইসলামের পথে আনতে। -পরিবারকে দাওয়াহ করতে গেলে রাগ নিয়ন্ত্রণ করতেই হবে-চাই সেটা খুব কষ্টসাধ্য হোক না কেন।
** এবার আসুন আপনি যদি পরিবারকে দাওয়াহ একেবারে না করে অন্য সবাইকে (যেমন- বন্ধু-বান্ধব, পাড়া-প্রতিবেশী, মসজিদের মুসল্লী) নিয়ে ব্যস্ত থাকেন তাহলে কি ধরনের সমস্যায় পরতে পারেন তা দেখে নেয়া যাক -
১. ছেলেদের ক্ষেত্রে সমস্যা শুরু হয় দাঁড়ি রাখা এবং টাখনুর উপর প্যান্ট পড়া শুরু করলে আর মেয়েদের ক্ষেত্রে সঠিকভাবে হিজাব পড়া শুরু করলে। পরিবারকে দাওয়াহ না করলে এ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করবে।
২. ছেলেদের হালাল উপার্জনের পথে বাধা হতে পারে পরিবারের উচ্চভিলাসী চিন্তা-ভাবনা যা বাস্তবায়ন করতে গেলে হারাম উপায় অবলম্বন করা ছাড়া কোন উপায় থাকে না। তাই হালাল উপার্জন যে ইবাদত কবুলের শর্ত- এর আলোকে পরিবারকে দাওয়াহ করতে হবে।
৩. অনেক শিক্ষিত মেয়েদেরকে তাদের পরিবার বাইরে প্রচলিত পরিবেশে চাকুরী করতে বাধ্য করে থাকে অথচ ওই মেয়েটি সেটা চায় না। সে চায় তার পুরোটা সময় সংসারে ব্যয় করতে। আবারো এখানে দাওয়াহ এর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করবেন।
৪. ছেলে-মেয়েদের বিয়ের ক্ষেত্রে এ সমস্যা প্রকট রূপ লাভ করে থাকে । দ্বীনী ছেলে-মেয়েরা স্বভাবতই তাদের বিয়ের ক্ষেত্রে প্রথমে ‘দ্বীন’-কেই প্রাধান্য দেয়, বৈষয়িক ব্যাপারে তার ছাড় দিতে রাজি থাকে। কিন্তু পরিবারের লোকেরা বৈষয়িক/দুনিয়াবী ব্যাপারে কোনরূপ ছাড় দিতে ত চান-ই না, তাদের কাছে দ্বীন মানে নামায-রোজা -: হোক সেটা অনিয়মিত (!!)।
কি সাংঘাতিক !
এ ক্ষেত্রে আপনি যদি পরিবারকে দাওয়াহ না করে নিজে এগিয়ে যান ইসলামের পথে, তাহলে বিয়ের ক্ষেত্রে এসে আপনাকে এসব জটিলতার মুখোমুখি হতে হবে। তাই আসুন না, আমরা আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করতে থাকি পরিবারকে দাওয়াহ করার জন্যে। তাদের জন্যে আল্লাহর কাছে বেশী বেশী দু’আ করবো ইন শা আল্লাহ।
নিজের পরিবারকে সময় দেওয়া, দ্বীন এর বিভিন্ন দিক তাদের সামনে সুন্দর করে তুলে ধরা প্রয়োজন । সাথে সাথে এই আয়াতটি ভুলে গেলেও কিন্তু চলবে না !
”তুমি যাকে চাও তাকে হেদায়াত দান করতে পারো না। বরং আল্লাহ যাকে চান তাকে হেদায়াত দান করেন এবং হেদায়াত প্রাপ্তদের সম্পর্কে তিনি খুব ভাল করেই জানেন” [সূরা কাছাছ ,আয়াত: ৫৬ ]
Hey there! Looks like you're enjoying the discussion, but you're not signed up for an account.
When you create an account, we remember exactly what you've read, so you always come right back where you left off. You also get notifications, here and via email, whenever new posts are made. And you can like posts and share your thoughts.
Sign Up
Bookmarks