Abrars
01-25-2021, 11:32 AM
ক্ল্যাসিকাল আরবিতে গ্যালাক্সি, নেবুলা , সৌরমণ্ডল , বায়ুমন্ডল ইত্যাদি আধুনিক শব্দগুলো খুজে পাওয়া যায়না । কোরআন রচয়িতা তাই তৎকালীন জ্ঞানের মাত্রার সাথে কোরআনের শব্দকোষকে এমনভাবে ব্যবহার করেছেন যেন তা কোরআন নাযিলের সম-সাময়িক সময় তথা আগত যে কোন সময়ের জন্য উপযোগী হয় । ‘সামাআ’ (السَّمَاءُ) বা আসমান এমন এক শব্দ যার বহু মাত্রার ব্যবহার কোরআনের যত্রতত্র পাওয়া যায় । ‘সামাআ’ শব্দটা কখনও পৃথিবীর কাছের , কখনও দুরের বা কখনও বা ব্যাপক অর্থে আয়াতের সারমর্মের উপর ভিত্তি করে লক্ষ্য করা যায় । এক কথায় পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে উপরের দিকে অ/দৃশ্যমান Space ‘সামাআ’ (السَّمَاءُ) এর অন্তর্ভূক্ত ।
পৃথিবীর কাছের আসমান বা বায়ুমন্ডল নিয়ে কোরআনে বেশ কিছু চমকপ্রদ তথ্য পাওয়া যায় যা ৭-ম শতাব্দীর বিশ্বের কাছে এ জ্ঞান ছিলনা । নীচে বিজ্ঞান ও কোরআনের সমান্তরালে পৃথিবীর বায়ুমন্ডল এর আলোচনা সংক্ষেপে করা হল ।
বিজ্ঞানঃ
বায়ুমন্ডল সৃষ্টির আগে পৃথিবীর বুকে পাহাড় সৃষ্টি হয় । প্রকৃত পক্ষে ২.৫ বিলিয়ন বছর থেকে ৪.০ বিলিয়ন বছর আগে প্রাথমিক যে বায়ুমন্ডলের রুপ নিতে শুরু করে তাতে আগ্নেয়গিরি থেকে উৎক্ষিপ্ত গ্যাস এক গুরুত্ব পূর্ন ভূমিকা পালন করে । মূলতঃ আগ্নেয়গিরি থেকে উৎপন্ন কার্বন-ডাই-অক্সাইড সেই আর্চিয়ন যুগ থেকে বৃক্ষ-জগতের জন্য যেমন একদিকে খাদ্য যুগিয়েছে তেমনি গাছ-পালা থেকে অক্সিজেন পরিত্যাগের ধারা নিশ্চিত করে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলকে অক্সিজেন সমৃদ্ধ করে পৃথিবীর বুকে অক্সিজেন গ্রহণকারী জীবের জীবন ধারন নিশ্চিত করেছে ।
কোরআনঃ
১০- আর তার উপরিভাগে তিনি দৃঢ় পর্বতমালা স্থাপন করেছেন এবং তাতে বরকত দিয়েছেন, আর তাতে চার পর্যায়ে জন্য সমভাবে উপযোগিতা নিরূপণ করে দিয়েছেন।
১১- তারপর তিনি আসমানের দিকে মনোনিবেশ করেন। তা ছিল ধোঁয়া। তারপর তিনি আসমান ও যমীনকে বললেন, ‘তোমরা উভয়ে স্বেচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় আস’। তারা উভয়ে বলল, ‘আমরা অনুগত হয়ে আসলাম’। (সুরা ফুসিলাত)
বিজ্ঞানঃ
বায়ুমণ্ডল আসলে বিভিন্ন গ্যাসের সমষ্টি । পৃথিবীর আদি বায়ুমন্ডল মূলত হাইড্রোজেন গ্যাস দ্বারা গঠিত । ২.৪-৩.৮ বিলিয়ন বছর পূর্বে এতে মূলতঃ নাইট্রোজেন , অক্সিজেন , কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও নিষ্ক্রিয় গ্যাস সমূহের উপস্থিতি ধরা পরে ।
কোরআনঃ
১১- তারপর তিনি আসমানের দিকে মনোনিবেশ করেন। তা ছিল ধোঁয়া/গ্যাস।(সুরা ফুসিলাত)
বিজ্ঞানঃ
বায়ুমন্ডল ও পৃথিবী একে অপরের কাছাকাছি অবস্থানের কারন হচ্ছে পৃথিবীর অভিকর্ষ টান । এই টান যদি না থাকত তবে পৃথিবীর আকাশে বায়ু ম ণ্ডল নামে না কিছু থাকত না প্রানের কোন নাম নিশানা পৃথিবীর বুকে জন্ম নিত ।
কোরআনঃ
১১-তারপর তিনি আসমান ও যমীনকে বললেন, ‘তোমরা উভয়ে স্বেচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় আস’। তারা উভয়ে বলল, ‘আমরা অনুগত হয়ে আসলাম’।(সুরা ফুসিলাত)
বিজ্ঞানঃ
বায়ুমন্ডলের ৭ টি কার্যকর স্তর আছে । একেকটা স্তর একেকটা ভূমিকা পালন করে । ৭ টি স্তর হলঃ
1. Troposphere
2. Ozone layer
3. Stratosphere
4. Mesosphere
5. Ionosphere
6. Thermosphere
7. Exosphere
কোরআনঃ
১২- অতঃপর তিনি দুই পর্যায়ে সাত আকাশে পরিণত করলেন এবং প্রত্যেক আকাশে উহার বিধান নির্ধারন করলেন । ( সুরা ফুসিলাত)
বিজ্ঞানঃ
প্রতিদিন ২০ লক্ষ উল্কাপিণ্ড ৩০ মাইল/সেকেণ্ড বেগে পৃথিবীতে আঘাত হানার জন্য ছূটে আসে । পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল এই সকল উল্কাকে ভস্মীভূত করে পৃথিবীকে সুরক্ষিত করছে প্রতিনিয়ত । উপরন্তু সৌর বায়ু , মহাজাগতিক রশ্মি , তেজস্ক্রিয় কনা , অতিবেগুনি রশ্মি – কত কিছু থেকেই না এই বায়ুমণ্ডল আমাদের রক্ষা করে ।
কোরআনঃ
১২- আমি এই দুনিয়ার আকাশকে সুশোভিত করলাম প্রদীপমালা দ্বারা এবং করলাম সুরক্ষাকারী। এটা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহর ব্যবস্থাপনা। (সুরা ফুসিলাত)
১২- আর আমি তোমাদের উপরে বানিয়েছি সুদৃঢ় সাত। (সুরা আন-নাবা)
৬৪- আল্লাহ, যিনি তোমাদের জন্য যমীনকে স্থিতিশীল করেছেন এবং আসমানকে করেছেন কাঠামো । (সুরা গাফির)
লেখকঃ আবরার শাহরিয়ার
ইমেইলঃabrarshahriar95@gmail.com
ReplyHey there! Looks like you're enjoying the discussion, but you're not signed up for an account.
When you create an account, you can participate in the discussions and share your thoughts. You also get notifications, here and via email, whenever new posts are made. And you can like posts and make new friends.
Sign Up
Powered by vBulletin® Copyright © 2024 vBulletin Solutions, Inc. All rights reserved.