সুদানের নাগরিক আব্দুল বাতিন কানাডাতে একটি মেডিকেল পরীক্ষায় অংশ নেন এবং দুইশত দশ ডলারের মানিঅর্ডার পরীক্ষার ফি বাবদ জমা দেন। প্রায় মাস দেড়েক পর আব্দুল বাতিনের বাসার ঠিকানায় একটা এক ডলারের চেক আসে।

চেকের সাথে ইনবয়েস। সাথে একটা নোটঃ পরীক্ষার ফি দুইশত নয় ডলার । আপনি জমা দিয়েছেন দুইশত দশ ডলার। বাড়তি এক ডলারের চেক আপনার ঠিকানায় পাঠানো হলো।

আব্দুল বাতিন কানাডা আসার পর -ঘর ভাড়া নিয়েছেন, বাড়ির মালিক হয়েছেন, বিদ্যুত, গ্যাস, পানির লাইন নিয়েছেন। কোথাও তাকে কারো সুপারিশ নিতে হয়নি। কোথাও তাকে একটা ডলার কাউকে ঘুষ দিতে হয়নি।

অথচ কানাডা আসার আগে- নিজ দেশে পাসপোর্ট প্রাপ্তি থেকে শুরু করে এমন কোনো কাজ নাই। যেখানে তাকে ঘুষ দিতে হয়নি। সুপারিশ নিতে হয়নি। একটা কাজ সমাপ্ত করতে মাসের পর মাস অফিসের অফিসার থেকে কেরানীর টেবিলে টেবিলে ঘুরতে হয়নি। শুধু সুদানের একটা মাত্র অফিসে আব্দুল বাতিনকে কোনো ঘুষ দিতে কিংবা সুপারিশ নিতে হয়নি। সেটা হলো- খার্তুমে অবস্থিত কানাডার এ্যাম্বেসি।

আব্দুল বাতিন হাতে এক ডলারে চেক নিয়ে ভাবছেন- এক ডলারের চেক ফেরত পাঠাতে পোস্টাল, মেইল, স্ট্যাপ ইত্যাদি বাবদ ওদের নিশ্য়চই আরো অনেক বেশি খরচ হয়েছে। খামোখা এক ডলার ফেরত না পাঠালে কি এমন ক্ষতি হতো।

আসরের নামাজের পর ঈমামের সাথে ব্যাপারটি শেয়ার করেন। ঈমাম শিকান্দার হাসমি যিনি শুধু ইসলামিক স্কলারই নন, কনকর্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জার্নালিজমের উপর এবং কার্লেটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিলানথ্রপি এবং নন প্রফিট লিডারশীপের ওপর মাস্টার্স ডিগ্রী নিয়েছেন।

তিনি বলেন - এখানে এক ডলার ব্যাপার না। ব্যাপার হলো- নৈতিকতা আর নিয়মতান্ত্রিকতা। এই নীতির কারণেই এক ডলার কেউতো ঘুষ নেয়ই না। বরং অতিরিক্ত এক ডলার গ্রহণ করলেও নিজ দায়িত্বে সেটা ফেরত দেয়।

ঘুষ- দুর্নীতির সিস্টেম দেশকে ধ্বংস করে আর নীতি, নৈতিকতার সিস্টেম এক দেশকে উন্নত করে। আমরা মুসলিম দেশে কম ওয়াজতো করিনা। এমন দিনতো নেই নীতি, আদর্শের কথা বলিনা। সবাই শুধু শুনেই যায়। কিন্তু কারো চরিত্রের বদল হয়না।

আর এরা কোনো ওয়াজই শুনলোনা। কিন্তু নীতির দিক দিয়ে কত উন্নত হয়ে গেলো। ইহুদি নাসারা বলে যাদের গালমন্দ করি- তাদের দেশে একটা অফিস খুঁজে পাওয়া যায়না- যেখানে দূর্নীতি আর ঘুষের লেনদেন হয়।

আর মুসলমানের দেশে এমন একটা অফিস পাওয়া যায় না - যেখানে ঘুষ আর দূর্নীতি না হয়। সুতরাং ঈমানদার বলতে- আসলে কাদেরকে বুঝবেন। ভাবেন। একটু গভীর ভাবে উপলব্ধি করেন।

ইহুদি নাসারার দেশে মুসলমান নেই । কিন্তু ইসলামের সবকিছু আছে। আর আমাদের দেশে ইহুদি নাসারাও নেই, নৈতিকতাও নেই, ইসলামও নেই। নামের সাথে মুহম্মদ আর ইসলাম জড়ানো শুধু কোটি কোটি মুসলমান আছে।

মহম্মদ (সাঃ) এই পবিত্র নাম সাথে নিয়ে সব অপবিত্র কাজ করি। ইসলাম নাম সাথে নিয়ে ইসলামকে বিক্রি করি। মুহম্মদ (সাঃ) নাম
সাথে আছে ,মুহম্মদ (সাঃ) এর আদর্শ সাথে
নাই। ইসলাম নাম সাথে আছে ,
ইসলামের কোনো ন্যায়নীতি আর আমাদের মাঝে নাই।

লেখাঃ আরিফ মাহমুদ