'আমাদের বাবা কবে বাপি হয়ে গেছেন।
আমরা বুঝতে পারি নি
আমাদের কবে সর্বনাশ হয়ে গেছে। '
-তারাপদ রায়।
আজকের পত্রিকা হাতে নিয়ে মনে হল,দেশে মত্ত মাতালদের একটা উৎসব চলছে।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আগানগরের আল আমিন ওয়াশিং এর মালিক মো.রফিককে ছুরি মেরে মেরে ফেলেছে মাদকসেবীরা।
বগুড়ায় সাতজন মারা গেছেন রেক্টিফাইড স্পিরিট পান করে। গাজীপুর রিসোর্টে অবকাশ কাটিয়ে এসে এ পর্যন্ত তিনজন মারা,গেছেন মদপানে।
বৃহস্পতিবার বিকাল চারটায় ছেলেবন্ধুর সাথে স্কুটিতে চেপে বের হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী।
৩৩ ঘন্টা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার পর জানা যায় সম্ভাব্য বিষাক্ত মদপানে মৃত্যু হয়েছে তার বন্ধুর বন্ধুর বাড়িতে রাত কাটানোর পর।
অর্থনৈতিক দিক দিয়ে প্রাথমিক পর্যায় পার হয়ে আমরা এখন উচ্চ মাধ্যমিকের দিকে ধাবমান। কিন্তু আর্থিক এই হঠাৎ সচ্ছলতা ধারণ করার মতো সামাজিক কাঠামো আমাদের আছে কি?
জীবন ধারণের জন্য খাদ্য সংগ্রহের চিন্তা আমাদের অনেকের এখন নেই। তাই নজর চলে গেছে মদ আর নারীদেহের প্রতি।
সে নারী প্রেমিকাই হোক, আর রাস্তার ফুলওয়ালীই হোক। উন্নত বিশ্বে মদপান আর দৈহিক সংসর্গের সাথে দৈনন্দিন কাজের যে একটা সমন্বয় ওরা তৈরী করেছে, তা আমাদের দেশে হয় নি । প্রায়ই মাত্রা ছাড়া ঘটনা ঘটে যাচ্ছে।
এর সাথে আরো কিছু অনুষঙ্গ রয়েছে।
ক. প্রগতিশীলতা সম্পর্কে একটি মোহ :মদ না খেলে, মেয়েদের সাথে উচ্ছৃঙ্খলভাবে না মিশলে রক্ষণশীল, গোঁড়ার খাতায় নাম উঠে যেতে পারে। এই মোহে অনেক ছেলে এতে পা দেয়।
খ. অর্থ খরচের পথ খুঁজে না পাওয়া :অনেক পরিবারেই এখন প্রয়োজনের চেয়ে বেশি অর্থ। ছেলেমেয়েদের অনেকেই হাজার হাজার টাকা হাতখরচ দেন। বলেন, টাকা তো ছেলেমেয়েদের খরচের জন্যই।
গ.পত্রিকায় সংস্কৃতির পাতার নামে প্রায়ই অশ্লীল ছবি ছাপা হয়। ভ্রষ্ট সাংবাদিকদেরা বলেন, 'সাহসী পোজ। '
ঘ. নাটক সিনেমায় এমন সব চরিত্র আর পোশাক দেখানো হয়, যা আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে সম্পূর্ণ অবাস্তব। এই অবাস্তব ও অশালীন জীবন যাপনের মোহ কোমলমতি তরুণদের মাঝে তৈরী হয়।
ঙ. অনেক ধর্মীয় সমাবেশেই চরিত্র গঠন, অপকর্ম থেকে বিরত থাকা, অফিসিয়াল দায়িত্ব পালন নিয়ে কোনো আলোচনা হয় না।
আলোচনার বিষয় থাকে কে কে কাফের এবং হাত বুকের উপর না নাভীর উপর বাঁধতে হবে এসব।
ধর্মের মূল শিক্ষা থেকে ও তরুণরা বঞ্চিত হয়।
চ. লজ্জাহীনতার সংস্কৃতি :বাবা মা, শিক্ষক আর্থিক ভাবে ও সৎ নন। নৈতিকভাবে তো নয়ই।
সন্তানের সামনেই বাবা মা লোক ঠকানো, প্রতারণার গল্প করেন নিজেদের কৃতিত্ব হিসেবে। শিক্ষক তো এখন আর কোনো রোল মডেলই নন।
মেধার চেয়ে চাটুকারিতা তার বড় শক্তি। প্ল্যাজিয়ারজম বা চৌর্যবৃত্তি তাঁর বুদ্ধিমত্তার বড় পরিচয়। ধরা পড়লে ও চাকরি থেকে যায়। একই ভাবে মেডিক্যাল এর নকল ছাত্ররা ও থেকে যায়।
এ সমাজে আসল নকল আলাদা করা যাবে কিভাবে? উপরের কথাগুলো এখনই চিন্তা না করলে সামনে সমূহ বিপদ। হয়তো নেশা করা, অবৈধ যৌনকর্ম, হত্যা করবে আমাদেরই কারো ভাই, কারো সন্তান।
তখন উচ্চ মধ্যম টাকা দিয়ে কি করবো আমরা?
Hey there! Looks like you're enjoying the discussion, but you're not signed up for an account.
When you create an account, we remember exactly what you've read, so you always come right back where you left off. You also get notifications, here and via email, whenever new posts are made. And you can like posts and share your thoughts.
Sign Up
Bookmarks