Muslim Woman
Super Moderator
- Messages
- 12,286
- Reaction score
- 1,449
- Gender
- Female
- Religion
- Islam
বিসমিল্লাহ
***কপি***
ইমাম আবু হানিফা (রহিমাহুল্লাহ) । আসল নাম নুমান ইবনু সাবিত । আবু হানিফা তাঁর উপাধি ।
আরবি হানিফ শব্দের অর্থ একনিষ্ঠ, খাঁটি । তাঁর পিতা ছিলেন সাবিত এবং দাদা ছিলেন ইব্রাহিম, তাঁর দাদার সাথে খুব ভালো সম্পর্ক ছিল হযরত আলী (রা
এর ।
ইব্রাহিম তার পুত্র সাবিতকে আলী (রা
এর কাছে গিয়ে বলেছিলেন,
'আমার এবং আমার ছেলের জন্য দোয়া করে দিন ।'
একথা প্রসিদ্ধ যে ইব্রাহিমের বংশে ইমাম আবু হানিফার জন্ম আলী (রা
এর দোয়ার ফল ।
ইমাম আবু হানিফার জন্ম ইরাকের কুফা নগরীতে । এবং তিনি একজন তাবিয়ি । তাবিয়ি বলা হয় তাদেরকে যারা অন্তত একজন সাহাবীর সরাসরি সাক্ষাৎ পেয়েছিলেন । তার সাথে সাক্ষাৎ হয়েছিল সাহাবী আনাস ইবনে মালিক (রা
এর । আর আনাস ইবনে মালিক (রা
ছিলেন রাসূলুল্লাহ (সা
এর খাদেম ।
.
আব্বাসী খলিফা আবু জাফর আল মনসুরের শাসন আমলের কথা । একবার ইমাম আবু হানিফা তার দরবারে যান । খলিফা ইমাম আবু হানিফাকে প্রশ্ন করেন,
আপনি কোথা থেকে ইলম শিক্ষা করেছেন ?
জবাবে ইমাম আবু হানিফা (রহিমাহুল্লাহ) বলেন,
আমি ইলম গ্রহণ করেছি হাম্মাদ ইবনু আবী সোলাইমান থেকে । তিনি গ্রহণ করেছেন ইবরাহীম নাখয়ী থেকে । তিনি গ্রহণ করেছেন ওমর ইবনুল খাত্তাব, আলী ইবনু আবী তালিব, আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ, আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রহিমাহুল্লাহ) থেকে ।
তা শুনে খলিফা বললেন,
আপনি তো তাহলে ইলমের সবটুকু পেয়েছেন ।
.
এক মসজিদে ইমাম আবু হানিফা এক ইমামের পিছনে ইশার সালাত আদায় করেন -। ইমাম সাহেব তেলোয়াত করেছিলেন সূরা যিলযাল, যার শেষ আয়াত ছিল,
'অতঃপর অণু পরিমান নেক আমলকারী তা দেখতে পাবে ।
আর অণু পরিমাণ পাপ কাজ করলেও সে তা দেখতে পাবে ।'
নামাজ শেষ হয়ে গেল, মসজিদ থেকে বেরিয়ে গেল সবাই । শুধু রয়ে গেলেন ইমাম আবু হানিফা আর ইশার সালাতের ইমাম ।
ইমাম সাহেব বললেন,
'আমি দেখলাম ইমাম আবু হানিফা গভীর চিন্তায় ডুবে আছেন । বড় বড় শ্বাস নিচ্ছেন এবং কাঁপছেন । এরপর তাকে মসজিদে একা রেখে আমি বের হয়ে গেলাম । ভিতরে একটা তেলের বাতি জ্বলছিল টিমটিম করে ।
এরপর আমি ফজরের সময় মসজিদে এসে দেখি উনি সেই জায়গায় বসে আছেন এবং বিড়বিড় করে একাকী বারবার বলছেন,
হে কণা পরিমাণ সৎ কাজের বিনিময় দাতা সত্তা ।
হে কণা পরিমাণ মন্দ কাজের বিনিময় দানকারী সত্তা । আপনার বান্দা নুমানকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করুন । আপনার রহমতের ছায়া তলে জায়গা দিন । '
আমি যখন বাতি নিতে গেলাম আমাকে দেখে তিনি জিজ্ঞেস করলেন,
বাতি কি নিয়ে যাবেন ?
তিনি ভাবছিলেন তখনও রাত বেশি হয়নি ।- আমি বললাম,
ফজর হয়ে গেছে ।
তিনি বললেন,
ও আচ্ছা, যা দেখেছেন তা গোপন রাখবেন ।
কথা রেখেছি, ইমামের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এ ঘটনা কাউকে বলিনি ।'
.
ইমাম আবু হানিফার পাণ্ডিত্য এবং জনপ্রিয়তা দেখে তখনকার শাসক আল মনসুর তাকে হাত করার জন্য প্রধান বিচারপতি হওয়ার প্রস্তাব দিল । তিনি তা ফিরিয়ে দিলেন । এভাবে কয়েকবার প্রস্তাব করার পরও ফিরিয়ে দিলেন । অত্যাচারী মানসুর তাঁকে গ্রেপ্তার করে দৈনিক দশবার বেত্রাঘাত করতো ।
অত্যাচার থেকে বাঁচতে প্রায় দশ বছর পালিয়ে তিনি মক্কায় অবস্থান করেন।
খলিফা আবু জাফর আল মনসুর আবারও তাঁকে আবার প্রধান বিচারপতি হওয়ার প্রস্তাব দিল, তিনি বরাবরের মতই ফিরিয়ে দিলেন । আবুল মনসুর তাকে কারাগারে প্রেরণ করে । কারাগারে বিষ খাইয়ে হত্যা করে ।
.
তাদের সাধনা আর ত্যাগের বিনিময়ে আজ আমরা গোছানো ইসলাম পেয়েছি । আফসোস মাযহাবের দ্বন্দ্বে আমরা মূর্খরা তাদের সমালোচনা করতে পিছপা হইনা ।
.
রহিমাহুল্লাহ রহমাতান ওয়াসিয়ান ।
/
Golam Rabbii
***কপি***
ইমাম আবু হানিফা (রহিমাহুল্লাহ) । আসল নাম নুমান ইবনু সাবিত । আবু হানিফা তাঁর উপাধি ।
আরবি হানিফ শব্দের অর্থ একনিষ্ঠ, খাঁটি । তাঁর পিতা ছিলেন সাবিত এবং দাদা ছিলেন ইব্রাহিম, তাঁর দাদার সাথে খুব ভালো সম্পর্ক ছিল হযরত আলী (রা

ইব্রাহিম তার পুত্র সাবিতকে আলী (রা

'আমার এবং আমার ছেলের জন্য দোয়া করে দিন ।'
একথা প্রসিদ্ধ যে ইব্রাহিমের বংশে ইমাম আবু হানিফার জন্ম আলী (রা

ইমাম আবু হানিফার জন্ম ইরাকের কুফা নগরীতে । এবং তিনি একজন তাবিয়ি । তাবিয়ি বলা হয় তাদেরকে যারা অন্তত একজন সাহাবীর সরাসরি সাক্ষাৎ পেয়েছিলেন । তার সাথে সাক্ষাৎ হয়েছিল সাহাবী আনাস ইবনে মালিক (রা



.
আব্বাসী খলিফা আবু জাফর আল মনসুরের শাসন আমলের কথা । একবার ইমাম আবু হানিফা তার দরবারে যান । খলিফা ইমাম আবু হানিফাকে প্রশ্ন করেন,
আপনি কোথা থেকে ইলম শিক্ষা করেছেন ?
জবাবে ইমাম আবু হানিফা (রহিমাহুল্লাহ) বলেন,
আমি ইলম গ্রহণ করেছি হাম্মাদ ইবনু আবী সোলাইমান থেকে । তিনি গ্রহণ করেছেন ইবরাহীম নাখয়ী থেকে । তিনি গ্রহণ করেছেন ওমর ইবনুল খাত্তাব, আলী ইবনু আবী তালিব, আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ, আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রহিমাহুল্লাহ) থেকে ।
তা শুনে খলিফা বললেন,
আপনি তো তাহলে ইলমের সবটুকু পেয়েছেন ।
.
এক মসজিদে ইমাম আবু হানিফা এক ইমামের পিছনে ইশার সালাত আদায় করেন -। ইমাম সাহেব তেলোয়াত করেছিলেন সূরা যিলযাল, যার শেষ আয়াত ছিল,
'অতঃপর অণু পরিমান নেক আমলকারী তা দেখতে পাবে ।
আর অণু পরিমাণ পাপ কাজ করলেও সে তা দেখতে পাবে ।'
নামাজ শেষ হয়ে গেল, মসজিদ থেকে বেরিয়ে গেল সবাই । শুধু রয়ে গেলেন ইমাম আবু হানিফা আর ইশার সালাতের ইমাম ।
ইমাম সাহেব বললেন,
'আমি দেখলাম ইমাম আবু হানিফা গভীর চিন্তায় ডুবে আছেন । বড় বড় শ্বাস নিচ্ছেন এবং কাঁপছেন । এরপর তাকে মসজিদে একা রেখে আমি বের হয়ে গেলাম । ভিতরে একটা তেলের বাতি জ্বলছিল টিমটিম করে ।
এরপর আমি ফজরের সময় মসজিদে এসে দেখি উনি সেই জায়গায় বসে আছেন এবং বিড়বিড় করে একাকী বারবার বলছেন,
হে কণা পরিমাণ সৎ কাজের বিনিময় দাতা সত্তা ।
হে কণা পরিমাণ মন্দ কাজের বিনিময় দানকারী সত্তা । আপনার বান্দা নুমানকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করুন । আপনার রহমতের ছায়া তলে জায়গা দিন । '
আমি যখন বাতি নিতে গেলাম আমাকে দেখে তিনি জিজ্ঞেস করলেন,
বাতি কি নিয়ে যাবেন ?
তিনি ভাবছিলেন তখনও রাত বেশি হয়নি ।- আমি বললাম,
ফজর হয়ে গেছে ।
তিনি বললেন,
ও আচ্ছা, যা দেখেছেন তা গোপন রাখবেন ।
কথা রেখেছি, ইমামের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এ ঘটনা কাউকে বলিনি ।'
.
ইমাম আবু হানিফার পাণ্ডিত্য এবং জনপ্রিয়তা দেখে তখনকার শাসক আল মনসুর তাকে হাত করার জন্য প্রধান বিচারপতি হওয়ার প্রস্তাব দিল । তিনি তা ফিরিয়ে দিলেন । এভাবে কয়েকবার প্রস্তাব করার পরও ফিরিয়ে দিলেন । অত্যাচারী মানসুর তাঁকে গ্রেপ্তার করে দৈনিক দশবার বেত্রাঘাত করতো ।
অত্যাচার থেকে বাঁচতে প্রায় দশ বছর পালিয়ে তিনি মক্কায় অবস্থান করেন।
খলিফা আবু জাফর আল মনসুর আবারও তাঁকে আবার প্রধান বিচারপতি হওয়ার প্রস্তাব দিল, তিনি বরাবরের মতই ফিরিয়ে দিলেন । আবুল মনসুর তাকে কারাগারে প্রেরণ করে । কারাগারে বিষ খাইয়ে হত্যা করে ।
.
তাদের সাধনা আর ত্যাগের বিনিময়ে আজ আমরা গোছানো ইসলাম পেয়েছি । আফসোস মাযহাবের দ্বন্দ্বে আমরা মূর্খরা তাদের সমালোচনা করতে পিছপা হইনা ।
.
রহিমাহুল্লাহ রহমাতান ওয়াসিয়ান ।
/
Golam Rabbii