সিজদা মানে আমরা বুঝি যে মাটিতে ঠেকিয়ে মাথা নত করা যেমন কিনা নামাজে করা হয় । এটা সিজদার এক ধরণ । সিজদার আরেক ধরণ হচ্ছে মানসিক বা আত্মিক , যার দ্বারা মন থেকে বা আত্মিক ভাবে কাউকে স্বীকারোক্তি দেওয়া বা তাঁর অনুগত্য প্রকাশ করা হয় । কোরআনে উভয় প্রকৃতির সিজদার কথা বলা হয়েছে । এখানে আমরা মানসিক সিজদার পক্ষে কোরআনের কিছু আয়াত তুলে ধরব ।

১- নবী ইউসুফ স্বপ্নে দেখেছিলেন যে ১১ টা গ্রহ , চাঁদ ও সূর্য তাঁর সামনে সিজদা করছে । (১২:০৪ )
২- ছায়া আল্লাহর সামনে সিজদা করে । (১৬:৪৮)
৩- সুর্য , চন্দ্র , গাছ পালা ইত্যাদি আল্লাহকে সিজদা করে (২২:১৮)


আমরা জানি গ্রহ-নক্ষত্র , গাছ-পালা এদের পক্ষে মানুষের মতো সিজদা দেওয়া সম্ভব নয় ।

কোরআনের বহু জায়াগাতে আদম (আঃ) ও ইবলিসের ঘটনার বর্ননা আছে । সুরা বাক্বারার ৩০ থেকে ৩৪ আয়াতে পরিষ্কার করা হয়েছে যে মহান আল্লাহ্- আদম (আঃ) কে এমন জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছিলেন যা ফেরেশতাদের বা ইসবলিসের জানা ছিলনা । এই জ্ঞানই হচ্ছে ফেরেশতা ও ইবলিসের উপরে আদমের শ্রেষ্ঠত্ত্বের একমাত্র কারন । তাই মহান আল্লাহ্- তাদেরকে আদমকে শ্রেষ্ঠ হিসেবে স্বীকোরক্তি দিতে সিজদার কথা বলেছেন । এইটা ঐ সিজদা না যে সিজদা আমরা মহান আল্লাহর উপাসনার জন্য করে থাকি ।

আরো একটি বিষয় লক্ষ্য করার যে ইবলিস আগুনের তৈরি । (৩৮:৭৬ )
আগুনের মানুষের মতো শারীরিক আকৃতি নেই , তাই উপুড় হয়ে বা নতজানু হয়ে আদমকে সিজদা করার চিত্র কল্পনা করা ইসবলিসের জন্য অবান্তর , যেমন কিনা গাছ-পালা , গ্রহ-নক্ষত্র এর জন্য তা অকল্পনীয় ।

স্বল্প পরিসরে তাই বলা যায় যে মহান আল্লাহ্- ইবলিসকে শারীরিক সিজদা নয় বরং আদমকে তাঁর চেয়ে শ্রেষ্ঠ বলে মেনে নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন ।