একটি সহজ জীবন। (৪র্থ পর্ব)
- উস্তাদ নোমান আলী খান

মাঝে মাঝে জীবনে অতিরিক্ত চাপের কারণে আমরা হতচকিত হয়ে পড়ি।

আমরা সহজেই দুঃখ-হতাশায়, উদ্বেগ বা উৎকণ্ঠায় একেবারে ভেঙ্গে পড়ি। এরকম হওয়া দোষের কিছু নয়।
কিন্তু আমাদেরকে শিখতে হবে কীভাবে আমরা আল্লাহর কিতাবের মাধ্যমে এই কষ্টকর অভিজ্ঞতায় মানসিক শক্তি অর্জন করবো, নিজেদেরকে কাজে নিয়োগ করবো এবং ব্যস্ত করে তুলব।

রাসুলুল্লাহ (স) যেসব কাজে নিজেকে ব্যস্ত করে রাখতেন তা ছিল দুই প্রকার। দয়া করে মনে রাখুন। দুই ধরণের কাজ আছে যা আপনাকে ব্যস্ত করে রাখতে পারে। রাসুলুল্লাহ (স) হয় এমন কোন কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখতেন যা আল্লাহকে খুশি করতো, অথবা তিনি এমন কোন কাজে ব্যস্ত থাকতেন যা আল্লাহর কোন সৃষ্টির উপকার করতো। তিনি হয় শুধু আল্লাহর জন্য কিছু করতেন যেমন, নামাজ পড়া, জিকির করা ইত্যাদি। এই কাজগুলো ছিল শুধু আল্লাহর জন্য। অথবা তিনি কাউকে সাহায্য করতেন। তিনি কাউকে পথ দেখাতেন, শিক্ষা দিতেন। এমনকি তিনি মানুষদের জীবিকা উপার্জনের জন্যেও সাহায্য করতেন। এভাবে তিনি অন্য মানুষদের সব ধরণের সাহায্য করতেন।

এখন আপনি নিজেকে প্রশ্ন করুন, এই দুই ধরণের কাজের কোনটি আপনি করছেন? কোন কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখছেন? আমি কি এমন কিছু করছি যা আল্লাহকে খুশি করছে? বা আমি কি এমন কিছু করছি যা কারো জীবনে স্বস্তি নিয়ে আসছে? বস্তুত, আল্লাহ অন্য একটি সূরায় রাসুলুল্লাহ (স) কে এই কাজগুলো সম্পর্কে বলেছেন। তিনি বলেন - فَأَمَّا الْيَتِيمَ فَلَا تَقْهَرْ - "সুতরাং আপনি এতীমের প্রতি কঠোর হবেন না" - وَأَمَّا السَّائِلَ فَلَا تَنْهَرْ -" আর ভিক্ষুককে ধমক দিবেন না।" وَأَمَّا بِنِعْمَةِ رَبِّكَ فَحَدِّثْ - "এবং আপনার পালনকর্তার নেয়ামতের কথা প্রকাশ করুন।" (৯৩ঃ ৯-১১)

কেন আল্লাহ রাসুলুল্লাহ (স) কে এসব কথা বলেছেন? কারণ, আপনি ইয়াতিম ছিলেন, এখন যান ইয়াতিমের দেখাশোনা করুন। আপনার টাকাপয়সা ছিল না, এখন যান যাদের টাকা পয়সা নেই তাদের সাহায্য করুন।

তাই আমাদেরকেও হয় এমন কিছুতে ব্যস্ত থাকতে হবে যা আমাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তী করে তোলে, অথবা এমন কিছুতে ব্যস্ত থাকতে হবে যা অন্যদের জীবনে স্বস্তি নিয়ে আসে। এভাবে যখন আপনি আল্লাহর অধিকারের ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন এবং যখন আপনি অন্যদের জীবনে স্বস্তি নিয়ে আসার জন্য কাজ করবেন; তখন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আপনার জীবনেও স্বস্তি নিয়ে আসবেন।

মূল লেকচারঃ A life of ease - Nouman Ali Khan