/* */

PDA

View Full Version : নবীর (সাঃ) এর সাথে বিবাহকালে হযরত আয়েশার (রাঃ) এর বয়স কি সত্যই ৬/৭ ছিল ?



Abrars
01-12-2021, 12:30 PM
নবী মুহাম্মদের (সাঃ) এর সাথে মা আয়েশার (রাঃ) এর বাল্য বিবাহের বিষয়টি ইসলামের কটাক্ষকারীদের কাছে যেমন এক প্রিয় হাতিয়ার তেমনি যুক্তিপ্রবন আধুনিক মনা মুসলিমদের জন্য অস্বস্তির কারন । পক্ষান্তরে নীচু মনা মুসলিমদের জন্য নবীর নামে চালান দেওয়া এই অনৈতিক কাজ তাদের কুকর্মের লাইসেন্স স্বরূপ । সহিহ হাদিসের দোহাই দিয়ে বর্নিত হয়েছে যে হযরত আয়েশার বছর যখন ৬/৭ তখন নবী মুহাম্মদ (সাঃ) তাকে বিবাহ করেন এবং ৯ বছরে আয়েশাকে গৃহে নিয়ে যান । তখন নবীর বয়স ছিল ৫৪ বৎসর ।

৫০ ঊর্ধ কোন পুরুষের সাথে আপনার ৬/৭ বৎসরের মেয়ে বা বোনকে কি বিবাহ দিবেন ? আমার বিশ্বাস ১০০% সুশীল মনের কাছ থেকে উত্তর আসবে ‘কক্ষন না’ । ৬/৭/৯ বৎসরের মেয়ে না শারিরীক না মানসিক ভাবে কোন পুরুষের সাথে সংসার করতে সক্ষম । এই বয়স তাদের খেলার বয়স , স্বপ্ন দেখার বয়স , পৃথিবীকে প্রত্যহ নতুন করে চেনা ও জানার বয়স ।

যে কোরআন নবী মুহাম্মদ (সাঃ) নিজে মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌছে দিয়েছিলেন ও আজীবন নিজে মেনে পৃথিবীর সামনে নজির স্থাপন করেছিলেন সেই কোরআন বাল্য বিবাহের স্মপূর্ন বিপক্ষে মতামত দিয়েছে । মহান আল্লাহ্- কোরানে এমন মেয়েদের বিবাহ যোগ্য বলে ঘোষণা দিয়েছেন যারা পূর্ন বয়স্ক , বুদ্ধি সম্মত ও তাদের পারিপার্শিক অবস্থা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল । Human Physiology অনুসারে এই সমস্ত বিচক্ষনতা একজন ৬-৯ বছরের মেয়ের ভেতরে থাকার কোন প্রশ্নি উঠেনা ।

বাল্য বিবাহের বিপক্ষে কোন কোরআন থেকে প্রমাণঃ

১- কোরান নির্দেশ দেয় যে, যে নারী দ্বীনের মূলনীতি সম্পর্কে জ্ঞান রাখে তাকে বিবাহের প্রস্তাব দেওয়া যাবে । ( কুরআন , ৫.৫, ৪.২৫, ৩৩.৪৯, ২৪.৩২ )
দ্বীনের মূল নীতি জানা ও মানার জন্য একজন নারীকে দ্বীন সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান রাখতে হবে । শুধু কোরআনের ২.১৭৭ আয়াত দ্বীনের ১০ টি আর্টিকেলের উল্লেখ রয়েছে , কোরআনের আরোও গভীরে গেলে দ্বীনের আরোও জটিল বিষয় গুলো সম্পর্কে জ্ঞাত হওয়া যায় । ৬/৯ বছরের একজন মেয়ের অপেক্ষা এই পর্যায়ের জ্ঞান রাখা ও বোঝা অসম্ভব । একমাত্র পূর্নমনা ও বুদ্ধিমতী মেয়েরাই এই দ্বীনি জ্ঞান বোঝা ও মানার যোগ্যতা রাখে ।

২- কোরআনের ৪:৬ এ বলা হয়েছে যে যাদের কাছে এতিম মেয়েরা পালিত হয় তারা যেন সেই সমস্ত মেয়েদের বিয়ের ব্যবস্থা তখনই করে যখন তারা তাদের কাছে গচ্ছিত সম্পদের হিসাব নিজেই বুঝে নিতে পারার মতো বুদ্ধিমতী হয় । সম্পত্তির হিসাব ও টাকা পয়সার লেনদেন করা বাচ্চাদের কাজ হয় , তার জন্য এক জনকে যথেষ্ট বয়ঃপ্রাপ্ত হতে হয় ।

৩- কুরআনের ৪:৪ এবং ২:২৩৭ এ বলা হয়েছে যে বিবাহের শর্ত মোহরানার লেনদেন সম্পর্কিত জটিলতা সৃষ্টী হলে স্ত্রী তার স্বামীর সাথে বসে এই বিষয়ে সমঝোতা মূলক সিদ্ধান্তে পৌছাবে । ৬/৯ বছরএর একটা মেয়ের পক্ষে মোহরানার হিসাব নিকাষ তো দুরের কথা , মোহরানা যে কি তার বিন্দুমাত্র জ্ঞান রাখাও অসম্ভব ।

৪- বিবাহোত্তর তালাক সম্পর্কিত জটিলতার ক্ষেত্রে একজন স্ত্রীকে সাহসিকতার সাথে তা মোকাবেলা করার কথা কুরআনের ৪:৩৫, ১২৮ ও ১২৯ আয়াতে বলা হয়েছে । প্রয়োজনে স্ত্রীরা তাদের অভিবাবক বা উকিল কে নিয়োগ করে তার স্বামীর সাথে চলমান সংকটের সুরাহা করতে পারে বলে উক্ত আয়াতগুলোতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে । এর জন্য একটি নারীর Maturity ও Adultness থাকা বাঞ্ছনীয় ।

৫- নবীর স্ত্রী সংক্রান্ত বেশ কিছু আয়াত কোরআনে পাওয়া যায় যার একটিতেও কোন ইংগিত মিলেনা যে নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর কোন বালিকা স্ত্রী ছিল । নিচে এরূপ কয়েকটি আয়াত তুলে ধরা হলঃ
ক) “হে নবী, আপনার পত্নীগণকে বলুন, তোমরা যদি পার্থিব জীবন ও তার বিলাসিতা কামনা কর, তবে আস, আমি তোমাদের ভোগের ব্যবস্থা করে দেই এবং উত্তম পন্থায় তোমাদের বিদায় নেই।” (৩৩.২৮)

নোটঃ শিশু আয়েশার কোন পার্থিব বাসনা মহান আল্লাহকে রাগান্বিত করতে পারে ? উপরের আয়াত প্রমাণ করে যে নবীর পত্নীরা বয়ঃপ্রাপ্ত ছিলেন এবং তারা পার্থিব জীবনে কোনটি ঠিক ও কোনটি বেঠিক তা বোঝার মতো সামর্থ তাদের ছিল ।

খ) “হে নবী পত্নীগণ! তোমাদের মধ্যে কেউ প্রকাশ্য অশ্লীল কাজ করলে তাকে দ্বিগুণ শাস্তি দেয়া হবে। এটা আল্লাহর জন্য সহজ।” (৩৩.৩০)

নোটঃ এই আয়াত নাযিলের সময় নবী পত্নী আয়েশার বয়স খুব বেশী হলে ১২ বছর হতে পারে । ১২ বছরের কিশোরীর জন্য দ্বীগুন শাস্তি ?? মহান আল্লাহর নীতি হচ্ছে তিনি শুধু তাদেরই শাস্তি দেন যারা জেনে শুনে বুঝে ভুল করে । ১৮ বছরের পূর্বে একজন মানুষের এ চেতনা আসেনা ।

গ) “হে মুমিনগণ! তোমাদেরকে অনুমতি দেয়া না হলে তোমরা খাওয়ার জন্য আহার্য রন্ধনের অপেক্ষা না করে নবীর গৃহে প্রবেশ করো না। তবে তোমরা আহুত হলে প্রবেশ করো, তবে অতঃপর খাওয়া শেষে আপনা আপনি চলে যেয়ো, কথাবার্তায় মশগুল হয়ে যেয়ো না। নিশ্চয় এটা নবীর জন্য কষ্টদায়ক। তিনি তোমাদের কাছে সংকোচ বোধ করেন; কিন্তু আল্লাহ সত্যকথা বলতে সংকোচ করেন না। তোমরা তাঁর পত্নীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্যে এবং তাঁদের অন্তরের জন্যে অধিকতর পবিত্রতার কারণ। আল্লাহর রাসূলকে কষ্ট দেয়া এবং তাঁর ওফাতের পর তাঁর পত্নীগণকে বিবাহ করা তোমাদের জন্য বৈধ নয়। আল্লাহর কাছে এটা গুরুতর অপরাধ।” (৩৩.৫৩)

নোটঃ কুরআন মতে নবী পত্নীরা বয়ঃপ্রাপ্ত তাই তাদের সাথে পর পুরুষের সাথে যোগাযোগে সাবধানতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে ।

ঘ) “হে নবী! আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।” (৩৩.৫৯)

নোটঃ এই আয়াত আবারো প্রমাণ করে যে নবী পত্নীরা সবাই বয়ঃপ্রাপ্ত ছিলেন ।

আমার বিশ্বাস কোরআনে এই সম্পর্কে উপরের আয়াতগুলো ছাড়াও আরো বহু আয়াত আছে যার দ্বারা আরো দৃঢ়তার সাথে প্রমাণ করা যাবে যে বিবাহ শুধু মাত্র বয়ঃপ্রাপ্ত নারীদের সাথেই সম্পাদিত হতে পারে , নতুবা নয় । মহান আল্লাহ্- কুরআনে নিশ্চিত করেছেন যে নবী মুহাম্মদ (সাঃ) কুরআনে নাযিল্কৃত সব হুকুম নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করেছেন (কুরআন, ৬.৫০,৭.২০৩, ১০.১৫, ৪৬.৯) , তাই নবীর ২৫০ বছর পর লিখিত হাদিসে নবীর সাথে মা আয়েশার বাল্য বিবাহ যে এক নিরেট মিথ্যাচার তা সহজেই অনুমেয় । নবী মুহাম্মদ (সাঃ) কোরআনের বিরুদ্ধে কোন কাজ করবেন এবং মহান আল্লাহ্- তাতে সাঁই দিবেন তা অবান্তর ।

যদিও কোরআনে মহান আল্লাহ্- যা বলেছেন ও দিক নির্দেশনা দিয়েছেন তাই মুমিনদের জন্য যথেষ্ট , তার পরেও বিশেষত নবীর সাথে মা আয়েশার বিবাহের বিষয়ে বহু উৎস থেকে দেখা যায় যে মা আয়েশার বয়স ৬/৯ এর চেয়ে অনেক বেশী ছিল। নিচে সংক্ষেপে এই এই উৎস গুলো তুলে ধরা হলঃ

১- “আবু বকরের সব সন্তানেরা নবীর নবুওয়তের পূর্বে জন্ম নিয়েছে ” (Tarikhu'l-umam wa'l-mamlu'k, Al-Tabari (died 922), Vol. 4, p. 50, Arabic, Dara'l-fikr, Beirut, 1979)
নবী নবুয়ত পান ৬১০ সালে আর নবীর সাথে আয়েশা থাকা শুরু করেন ৬২৪ সালে । উপরের তথ্য অনুসারে আয়েশা ৬১০ সালের পূর্বে জন্ম নেন । তার মানে আয়েশার (রাঃ) বয়স কম সে কম ১৪ ছিল যখন নবী উনাকে তার ঘরে নিয়ে যান ।

২- “ আবু বকরের জৈষ্ঠ কন্যা আসমা আয়েশার চেয়ে ১০ বছরের বড় ছিল ” (Al-Bidayah wa'l-nihayah, Ibn Kathir, Vol. 8, p. 371, Dar al-fikr al-`arabi, Al-jizah, 1933)
“ আসমা ১০০ বছরে ৭৪/৭৫ হিজরিতে মৃত্যুবরন করেন ” (Taqribu'l-tehzib, Ibn Hajar Al-Asqalani, Pg 654, Arabic, Bab fi'l-nisa', al-harfu'l-alif, Lucknow)
উপরের তথ্য অনুসারে ৭৪ হিজরিতে আয়েশার বড় বোন আসমার বয়স ছিল ১০০ বছর ; আয়েশা তার চেয়ে ১০ বছরের ছোট হওয়ার তার বয়স ছিল ৯০ বছর । তাহলে ১ম হিজরিতে আয়েশার বয়স ছিল ৯০-৭৪= ১৬ বছর .
অতএব নবী যখন আয়েশা নিজের গৃহে নিয়ে যান তখন আয়েশার বয়স ছিল ১৭ ।

৩- “ উহুদের যুদ্ধে ১৫ বছরের নিচে কাউকে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি ” ( সহিহ বুখারি)
“ নবী পত্নী আয়েশা উহুদের যুদ্ধে অংশ নেন ” ( সহিহ বুখারি)
উহুদের যুদ্ধ ৬২৪/৬২৫ সালে সংঘটিত হয় । উপরের বর্ননা অনুসারে আয়েশার বয়স সেই সময়ে কম সে কম ১৫ ছিল । এই সাল থেকে নবীর সাথে বিবি আয়েশা এক সাথে থাকা শুরু করেন ।

উপরের ৩ টি রেফারেন্স থেকে আমরা এই তথ্য পাই যে যখন নবী মা আয়েশার (রাঃ) এর সাথে এক সাথে থাকা শুরু করেন তখন মা আয়েশার বয়স সীমা ১৪ থেকে ১৭ এর ভেতরে ছিল ।
Reply

Login/Register to hide ads. Scroll down for more posts
Muslim Woman
01-14-2021, 12:55 AM
আসসালামু আলাইকুম

লেখাটা কার?

অনেক তথ্য সমৃদ্ধ যুক্তিসম্মত লেখা
Reply

Abrars
01-14-2021, 09:52 AM
ওয়া সালাম ওয়া বারকা আলাইকি ।

লেখাটা আমার নিজের । প্রচলিত ইসলামের অনেক বিষয়েই আমার মনে প্রশ্ন জাগে । সেই সমস্ত বিষয়ে আমি সত্যটা জানার জন্য গবেষনা করি ও লেখালিখি করি । আপনার কাছে এই লেখাটা যুক্তিসম্মত মনে হয়েছে বলে আমি কৃতজ্ঞ । ভয় হচ্ছিল যে হয়তোবা এডমিন আমার এই পোস্টটা ডিলিট করবে আর আমার মেম্বারশিপ বাতিল করবে । আমরা মুসলমান জাতি হিসেবে খুবই অসহনশীল । Orthodox চিন্তার বাইরে কেউ কিছু বললেই তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠে ।
Reply

Muslim Woman
01-16-2021, 01:53 AM
আসসালামু আলাইকুম


প্রবন্ধের সাথে লেখকের পরিচিতি দিলে
বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়বে।
আমি লেখাটা অন্য ফোরামেও শেয়ার করতে চাই।

পোস্টের সাথে আপনার ইমেইল দিতে পারেন।
কারো প্রশ্ন থাকলে যোগাযোগ করতে পারবেন।
Reply

Welcome, Guest!
Hey there! Looks like you're enjoying the discussion, but you're not signed up for an account.

When you create an account, you can participate in the discussions and share your thoughts. You also get notifications, here and via email, whenever new posts are made. And you can like posts and make new friends.
Sign Up
Abrars
01-16-2021, 11:47 AM
format_quote Originally Posted by Muslim Woman
আসসালামু আলাইকুম


প্রবন্ধের সাথে লেখকের পরিচিতি দিলে
বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়বে।
আমি লেখাটা অন্য ফোরামেও শেয়ার করতে চাই।

পোস্টের সাথে আপনার ইমেইল দিতে পারেন।
কারো প্রশ্ন থাকলে যোগাযোগ করতে পারবেন।
ওয়া আলাইইকি সালাম । জ্বী , এর পর থেকে আমার প্রবন্ধের সাথে আমার নাম লিখব । যদি অন্য কারো প্রবন্ধ/লিখা শেয়ার করি তবে অবশ্যি মূল উৎসের বরাত দিব ।
Reply

Hey there! Looks like you're enjoying the discussion, but you're not signed up for an account.

When you create an account, you can participate in the discussions and share your thoughts. You also get notifications, here and via email, whenever new posts are made. And you can like posts and make new friends.
Sign Up

Similar Threads

  1. Replies: 0
    Last Post: 05-03-2016, 04:26 PM
British Wholesales - Certified Wholesale Linen & Towels | Holiday in the Maldives

IslamicBoard

Experience a richer experience on our mobile app!