বিয়ে

Muslim Woman

Super Moderator
Messages
12,286
Reaction score
1,449
Gender
Female
Religion
Islam
বিসমিল্লাহ


#বিবাহের ক্ষেত্রে বেহায়াপনা!

বিবাহ একটি ইবাদত! বিবাহ একটি জরুরত! চরিত্র হেফাজতের সবচেয়ে বড় ও একমাত্র মাধ্যম হল এই "বিবাহ"!

বিবাহ কারো জন্য ফরজ, কারো জন্য সুন্নত, কারো জন্য নফল আবার ক্ষেত্রে বিশেষে কারো জন্যে হারামও বটে!

গুণীজনেরা বলতেন, "বিবাহকে সহজ করে দাও, যেনা কঠিন হয়ে যাবে"! অথচ আমাদের সমাজের চিত্র পুরোপুরি উল্টো!

যার বাস্তবতায় আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, বর্তমান সময়ে বিয়ের বাজারটা অনেক কঠিন হয়ে গিয়েছে পক্ষান্তরে “রিলেশান” হয়ে গিয়েছে সহজ!
আসুন একটু পর্যালোচনা করি ___

▪মডারেট দ্বীনদার অভিভাবকদের হালচাল:

আপনি যদি কোন পাত্রীর পিতাকে কোন ছেলের ব্যাপারে প্রস্তাবনা দেন, বেশিরভাগ অভিভাবকদের জিজ্ঞাসা হল - ছেলে কি করে!? ধনসম্পত্তি কেমন? বংশমর্যাদা কেমন?
গ্রেজুয়েশন কম্পিলিট হয়েছে কিনা ইত্যাদি!

বিশ্বাস করুন একবারের জন্যও জিজ্ঞেস করে না যে, ছেলেটা দ্বীনদার কি না!

শেষ কথা হিসেবে জিজ্ঞেস করে নামাজ পড়ে কি না? যদি আপনার উত্তর হয়, "না" ! তাহলে সম্ভবত প্রত্যুত্তরে বলবে "অসুবিধা নাই, পরে হেদায়েত পেয়ে যাবে"!!!

ভাবখানা এমন, যেন বিবাহের জন্য হেদায়াতের রাস্তা খুঁজে পাচ্ছে না! যাহোক, এদের জন্য আফসোস লাগে যারা হেদায়েতের মালিক হিসেবে আল্লাহকে মেনে নিলেও রিযিকের মালিক হিসেবে মানতে গড়িমসি করে!

মেয়ে দেখার ক্ষেত্রেও ঠিক একই অবস্থা! দ্বীনদার না হলে একটু কাচুমাচু করে কিন্তু বংশমর্যাদা আর সুন্দরী হলে দ্বীনের কোন খেয়ালই থাকে না!

▪উচ্চ শিক্ষিতদের মাঝে বিবাহ বিদ্বেষ :

আমাদের সমাজের উচ্চ শিক্ষিতা মেয়েদের অধিকাংশই দেখবেন পড়ালেখা শেষ না করে বিয়ে করতে চান না!

অথচ একটা সময় ছিল যখন মেয়েরা মায়ের কোল থেকে নেমেই হামিগুড়ি দিয়ে শ্বশুর বাড়িতে চলে যেত! আজকে যারা "লেট মেরেজ" এর আন্দোলন করছে এদের বয়স যে খুব একটা কম অথবা আঠারো পার হয় নি তা কিন্তু নয়! অর্থাৎ, আপনি এ্যাটলিস্ট এদের বিবাহকে “বাল্যবিবাহ” বলতে পারবেন না!

কিন্তু তারপরেও তারা নানান অজুহাতে বিয়ে করতে চান না!

সবচেয়ে বড় কথা হল, এরা এই বয়সে নিজেও বিয়ে করবেন না, আবার অন্য মেয়েদের বিয়েও ঠেকাবেন!
অথচ এদের অনেকেরই প্রেমিক থাকতে পারেন, সেটা সমস্যা নয়! প্রেমিকের সাথে যা খুশি তা করতে পারেন সেটাও সমস্যা নয়!
এবং এর ফলে যদি অনাকাঙ্ক্ষিত “গর্ভপাত” করা লাগে তাতেও কোন সমস্যা নেই।

মোট কথা কোন কিছুতেই এদের সমস্যা নেই, শুধু বিয়ের কথা বললেই যত "সমস্যা" !

▪মধ্যবিত্তদের হালচাল :

উপরোক্ত এসকল বাঁধাবিপত্তি কাটিয়ে যারা বিয়ে করছেন, তারাও আবার সমাজের দোহাই দিয়ে, অভিভাবকদের চাপে বাধ্য হয়ে জড়িয়ে পড়ছেন নানান রকম হারাম কাজে, যেগুলো মূলত অমুসলিমদের দ্বারা সৃষ্ট!

এর মধ্যে অন্যতম এক কুসংস্কার হল এনগেজমেন্ট। পাত্রী দেখা উপলক্ষ্য করে আংটি অথবা যেকোন গয়না মেয়েকে পড়িয়ে দেওয়া হয়।

আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অথবা সাহাবায়ে কেরামের কেউই এই কাজ করেন নি! অথচ যুগের পর যুগ ধরে আমরা ঠিকই করছি।

এছাড়াও,
এই পাত্রী দেখাকে কেন্দ্র করে হবু দুলাভাই, চাচা, খালু, বড়ভাই প্রভৃতি কর্তৃক মেয়ের পায়ের নখ থেকে মাথায় চুল পর্যন্ত দেখার যে রীতি চালু রয়েছে তা বেহায়াপনা বৈ কিছুই নয়।

বিয়ের কথাবার্তা ফাইনাল হওয়ার পরপরই চলে "গায়ে হলুদের নামে" আরেক বেহায়াপনা! অত;পর, বিয়ের দিন কোরবানীর পশুর ন্যায় বউ প্রদর্শনীর কথা আর
নাই-বা বললাম!
যেখানে এক পর্বে এই কাজগুলো শেষ হয়ে যাওয়ার কথা, সেখানে আমরা কয়েকটা ধাপে বিয়ে সম্পন্ন করাটাকে অধিকতর পছন্দ করি।

আফসোস! বিয়ের নিয়ত ছিলো- হারাম সম্পর্ক থেকে দূরে থেকে শরীয়াহ মোতাবেক জীবন যাপন করা অথচ সেই পবিত্র জীবনে পদার্পনের শুরুই হয় আল্লাহর নাফরমানির মাধ্যমে!

▪সংকলক :
আপনাদের শুভাকাঙ্ক্ষী,
আখতার বিন আমীর।
▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂
 
পাত্র পাত্রীর দেখাদেখিতে ভুক্তোভোগী সবসময় মেয়েরাই বেশি হয়। কখনো কখনো মেয়েরা নানা মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হয় এই ঘটনাগুলোকে কেন্দ্র করে। প্রিয় ভাইয়েরা একটু মন দিয়ে পড়ুন, প্রতিনিয়ত এসব ঘটনার সাক্ষী হতে হয় আমাদেরকে,

ঘটনা-১ঃ- রেষ্টুরেন্টে দেখাদেখি, ফলাফল দুপক্ষই পজিটিভ। এরপর বাসায় যাওয়া পর্ব। তার আগে ছেলে বলল আরেকবার মেয়ের সাথে কথা বলতে চাই। ছেলে মেয়ে ফোনে কথা বলবে এটাকে আমরা সাপোর্ট করি না। অতঃপর আবার বাইরে গার্জিয়ানের উপস্থিতিতে দেখা। এরপরে বাসায় আবার দেখা। ছেলে পক্ষ ওকে আছে। মেয়ে পক্ষ ওকে আছে বলেই ছেলেদের সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে। ছেলে বিরতি নিলেন প্রায় দু সপ্তাহ। মেয়ের সময় কাটে সিদ্ধান্ত জানার অপেক্ষায়। আবার ছেলে একটু বসতে চাইলেন। আবার বসিয়ে দেওয়া হল। এরপরে আবার কয়দিন সময় নেওয়া, তারপর জবাব হল ছেলে আগাবে না।
মেয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তার বর্তমান পরিস্থিতি যা শুনলাম তা ভাই আপনার বোন বা আপনাদের কারো কন্যার সাথে হলে হয়তো অনুভব করতে পারবেন।

ঘটনা-২ঃ- কয়েক দফা দেখাদেখি শেষ। ছেলে ও তার পরিবারের কয়েক সদস্যে মিলে মেয়ের বাসায় গেল। পাত্রপক্ষ পাত্রীপক্ষ, আমরা মাঝখানের পক্ষ সবাই মনে মনে জানি কিছু একটা সেদিনই হবে। মেয়ের মানসিক প্রস্তুতি সেভাবেই। ছেলেও আমাদের সেরকম ধারণা দিয়েছেন। ফলাফল ঘরোয়া বিয়েতে যেমন আয়োজন হওয়ার কথা সেরকমই মেয়েদের আয়োজন।

মেয়ের বাসায় যাওয়ার পর ছেলেদের কথার সুর গেল পাল্টে। কাবিন, বিয়ের পাকা কথা তো দুরে থাক তারা জানাবেন। আমাদেরকে এটা সেটা বলে না করতে হয়েছে। খুব অসহায় লাগে এরকম অবস্থায়।
তিনচার মাস মেয়েটি এই আঘাত থেকে বের হতে পারেনি।

ঘটনা-৩ঃ- পাত্র বায়োডাটা দেখে জানালো সে পজিটিভ, মেয়েরা পজিটিভ হলে সামনাসামনি দেখা করবে। সেই ধারাবাহিকতায় এক শুক্রবার মোটামুটি ডেট ঠিক হল। শুক্রবার আসার আগে ছেলে বলল এই শুক্রবার না, সে সময় দিতে পারবপ না। ওকে, তাহলে নেক্সট শুক্রবার। পরের শুক্রবারও তাই। সে শুক্রবার এখনো এল না। এরকম ঘটনা একটা না। প্রায়ই এরকম হয়। বায়োডাটা পছন্দ, দেখবো কিন্তু আর দেখা হয় না। শুধু মেয়েপক্ষ কি, আমাদের অপেক্ষাও শেষ হয় না। আমাদের আশা হারালে চলে না, তাই আমরা বরাবরই হাল ছেড় না মাঝি।

ঘটনা-৪ঃ- ছেলেদের আগ্রহ দেখেই আমরা মেয়েদের সেভাবে মোটিভেট করেছি। সবসময় পজিটিভ ভাইভ দিয়েছি। কারণ ছেলে খুব ভাল পছন্দ করেছে মেয়েকে। দুমাসের বেশি সময় ধরে গুটি গুটি পায়ে চলতে থাকা কাজটা ছেলেদের মেয়ের বাসায় যাওয়া পর্যন্ত গড়ালো। ফান করার জন্য তো যাওয়া না। ছেলেরা সিরিয়াস বলেই গিয়েছে। মেয়ের বাসার আয়োজন, সব ঠিক আছে। কিন্তু চার পাঁচদিন হয়ে গেল ছেলেদের থেকে হ্যা না কোন জবাব মিলল না।

ভাইরে/আপুরে আমাদের হাতে কিছু নেই। তারপরেও................

ভাইদের উদ্দেশ্যে আন্তরিক পরামর্শ,
আপনারা বিয়ের সিদ্ধান্ত বুঝে শুনে নিন। মেয়েরা পন্য নয়, পুতুল নয়। রক্ত মাংস আবেগ অনুভূতিতে মানুষ। একটা মানুষকে বোঝার জন্য এক জীবন ও কম। আবার আল্লাহ চাইলে কয়েক মুহূর্তেই অনেক কিছু বোঝা যায়। পন্যের মত এতভাবে এতবার একটা মেয়েকে দেখে না করে দেওয়াটা অমানবিকতা।
ভাইরে, আপনি যে আমলগুলো দিয়ে দ্বীন প্রাকটিস করছেন সেটা সরাসরি আল্লাহর জন্য, যেমন নামাজ রোজা। কিন্তু দ্বীনকে যখন দৈনন্দিন জীবনে এপ্লাই করবেন তখন আপনার কথা, কাজ, আচার ব্যবহার, লেনদেন সব ক্ষেত্রে দ্বীনের নিয়ম কাননের মান্যতা থাকতে হবে। আপনার চেষ্টা কতটুকু সেটা প্রকাশ্যমান হতে হবে। এরকম গরু দেখার মত করে বাইরে দেখে ঘরে দেখে না বলে দিবেন এটা অন্যায় অমানবিক।

ভাইরে, মেয়েদের তুলনায় আপনাদের ছেলেদের আবেগ কম। একটা গেলে একটা আসবে। একটার পর একটা দেখবো, যেটা হয় হবে এরকম করে আপনারা সহজেই ভাবতে পারেন। কিন্তু একটা মেয়ের জন্য এটা সহজ নয়। বিশেষ করে পর্দা করেম এরকম বোনদের জন্য আরো বেশি কষ্টদায়ক।

ভাইরে, আপনাদের জন্য আন্তরিক পরামর্শ, প্রথম বা দ্বিতীয় দেখাতেই বুঝে নিন কি করবেন। আপনার বোঝার ক্যাপাসিটিই হয়তো কম। হয়তো আপনি ডিসিশন মেকিং এ খুবই খারাপ। আপনি ভাল ছেলে, ভাল মানুষ, সব আপনার ভাল কিন্তু আপনি সঠিক সময়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না, দ্বিধায় ভুগেন হতে পারে। আপনাকে আপনার চিন্তার প্যাটার্ন নিয়ে কাজ করতে হবে, চিন্তার ধরন পাল্টাতে হবে, সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্র্যাকটির করতে হবে। পাছে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি এই ভয়কে জয় করতে হবে। আপনার সিদ্ধান্তহীনতার দায় কেন একটা মেয়েকে কষ্টে ফেলবে? আমরা জানি যেসব ভাইয়েরা এরকম করছেন তারা ইচ্ছাকৃত এই ভুলগুলো করেন না। যদি ভুল হয়, ঠিক হবে কি? তাহলে কেমন হল? এই সেই ভ্রান্ত সব চিন্তাভাবনা থেকে এমন করেন। কারণ আমরা মনে করিনা যে ছেলেটা পাঁচ বেলা আল্লাহর সামনে হাজির হয় যার নিজের বোন আছে সে অন্য মেয়েকে দোকানের পন্যের মত যাচাই বাছাই করবে।

কিন্তু ভাই, নিজের সীমাবদ্ধতার জন্য মেয়েদের কষ্ট দেওয়া যাবেনা এটা নিয়ত করুন। বিয়ে যখন হওয়ার হবে কিন্তু এরকম করে আপনি কত কত মেয়ে আর তার পরিবারের দীর্ঘশ্বাস, আহা কুড়াচ্ছেন সেটা ভেবে দেখেছেন কি? একবার দুবার তিন, চার করে বাড়ি পর্যন্ত যেয়ে না বলে দেন, এটা কি ঠিক? এই না এর সিদ্ধান্ত তো বাড়ি যাওয়ার আগেই নেয়া যায়রে ভাই। আল্লাহ আপনাদেরকে সঠিক বুঝ দিন।

দোয়া, শুভকামনা রইল আপনাদের জন্য। আল্লাহ আপনাদের প্রকৃত মানুষ, মানবিক গুণাবলীসম্পন্ন মানুষ হওয়ার তাওফিক দিন।

#কেসস্টাডি

@কাজী দিশা
ম্যারেজ কাউন্সিলর
 
দ্রুত পাত্র/পাত্রী খুঁজে পাবেন যেভাবে
-----------------------------

উস্তাযে মুহতারাম মুফতি আবুল হাসান আব্দুল্লাহ সাহেব ক্লাসে ছাত্রদের সাথে একেবারেই ফ্রি ছিলেন ৷ ছাত্রদের সাথে অনেকটা বন্ধুর মতোই আচরণ করতেন ৷

আমরা যে কেউ হুজুরকে ব্যক্তিগত পারিবারিক সামাজিক যে কোন বিষয়ে জিজ্ঞেস করতে পারতাম ৷ হুজুরও হাসি মুখে সব বিষয়েই কথা বলতেন ৷ সাবলীলভাবেই সকল প্রশ্নের উত্তর দিতেন ৷

ইফতা দ্বিতীয় বর্ষের প্রায় ছয় মাস যখন পার হয়ে যাচ্ছিল স্বাভাবিকভাবেই মনে মনে তখন বিয়ে শাদী নিয়ে একটু ভাবনা বেশি আসতো ৷ মাথায় শুধু বিয়ের কথা ঘুরঘুর করতো ৷

হুজুরকে একদিন ক্লাসে আমরা পাত্রী দেখা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম ; পাত্রী দেখার ক্ষেত্রে কোন বিষয়গুলো বেশি গুরুত্ব দিতে হবে ?
হুজুর বললেন :
দেখ , আমি যেদিন আমার জন্য পাত্রী দেখতে যাচ্ছিলাম মনে মনে আমার দোষগুলো খুঁজে বের করলাম ৷ গুনে গুনে দেখি আমার মধ্যে অন্তত ১৬ টা দোষ বা খুঁত আছে ৷ এই যে তোমরা দেখছ আমার নাক বোচা , ঠোঁট মোটা , দাঁতগুলোর মাঝে ফাঁকা , আবার আমি বেঁটেও , এই সেই আরও কতো কী ................ হুজুর হেসে দিলেন ৷

এখন আমি যেই মেয়েকে দেখতে যাচ্ছি তার মধ্যে যদি ১৬ টা দোষ থাকে তাহলে তো অপছন্দের কিছু নেই ৷ কারণ দুজনেই সমান সমান ৷ আমরা কেউ কারো থেকে শ্রেষ্ঠ নই ৷ আমি যেমন সেও তেমন ৷ আর যদি তার কাছে আমার থেকে একটি দোষও কম থাকে তাহলে তো সে আমার থেকে শ্রেষ্ঠ ৷ তখন তো আমি তাকে অপছন্দ করার প্রশ্নই আসে না ৷

যদি তোমরা পাত্রী দেখার সময় এই কথাটা খেয়াল রাখ এবং এরকম মনোভাব নিয়েই পাত্রী দেখতে যাও তাহলে পছন্দ হতে কোন অসুবিধা হবে না ৷ আর যদি নিজের খুঁত এবং দোষের দিকে না তাকিয়ে শুধু মেয়ের দোষ দেখ তাহলে জীবনেও পাত্রী পছন্দ হবে না ৷ তোমার জন্য পাত্রীও খুঁজে পাবে না ৷
ঠিক পাত্রীর ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।

Collected & edited
 
হবু শ্বশুর-শাশুড়িদের সমীপে...

ফেসবুক থেকে নেওয়া:

যদি কোনোভাবে সম্ভব হয়, ওদের বিয়ের পর আলাদা সংসার করে দিন। সম্পর্ক গঠন, সেক্সুয়াল আন্ডারস্ট্যান্ডিং, সংকোচ দূরীকরণে এটা আসলেই দরকার। বর্তমান আর্থসামাজিক অবস্থায় যদি আমরা আর্লি ম্যারেজকে প্রমোট করতে চাই, তবে এটা (আলাদা বাসা) অসম্ভবপ্রায়। সেক্ষেত্রে ওদের প্রাইভেসি এরিয়া শুধু ওদের ঘরটুকু না রেখে মাঝেমধ্যে প্রশস্ত করে দিন। নবদম্পতিকে রেখে আপনারা মাঝেমাঝে হুদাই ঘুরতে চলে যান এদিকওদিক। লেট দেম ফ্লাই ইনসাইড।

আপনার মেয়ের সাথে যেমন আচরণ প্রত্যাশা করেন, ছেলের বউয়ের সাথেও তেমন আচরণ করা চাই। ডাবল স্ট্যান্ডার্ড বর্জন করুন।
বউয়ের দোষ চোখে পড়লে বউকে না, ছেলেকে বলুন। ছেলের মধ্যে ডিপ্লোমেসি গড়ে উঠুক। সফটলি হ্যান্ডেল করার অভ্যাস হোক। কীভাবে ডিপ্লোম্যাটিকভাবে একটা কথা বলা যায় ছেলেকে শেখান।

মনে রাখবেন, আপনি বেটার বউয়ের গার্জিয়ান নন। আপনার ছেলে তার স্ত্রীর অভিভাবক। সুতরাং তার কোনো কিছু আপনি সংশোধন করবেন না, আপনার ছেলে করবে। নিজেকে প্রতিপক্ষ বানাবেন না, আস্থাভাজন হোন। আপনার ছেলের ব্যাপারে কমপ্লেন যেন আপনার কাছে এসে করতে পারে মেয়েটা, এতটা আস্থা তৈরি করুন।

শাশুড়িজি, ৩০ বছর আগে আপনার চোখের স্বপ্নটা মনে আছে তো—‘নিজের একটা সংসার’! একই স্বপ্ন নিয়ে ওই বাচ্চা মেয়েটাও আপনার ঘরে এসেছে। তাকে কিছুটা স্বায়ত্তশাসন দিন। আপনি যেটুকু পাননি, তাকে ওটুকু দিন। এরপর দূরে দাঁড়িয়ে দেখুন না, কত সুখ! নিজে কষ্ট করে রেঁধে আরেকজনকে চেটেপুটে খেতে দেখে সুখ না? তুলনাহীন সুখ।

আপনার ছেলে আপনারই আছে। এসব জি-জলসা টাইপ মানসিকতা আর কত। বরং আলাদা করে দিয়ে দেখবেন, ভালোবাসা বাড়বে। আরও বেশি মা-ন্যাওটা হয়ে যাবে। কাছে থাকলে যতবার আসতো, একটু দূরে ঠেলে দিলে আরও তিনগুণ বেশি মা মা করে আসবে। বেটার বউও আপনাকে বিচারক মানবে। জমে বরফ। ফ্রি হোন। বউ-শাশুড়ি সম্পর্কটা হোক দুই প্রজন্মের বন্ধুত্ব।

" কুররাতু আইয়ুন -যে জীবন জুড়ায় নয়ন " বই থেকে

লেখক -ডা: শামসুল আরেফীন
সম্পাদনা - আব্দুল্লাহ আল মাসউদ
প্রকাশনী - মাকতাবাতুল আসলাফ
মুদ্রিত মূল্য-১৭৫ টাকা
 
+++

আপনার বোন/মেয়ে ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হলে ভার্সিটি থেকে ধার্মিক, দায়িত্ববান ও অধিকার সচেতন কোনো ছেলে পছন্দ করে দু'পরিবারের মধ্যে কথা বলে তাদেরকে বিয়ে দিয়ে দিন। আক্বদ করা যেতে পারে।

আপনার বোন/মেয়েকে আপনারাই দেখাশোনা করুন ছেলের ইনকাম শুরু করার আগ পর্যন্ত।

নরমালি বিয়ে না দিলে তো তাকে খরচ দিতেনই কিন্তু নিরাপত্তা নিয়ে যে একটা দুশ্চিন্তা মাথায় ঘোরে সেটা থেকে তো কমপক্ষে মুক্তি মিলবে!

অন্তত অতটুকুতে স্বস্তি মিলবে যে আমার বোন/মেয়ে কোনোরকম অবৈধ-অনৈতিক কাজে জড়াচ্ছেনা।

বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবস্থা অতোটা ভালোনা। সেটা সবাই জানে। এসব জায়গায় নিজেকে টিকিয়ে রেখে গায়রে মাহরাম, পর্দা মেনে চলাটা অত্যন্ত কষ্টের। একই ক্লাসে সবাই যখন ফ্রী-মিক্সিং এ অভ্যস্ত তখন একজন বোন/ভাই একাকী চলাটা অনেক কষ্টের।

ক্লাস থেকে বের হয়ে যেখানে বাকিরা বফ-গফের কথা বলে সময় কাটিয়ে দিচ্ছে সেখানে আপনার প্রাকটিসিং ভাই/ বোনটি কিভাবে সারভাইভ করে আছে সেটা একটু বুঝুন।

সুতরাং তাদের চরিত্র রক্ষার্থে আপনি এমন পদক্ষেপ গ্রহন করতেই পারেন। একজন বোন যেমনিভাবে কথা বলার জন্য একজন মানুষ পেলো তেমনি একভাই জুটে গেলো তার জান্নাতের সাথীর সাথে।

তারা ক্যাম্পাস ঘুরুক, যখন যেখানে ইচ্ছে যাক। তাদের গায়রাত বোধটা নিরাপত্তা আরো জোরদার করবে। এরমধ্যে মেয়েটা যেমনিভাবে সংসার সম্পর্কে ধারণা পাবে তেমনি ছেলেটাও দায়িত্ব নিতে শিখে যাবে।

এমন একটি পরিকল্পনা আমার জীবনে হয়তো বাস্তবায়ন হবে না তবে বাবা হিসেবে (ইন শা আল্লাহ) এমনই একটা পরিকল্পনা রেখেছি। সেটা ইন শা আল্লাহ বাস্তবায়ন করবো।

© শাখাওয়াত হোসেন
 
বিসমিল্লাহ

খুব সুন্দর একটা পোস্ট পড়লাম , মনটা ভরে গেল, আলহামদুলিল্লাহ।

আল্লাহ যেন সব অভিভাবককে এমন সচেতন করেন, সব সন্তানকে এমন অভিভাবক লাভ করার সৌভাগ্য দান করেন ,আমিন।

#

আমার বন্ধু শোভনের বোনের বিয়ের তারিখ ফাইনাল হয়েছে কিছুক্ষন আগে।

আমার সৌভাগ্য হয়েছে সেখানে উপস্থিত থাকার।
পাত্র বাছাইয়ের ব্যাপারে বা পাত্র চয়েজের ব্যাপারে যে ক্রাইটেরিয়াকে ফলো করা হয়েছে তা আপনাদের সাথে শেয়ার করবার লোভ সামলাতে পারছি না।

তাই গাড়িতে বসে লিখতে চেষ্টা করলাম।

বন্ধুর বোন ডাক্তার। ওর জন্য গত দুই মাস যাবত পাত্র দেখা হচ্ছে। পাত্র হিসাবে আগ্রহী হয়ে ৮-৯ টি ছেলের বায়োডাটা নানা মাধ্যমে আমার বন্ধুদের পরিবারের কাছে এসেছিল।

এর মধ্যে ডাক্তার ছিলো, বিসিএস ক্যাডার ছিলো,ইঞ্জিনিয়ার ছিলো।

শোভনের আব্বা যে ছেলের বায়োডাটা হাতে পেতেন, ঐ ছেলে কেমন তা যাচাই করবার জন্য আগের রাতে চলে যেতেন ঐ ছেলেদের এলাকায়।

হোটেল কিংবা কোন আত্মীয়ের বাসায় অবস্থান করে অপেক্ষা করতেন ফজরের আজানের জন্য।
ছেলেদের বাড়ির পাশে যে মসজিদ আছে সেই মসজিদে ফজরের নামাজ আদায় করবার জন্য।
পরপর দুই বা তিনদিন তিনি সে মসজিদে ফজরের সালাত আদায় করতেন।

প্রথম পাঁচটি ছেলের বায়োডাটা হাতে পেয়ে তিনি যথারীতি তাদের প্রত্যেকের বাসার পাশের মসজিদে ফজর আদায় করলেন।

সেই পাঁচ জন ছেলের একজনকেও কোনদিন তিনি ফজরের নামাজে মসজিদে উপস্থিত হতে দেখেন নাই।
তাই তাদের ব্যাপারে আর আগ্রহী না হয়ে "না" করে দিলেন।

গত ১০ দিন আগে শোভনদের হাতে আসলো আরেকজন পাত্রের বায়োডাটা।
ছেলে ডাক্তার!

চাচা যথারীতি ঐ ছেলেদের মসজিদে ফজরের নামাজ পড়তে গেলেন।
ছেলেদের বাড়ির ঠিক পাশে একটা পেট্রোল পাম্পে একটা পাঞ্জেগানা মসজিদ আছে।

নিয়মিত নামাজ পড়ানোর জন্য ইমাম নাই। সে মসজিদে প্রথম দিন নামাজ পড়তে গিয়ে দেখলেন আজান দেয়ার ও লোক নাই।
চাচা আজান দিয়ে কিছুক্ষন অপেক্ষা করে দেখলেন কুয়াশার চাদর ভেদ করে একজন মানুষ উপস্থিত হচ্ছে।
সামনে আসার পর দেখলেন,উনার মেয়ের জন্য যে ছেলের বিয়ের প্রস্তাব এসেছে উনি সেই জন।

প্রথম দিন মসজিদে চাচা ইকামত দিলেন,আর ইমামতি করলেন পাত্র।
পরের দিন আবারো গেলেন,সেদিন ঐ পাত্র সহ আরো দুইজন মুসল্লী উপস্থিত ছিলেন।

পরপর তিনদিন শোভনের আব্বা সেই মসজিদে ফজরের সালাত পড়ে এলেন।
আজকে সন্ধ্যায় যখন বিয়ের কথা ফাইনাল হওয়ার জন্য আমরা বসেছি।
তখন ছেলেটা চাচাকে দেখার পর অবাক হয়ে তাকিয়ে থেকে জিজ্ঞাসা করলো,

আমি আপনাকেও কোথাও দেখেছি আগে?
তখন চাচা হেসে জবাব দিলেন।
-হ্যা বাবা দেখেছো!
তুমি তিনটি ফজর নামাজে আমার নামাজের ইমাম ছিলে।
আজকের পর থেকে তুমি আমার মেয়ের জীবনের ইমাম।।

-#রাশেদ খান
 
বরযাত্রী হয়ে কনের বাপের উপর জুলুম করে যাওয়া এবং খাওয়া হারাম।
ছেলের বাবা মেয়ের বাবাকে প্রশ্ন করলো, বেয়াই সাহেব, লোক কতোজন আসবে?
মেয়ের বাবা তাঁর সামর্থ্যানুযায়ী খাওয়ানোর একটা হিসেব কষে উত্তর দিলো যে, আসুক পঞ্চাশ জন!
ছেলের বাবা এই কথা শুনে আঁতকে উঠে জবাব দিলো, বলেন কি বেয়াই সাহেব! আমার ছেলের অনেক বন্ধু। মাত্র পঞ্চাশ জন গেলে তো মানসম্মান একেবারে শেষ!

এরপর মেয়ের বাবা ছেলের বাবার কাছে জানতে চাইলো, কতোজন আসবে তাহলে বেয়াই সাহেব?
উত্তরে ছেলের বাবা বললো, ১০০ - ২০০ জন না গেলে তো হবেই না!

আপনার ছেলের অনেক বন্ধু আছে, আপনি নিজে ওয়ালিমা করে খাওয়ান। মেয়ের বাবার উপর জুলুম করে খেয়ে আসবেন, সেটাও একটা যৌতুক।

আমার তো মনে হয়, তা খাওয়ার চেয়ে দুই একটা শুয়োর জবাই করে খেলে গুনাহ কম হবে!

আমরা অন্যের ভুল গুলো ধরি, কিন্তু, নিজের ভুল গুলো ধরি না!
হারাম খাওয়া যাবে না ভাই!

- শায়খ খন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রাহিমাহুল্লাহ।

[ শায়খের কোনো একটা কথা পড়লে এমনি এমনি চোখে পানি চলে আসে।এত জীবন ঘনিষ্ঠ কথা আর কেউ বলতে পারে না। এত আন্তরিক নাসীহা আর কেউ এখনও দিতে পারছেন না। আল্লাহ আপনি শায়খের কথাগুলো দেশের সব কোণে পৌঁছে দিয়েন মালিক।]

✒️ Sharif Abu Hayat Opu Bhai
 

Similar Threads

Back
Top