/* */

PDA

View Full Version : দ্বীনের দাওয়াত



Muslim Woman
09-26-2021, 06:54 AM
বিসমিল্লাহ

***কপি***

১৯৭৯ সালের কথা, জার্মানির বার্লিনে শায়েখ নেয়ামতুল্লাহ তুর্কিদের এক মসজিদে বয়ান করছিলেন। দুই-তিন ঘণ্টা বয়ান করার পর শ্রোতাদের জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের আর লোকজন কোথায়?

শ্রোতারা বলল, তাদের কথা কেন জিজ্ঞেস করছেন? আমাদেরকে বয়ান করুন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা শুনে যাব।

শায়েখ বললেন, আমাকে বলো তারা কোথায়, আমি তাদের কাছে যেতে চাই।

শ্রোতারা জবাব দিল, তারা তো পানশালায়।

শায়েখ বললেন, আমি তাদের কাছে যাব। আমার সঙ্গে একজন রাহবার দাও।

শায়েখ রাহবারের সঙ্গে পানশালায় গেলেন। একেবারে তাদের মাঝখানে গিয়ে দাঁড়ালেন। সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললেন, হে মুজাহিদরা, আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ!

তারা একে অপরের দিকে তাকাতে লাগল। এখানে মুজাহিদ কোত্থেকে এল?

শায়েখ বললেন, তোমরাই তো মুজাহিদ। তিন কারণে তোমরা মুজাহিদ :

এক. তোমরা মুসলিম নাম নিয়ে জার্মানিতে চলা-ফেরা করছ। তোমাদের একেকজনের নাম, আহমদ, খলীল, ইবরাহীম ইত্যাদি। তোমাদের নামই তো মানুষকে ইসলামের কথা মনে করিয়ে দেয়।

দুই. তোমরা জার্মানিতে এসেছো মা-বাবা, সন্তান-সন্ততির জন্য হালাল রিজিকের সন্ধানে। এটাও তো এক প্রকার জিহাদ।

তিন. তোমরা উসমানীদের বংশধর। তারা ছিলেন মুজাহিদ। সে হিসেবে তোমরা তো মুজাহিদদের উত্তর পুরুষ।

এরপর শায়েখ বলতে লাগলেন, আমি মদিনা শরীফ থেকে এসেছি। সেখান থেকে তোমাদের জন্য সুসংবাদ নিয়ে এসেছি। সুসংবাদ হল, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ বলবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। তোমরা এই কালেমা পড়লে তোমাদের দরুন আল্লাহ আমাকে প্রতিদান দেবেন।

সবাই সমস্বরে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ বলে উঠল।

তিনি বললেন, বহু বছর ধরে আমি মসজিদে মানুষকে দ্বীনের কথা বলি। তোমাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা আমার কর্তব্য ছিল। যেমনিভাবে নবীগণ মানুষের সভা-সমাবেশে গিয়ে সত্যধর্মের দাওয়াত দিতেন।

শায়েখের কথায় সবাই ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগল। তারা শায়েখকে আরো কিছু বলতে অনুরোধ করতে লাগল। বলল, একটু বসুন, এখানকার ইট তো আর হারাম নয়।

শায়েখ বললেন, এখানে বসার অর্থ হল, হারাম কাজে সঙ্গ দেয়া। যাইহোক এখন তোমরা জান্নাতবাসী। এখন আমি অন্যদের দাওয়াত দিতে যাব।

তারা আরো কিছু বলতে অনুরোধ করল। শায়েখ বললেন, কতক্ষণ আর কথা বলব? তোমরা তো এখন পরকালের জান্নাতের বাসিন্দা, এখন আমি তোমাদেরকে দুনিয়ার জান্নাত মসজিদে ডাকছি। এরপর শায়েখ বললেন, তোমাদের পাশে একটি মসজিদ নির্মাণে কি তোমরা সহায়তা করবে? শায়েখের অভিজ্ঞতা ছিল , যারা মদ পান করে তারা মসজিদে দানের বেলায় উদারহস্ত।

তারা সমস্বরে বলল, শায়েখ আমরা দান করব, আমরা দান করব। কিন্তু আমরা মসজিদে যাব কী করে? আমাদের মাঝে এমন মানুষও আছে, যার গোসলের প্রয়োজন।

শায়েখ বললেন, তারা মসজিদের গোসলখানায় গোসল করে নেবে। পানি ঠাণ্ডা। কিন্তু আমি তো ইতিপূর্বে বলেছি, তোমরা মুজাহিদ। শীতকালে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে গোসল করা জিহাদের মধ্যে গণ্য।

তারা বলল, মাতালরা কী করবে?

শায়েখ বললেন, বেশি মাতালকে কম মাতাল দুজন উঠিয়ে নিয়ে যাবে।

তারা একে অপরকে উৎসাহিত করেছিল। বলছিল, আমরা না মুসলমান। চলো আমরা মসজিদে যাই।

শায়েখ চল্লিশজনকে নিয়ে মসজিদে গেলেন। তাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করল। কেউ বাইরে অপেক্ষা করতে লাগল। শায়েখ নিম্মোক্ত আয়াত তিলাওয়াত করে তরজমা পড়তে লাগলেন-

قُلْ یٰعِبَادِیَ الَّذِیْنَ اَسْرَفُوْا عَلٰۤی اَنْفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوْا مِنْ رَّحْمَۃِ اللهِ ؕ اِنَّ اللهَ یَغْفِرُ الذُّنُوْبَ جَمِیْعًا ؕ اِنَّهٗ هُوَ الْغَفُوْرُ الرَّحِیْمُ .

বলুন, হে আমার বান্দাগণ! যারা নিজেদের উপর যুলুম করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ্ সমস্ত গোনাহ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। -সূরা যুমার (৩৯) : ৫৩

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

خِيَارُكُمْ فِي الْجَاهِلِيَّةِ خِيَارُكُمْ فِي الْإِسْلَامِ.

জাহিলিয়াতে তোমাদের মধ্যে যারা শ্রেষ্ঠ ছিল ইসলামেও তারা শ্রেষ্ঠ। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১০২৯৬

তাদের কেউ কেউ বলল, শায়েখ আমাদের কিছু আত্মীয় অমুক পানশালায় আছে। চলুন তাদের কাছে যাই।

এই ঘটনার তিন বছর পরের কথা। শায়েখ মদীনার মসজিদে নববীতে বসা। শ্মশ্রুমণ্ডিত, জুব্বা, পাগড়ি পরা এক তুর্কি এসে সালাম দিয়ে বলল, শায়েখ আমাকে চিনতে পেরেছেন?

শায়েখ বললেন, চিনব না কী করে? আমি তো তুরস্কের অধিকাংশ শহর-গ্রাম ভ্রমণ করেছি। আপনি ওখানকার কোনো ইমাম বা মুফতী হয়ে থাকবেন।

আগন্তুক বলল, আমি আপনাকে ভালো করে চিনি। আপনি আমাকে হাজার বছর চেষ্টা করলেও চিনবেন না। আমি হলাম বার্লিনের সর্বশেষ মদ্যপ। যাকে দুই ব্যক্তি পানশালা থেকে উঠিয়ে মসজিদে নিয়ে গিয়েছিল। আপনি আমার মাথায় স্নেহের হাত বুলিয়ে দিয়ে বলেছিলেন, ‘আল্লাহর কাছে তুমি অনেক দামি। তোমাকে তাঁর ঘরে কবুল করেছেন।’ আমি মাতাল হলেও আপনার কথা বুঝতে পারছিলাম। নেশা দূর হওয়া পর্যন্ত মসজিদের বাইরে অপেক্ষা করি। এরপর গোসল করে নামায পড়ে আল্লাহর কাছে তওবা করলাম। তখন থেকে আজ পর্যন্ত আমি নিয়মিত নামায পড়ি, ইবাদত করি। আমার স্ত্রীও এখন পর্দা করে। আমরা একসঙ্গে ওমরা করতে এসেছি। আল্লাহর শুকরিয়া যে, আল্লাহ আপনার সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দিয়েছেন।

অবিশ্রান্ত দাঈ শায়েখ নেয়ামতুল্লাহ খোজা রাহ.
[জন্ম : ১৯৩১ ঈ. - মৃত্যু : ২০২১ ঈ.]

....

বার ও ক্যাসিনোতেও যিনি দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছে দিয়েছেন
ওয়ালিউল্লাহ আব্দুল জলীল
মাসিক আলকাউসার
Reply

Hey there! Looks like you're enjoying the discussion, but you're not signed up for an account.

When you create an account, you can participate in the discussions and share your thoughts. You also get notifications, here and via email, whenever new posts are made. And you can like posts and make new friends.
Sign Up
British Wholesales - Certified Wholesale Linen & Towels | Holiday in the Maldives

IslamicBoard

Experience a richer experience on our mobile app!