বিসমিল্লাহ

**

বিয়ের পরে আমি তাকে দ্বীনদার বানিয়ে ফেলবো
___________________________________
(এক)

অনেক গার্জিয়ান বিয়ের জন্য পাত্র বা পাত্রী দ্বীনদার কিনা, এই বিষয়টাকে মোটেও গুরুত্ব দেয় না।

অনেক প্র্যাকটিসিং মুসলিমরাও এই বিষয়ে শিথিলতা করে। অনেক ভাইয়েরা কোন সুন্দরী মহিলা বা ধনীর দুলালীকে বিয়ের লোভে দ্বীনের বিষয়টাকে ফোর্থ সাবজেক্টের মতো ‘অপশনাল’ বানিয়ে ফেলে।

তারা বলে, “বিয়ের পরে আমি তাকে দ্বীনদার বানিয়ে ফেলবো!”

এটা আসলে তাদের অলীক কল্পনা ছাড়া আর কিছুই না।

যেই ছেলে বা মেয়েকে তার বাবা-মা ঝাড়ু দিয়ে পিটিয়ে, লাঠি দিয়ে মেরে ২০ বা ২৫ বছরেও মানুষ বানাতে পারে নি, আপনি তাকে বিয়ে করে মুহূর্তের মাঝে দ্বীনদার বানিয়ে ফেলবেন?

একজন ব্যক্তি বর্তমানে কতটুকু দ্বীন মানে, সেই অবস্থা দেখে তাকে বিয়ের জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

ভবিষ্যতে সে কত বড় আল্লাহওয়ালা হয়ে যাবে, সেই সম্ভাবনা দেখে বিয়ে করা মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ নয়।

এইভাবে অলীক আশায় বদ-দ্বীনি মেয়ে বা ছেলেকে বিয়ে করে বর্তমানে অনেক ভাই ও বোনেরা চোখের পানি ফেলে আর আফসোস করে।

আল্লাহ আমাদেরকে হেফাযত করুন।
___________________________________
(দুই)

এ বিষয়ে দুঃখজনক কিন্তু শিক্ষণীয় এমন একটি আশ্চর্যজনক কাহিনী শুনুন।

ইসলামের দ্বিতীয় স্বর্ণযুগ তাবেয়ীদের যামানায় ইমরান ইবনে হিত্তান নামক একজন ব্যক্তি ছিলেন।

প্রথম জীবনে তিনি আহলে সুন্নাহর একজন আলেম ছিলেন, কিন্তু পরবর্তী জীবনে তিনি ‘খারেজী’ মতবাদ গ্রহণ করেন।

....ইমাম ইবনে কাসীর রহি’মাহুল্লাহ ইমরান ইবনে হিত্তান সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন,

“ইমরান ইবনে হিত্তান হচ্ছে একজন খারেজী। মূলত প্রথমে সে আহলে সুন্নাহর অনুসারী ছিলো, কিন্তু পরবর্তীতে সে একজন খারেজী মহিলাকে বিয়ে করে।

সেই মহিলা ছিলো অত্যন্ত সুন্দরী, আর সে নিজে দেখতে খুব খারাপ ছিলো। সুতরাং ইমরান সেই মেয়েকে ভালোবেসে ফেললো।

প্রথমে ইমরান তার স্ত্রীকে আহলে সুন্নাহর আক্বীদাতে ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিলো। কিন্তু সেই মহিলা ছিলো অত্যন্ত গোঁড়া, সে আহলে সুন্নাহর আক্বীদাতে ফিরে আসতে অস্বীকার করে।
বরং সে ইমরানকে খারেজী মতবাদ গ্রহণ করিয়ে ছাড়ে, যদিও ইতিপূর্বে সে আহলে সুন্নাহর একজন আলেম ছিলো।”

উৎসঃ আল-বিদায়াহ ওয়া আন-নিহায়াহঃ ৯/৬৪।

তার বিবাহের সময় সে বলেছিল, “আমি তাকে (সেই মহিলাকে) পরিবর্তন করে (আহলুস সুন্নাহর) দিকে ফিরিয়ে আনবো।”

কিন্তু পরবর্তীতে সেই মহিলা উল্টা ইমরানকে খারেজী মতবাদের দিকে নিয়ে যায়।”

___________________________________

৩/

নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “সাধারণত মেয়েদের চারটি গুণ দেখে বিবাহ করা হয়, তার ধন-সম্পদ, বংশ-মর্যাদা, সৌন্দর্য এবং ধর্ম।

কিন্তু (হে আমার উম্মতের পুরুষেরা) তোমরা (বিয়ের জন্য) ধার্মিক মেয়েকে অগ্রাধিকার দাও।

আর যদি (তোমরা ধার্মিক মেয়েদের বিয়ে না করো) তাহলে তোমাদের দুই হাত অবশ্যই ধূলায় ধূসরিত হবে (অর্থাৎ পরিণাম খারাপ হবে)।”

সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম।

........
একজন মানুষের জীবনে স্ত্রী বা স্বামীর চেয়ে ঘনিষ্ঠ সংগী আর কেউ হয় না। সেইজন্য স্ত্রী বা স্বামী নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমাদের, আমাদের গার্জিয়ানদের আরো অনেক বেশি সচেতন হওয়া উচিত।
___________________________________

সংগৃহীত ও সংক্ষিপ্ত
___________________________________