ছেলের কাছে মা নিরাপদ থাকবেন তো?

Muslim Woman

Super Moderator
Messages
12,286
Reaction score
1,449
Gender
Female
Religion
Islam
***

দুই বন্ধু নদীর তীরে বসে গল্প করছে।

এমন সময় দেখলো একের পর এক
ছোট বাচ্চা নদীতে ভেসে যাচ্ছে।
এক বন্ধু নদীতে ঝাঁপ দিয়ে পড়ল বাচ্চাদের উদ্ধার করার জন্য।

আরেক বন্ধু সামনের দিকে দৌড়াতে লাগল।
নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়া বন্ধু চিৎকার করে বললো , তুমি কোথায় যাচ্ছ? কেন যাচ্ছ?
তাড়াতাড়ি নদীতে নেমে এসেছে বাচ্চাদেরকে আগে উদ্ধার কর।

বন্ধু জবাব দিল, বাচ্চারা কিভাবে নদীতে এসে পড়ছে , আমি আগে সেটা বের করে থামাবো।

তা না হলে একটার পর একটা বাচ্চা নদীতে পড়তেই থাকবে । আমরা এতজনকে কিভাবে বাঁচাবো?
আর কোন বাচ্চা যেন নদীতে না পড়ে, আমি সেই ব্যাবস্থা করার জন্যই দৌড়াচ্ছি।


একের পর এক নারী ধর্ষণ , শিশু ধর্ষণের ঘটনায় যে কোনো বিবেক সম্পন্ন মানুষ মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
মানববন্ধন অথবা দু'একদিন মিছিল করলে এই সমস্যার সমাধান হবে না।
সমস্যার মূলে যেতে হবে আমাদের।

কেন ঘটছে এসব ধর্ষণ?


কিশোর-তরুণদের মোবাইল সেট এখন
পর্নোগ্রাফির ভান্ডার । স্কুলের বাচ্চাদের বেডরুমেও এখন থাকে ডিশের সংযোগসহ টিভি সেট।
নেশা করা সহজ ।
প্রেমিক -প্রেমিকা
না থাকাটাই এখন হাস্যকর ব্যাপার ।

হারাম বাচ্চার জন্ম দিয়ে ডাস্টবিনে কুকুরের মুখে নবজাত শিশুকে ফেলে দেওয়াটাও সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়াচ্ছে;
অথচ বিয়ে করাটা কঠিন।

শিশু ধর্ষণের জন্য কতজন শাস্তি পেয়েছে জানি না। নবজাত শিশুকে কুকুরের মুখে ছুড়ে ফেলার জন্য আজ পর্যন্ত আমার জানামতে একজনও শাস্তি পায় নি।

কিন্তু ১৬/১৭ বছরের মেয়ের বিয়ের আয়োজন করায় পাত্র ,অভিভাবক , কাজী সাহেবের শাস্তির খবর আমরা মাঝেমাঝেই পেয়ে থাকি।
দুই মাস থেকে ৬ মাস পর্যন্ত তাদের জেল, জরিমানা হয়েছে।

আমাদের দেশে শিশু, নারী ধর্ষণ রোধ করার
চেয়ে ' বাল্য ' বিয়ে বন্ধ করার জন্যই পুলিশ প্রশাসন বেশি তৎপর। আল্লাহ ভালো জানেন এর রহস্য কী।


অভিভাবকদের ভূমিকা এখন লাশের মত।
লাশ নীরবে পড়ে থাকে, নিজে কিছুই
করতে পারে না।

অভিভাবকরাও সন্তানদের সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে চরমভাবে ব্যর্থ।
পড়াশুনা আর ক্যারিয়ারের পেছনে ছুটতে ছুটতে সন্তানরা বিয়ে করতে পারছে না।
তারা হারাম সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছে এবং সেটা প্রকাশ্যেই।
মা-বাবা দেখেও না দেখার ভান করছেন।

ছেলের রোজগারে অন্য বাড়ির মেয়ে ভাগ বসালে তাদের কর্তৃত্ব কমে যাবে , অনেক মা-বাবা এমন ভয় পান।

মেয়ের বিয়ে দিতে গেলে চিরস্থায়ী যৌতুকের সমস্যায় পড়তে হয়। এজন্য অনেক
বাসায় মেয়ে বা বোনকে বিনা পয়সার কাজের লোক বানিয়ে
ফেলে রাখা হচ্ছে।

স্বাধীন করার নামে নারীকে বানানো হচ্ছে ভোগের পণ্য। কজন পুরুষ দৃষ্টির হেফাজত এর কথা জানেন?


অন্যায় করলে শাস্তি পেতে হবে- এই দুনিয়াতে না হোক , পরকালে - এই ভয়টা আমাদের নেই।
ধর্মীয় শিক্ষা থেকে আমরা যত দূরে যাচ্ছি , আমাদের উপর
একের পর এক আযাব এভাবে আসতে থাকবে।

অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে বাবার কাছে মেয়ে নিরাপদ না ।
কদিন পর ছেলের কাছে মা নিরাপদ থাকবেন না।
এই অবস্থা দেখার আগে আমরা যেন দুনিয়া থেকে চলে যেতে পারি।

আমাদের দরকার এমন বন্ধুর, যে সমস্যার মূল খুঁজতে ছুটে যাবে।

( দুই বন্ধুর কাহিনী একটি বিদেশী গল্পের অনুবাদ)

জাবীন হামিদ

ফ্রীল্যান্স প্রতিবেদক

[email protected]
 
Last edited:

Similar Threads

Back
Top