কুরআনের সুরা নিসার ৩৪ ন্ং আয়াত কে ‘স্ত্রী-প্রহার’ এর দলিল হিসেবে পেশ করা হয় । এই আয়াতের প্রচলিত অনুবাদটি নিচে তুলে ধরা হলোঃ
[004: 034] পুরুষেরা নারীদের উপর কৃর্তত্বশীল এ জন্য যে, আল্লাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় করে। সে মতে নেককার স্ত্রীলোকগণ হয় অনুগতা এবং আল্লাহ যা হেফাযতযোগ্য করে দিয়েছেন লোক চক্ষুর অন্তরালেও তার হেফাযত করে। আর যাদের মধ্যে অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তাদের সদুপদেশ দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর এবং প্রহার কর (اضْرِبُو/আদরিবু)। যদি তাতে তারা বাধ্য হয়ে যায়, তবে আর তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সবার উপর শ্রেষ্ঠ।
এই আয়াতে 'আদরিবু '-এর সঠিক অর্থ হলো ‘ছেড়ে দেওয়া/ত্যাগ করা’ যা কুরআন নিজেই শক্তিশালীভাবে সমর্থন করে। একই অধ্যায়ের ৯৪ এবং ১০১ আয়াতে اضْرِبُ এর মূল (ض ر ب) ব্যবহত হয়েছে :
[004: 094] হে ঈমানদারগণ! তোমরা যখন আল্লাহর পথে বের হও/'আদারাব-তুম' (ا ضَرَبْتُمْ), তখন যাচাই করে নিও এবং যে, তোমাদেরকে সালাম করে তাকে বলো না যে, তুমি মুসলমান নও। তোমরা পার্থিব জীবনের সম্পদ অন্বেষণ কর, বস্তুতঃ আল্লাহর কাছে অনেক সম্পদ রয়েছে। তোমরা ও তো এমনি ছিলে ইতিপূর্বে; অতঃপর আল্লাহ তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। অতএব, এখন অনুসন্ধান করে নিও। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের কাজ কর্মের খবর রাখেন।
[004: 101] যখন তোমরা কোন দেশ হতে বের হও/'আদারাব-তুম' (ا ضَرَبْتُمْ), তখন নামাযে কিছুটা হ্রাস করলে তোমাদের কোন গোনাহ নেই, যদি তোমরা আশঙ্কা কর যে, কাফেররা তোমাদেরকে উত্ত্যক্ত করবে। নিশ্চয় কাফেররা তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।
এই দুই আয়াতে মূল 'দারাবা' ض ر ب এর Derivatives ব্যবহত হয়েছে যার দ্বারা কোন কিছু ত্যাগ করা বা ছেড়ে চলে যাওয়ার বোঝাতে । যেহেতু এই তিনিটি একই সুরার অন্তূর্ভক্ত , তাই সব কয়টিই একই মানে বহন করে যুক্তি সঙ্গত ভাবেই ঃ
আয়াত ৩৪ ঃ স্ত্রী কে ত্যাগ করো যদি মিলমিশ না হয় ।
আয়াত ৯৪ ঃ ঘর-বাড়ী ত্যাগ কর আল্লাহর রাস্তাতে ।
আয়াত ১০১ ঃ ঘর-বাড়ী ত্যাগ কর আল্লাহর রাস্তাতে ।
আবারো সুরা নিসারই ১৯-২১ নং আয়াতে স্বামীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে স্ত্রীর সাথে অত্যন্ত সদয়ের/বিনয়ের সাথে বিচ্ছেদ নিতে যদি তালাক ছাড়া অন্য কোন রাস্তা না থাকে ঃ
[004: 019] হে ঈমাণদারগণ! বলপূর্বক নারীদেরকে উত্তরাধিকারে গ্রহন করা তোমাদের জন্যে হালাল নয় এবং তাদেরকে আটক রেখো না যাতে তোমরা তাদেরকে যা প্রদান করেছ তার কিয়দংশ নিয়ে নাও; কিন্তু তারা যদি কোন প্রকাশ্য অশ্লীলতা করে! নারীদের সাথে সদ্ভাবে জীবন-যাপন কর। অতঃপর যদি তাদেরকে অপছন্দ কর, তবে হয়ত তোমরা এমন এক জিনিসকে অপছন্দ করছ, যাতে আল্লাহ, অনেক কল্যাণ রেখেছেন।
[004: 0২0] যদি তোমরা এক স্ত্রীর স্থলে অন্য স্ত্রী পরিবর্তন করতে ইচ্ছা কর এবং তাদের একজনকে প্রচুর ধন-সম্পদ প্রদান করে থাক, তবে তা থেকে কিছুই ফেরত গ্রহণ করো না। তোমরা কি তা অন্যায়ভাবে ও প্রকাশ্য গোনাহর মাধ্যমে গ্রহণ করবে?
[004: 0২1] তোমরা কিরূপে তা গ্রহণ করতে পার, অথচ তোমাদের একজন অন্য জনের কাছে গমন এবং নারীরা তোমাদের কাছে থেকে সুদৃঢ় অঙ্গীকার গ্রহণ করেছে।
১২৮ আয়াতে স্বামীর নিষ্ঠুর আচরণ কে অভিযুক্ত করা হয়েছে । তাতে স্পষ্টতই আরো প্রমাণিত হয় যে মহান আল্লাহ কখনই স্ত্রী প্রহারের আদেশ দিতে পারেননা ।
[004: 128] যদি কোন নারী স্বীয় স্বামীর পক্ষ থেকে অসদাচরণ কিংবা উপেক্ষার আশংকা করে, তবে পরস্পর কোন মীমাংসা করে নিলে তাদের উভয়ের কোন গোনাহ নাই। মীমাংসা উত্তম। মনের সামনে লোভ বিদ্যমান আছে। যদি তোমরা উত্তম কাজ কর এবং খোদাভীরু হও, তবে, আল্লাহ তোমাদের সব কাজের খবর রাখ্রিয়া
উপসংহারঃ
সুরা নিসার ৩৪ নং আয়াত অনুসারে যদি স্বামি-স্ত্রীর বনিবনা না হয় , তবে তালাকের আগে নিম্নোক্ত ৩ টি পদক্ষেপ নিতে হবেঃ
১- তাদেরকে সদুপদেশ দিতে হবে , বোঝাতে হবে ।
২- তাতে কাজ না হলে স্বামি-স্ত্রী ভিন্ন ভিন্ন বিছানাতে শুবে ।
৩- তাতেও সমস্যার সমাধান নাহলে স্ত্রীকে স্বামীর ঘর ছেঁড়ে তার অভিভাবকের ঘরে চলে যেতে হবে ।
এই সমস্ত পদক্ষেপ নিতে হবে অত্যন্ত উত্তম আচরণ ও সদ্ভাবের সাথে । মারধর ইত্যাদি কোন সদাচরণ নয় ।
লেখকঃ আবরার শাহরিয়ার
ইমেইলঃ[email protected]
[004: 034] পুরুষেরা নারীদের উপর কৃর্তত্বশীল এ জন্য যে, আল্লাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় করে। সে মতে নেককার স্ত্রীলোকগণ হয় অনুগতা এবং আল্লাহ যা হেফাযতযোগ্য করে দিয়েছেন লোক চক্ষুর অন্তরালেও তার হেফাযত করে। আর যাদের মধ্যে অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তাদের সদুপদেশ দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর এবং প্রহার কর (اضْرِبُو/আদরিবু)। যদি তাতে তারা বাধ্য হয়ে যায়, তবে আর তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সবার উপর শ্রেষ্ঠ।
এই আয়াতে 'আদরিবু '-এর সঠিক অর্থ হলো ‘ছেড়ে দেওয়া/ত্যাগ করা’ যা কুরআন নিজেই শক্তিশালীভাবে সমর্থন করে। একই অধ্যায়ের ৯৪ এবং ১০১ আয়াতে اضْرِبُ এর মূল (ض ر ب) ব্যবহত হয়েছে :
[004: 094] হে ঈমানদারগণ! তোমরা যখন আল্লাহর পথে বের হও/'আদারাব-তুম' (ا ضَرَبْتُمْ), তখন যাচাই করে নিও এবং যে, তোমাদেরকে সালাম করে তাকে বলো না যে, তুমি মুসলমান নও। তোমরা পার্থিব জীবনের সম্পদ অন্বেষণ কর, বস্তুতঃ আল্লাহর কাছে অনেক সম্পদ রয়েছে। তোমরা ও তো এমনি ছিলে ইতিপূর্বে; অতঃপর আল্লাহ তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। অতএব, এখন অনুসন্ধান করে নিও। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের কাজ কর্মের খবর রাখেন।
[004: 101] যখন তোমরা কোন দেশ হতে বের হও/'আদারাব-তুম' (ا ضَرَبْتُمْ), তখন নামাযে কিছুটা হ্রাস করলে তোমাদের কোন গোনাহ নেই, যদি তোমরা আশঙ্কা কর যে, কাফেররা তোমাদেরকে উত্ত্যক্ত করবে। নিশ্চয় কাফেররা তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।
এই দুই আয়াতে মূল 'দারাবা' ض ر ب এর Derivatives ব্যবহত হয়েছে যার দ্বারা কোন কিছু ত্যাগ করা বা ছেড়ে চলে যাওয়ার বোঝাতে । যেহেতু এই তিনিটি একই সুরার অন্তূর্ভক্ত , তাই সব কয়টিই একই মানে বহন করে যুক্তি সঙ্গত ভাবেই ঃ
আয়াত ৩৪ ঃ স্ত্রী কে ত্যাগ করো যদি মিলমিশ না হয় ।
আয়াত ৯৪ ঃ ঘর-বাড়ী ত্যাগ কর আল্লাহর রাস্তাতে ।
আয়াত ১০১ ঃ ঘর-বাড়ী ত্যাগ কর আল্লাহর রাস্তাতে ।
আবারো সুরা নিসারই ১৯-২১ নং আয়াতে স্বামীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে স্ত্রীর সাথে অত্যন্ত সদয়ের/বিনয়ের সাথে বিচ্ছেদ নিতে যদি তালাক ছাড়া অন্য কোন রাস্তা না থাকে ঃ
[004: 019] হে ঈমাণদারগণ! বলপূর্বক নারীদেরকে উত্তরাধিকারে গ্রহন করা তোমাদের জন্যে হালাল নয় এবং তাদেরকে আটক রেখো না যাতে তোমরা তাদেরকে যা প্রদান করেছ তার কিয়দংশ নিয়ে নাও; কিন্তু তারা যদি কোন প্রকাশ্য অশ্লীলতা করে! নারীদের সাথে সদ্ভাবে জীবন-যাপন কর। অতঃপর যদি তাদেরকে অপছন্দ কর, তবে হয়ত তোমরা এমন এক জিনিসকে অপছন্দ করছ, যাতে আল্লাহ, অনেক কল্যাণ রেখেছেন।
[004: 0২0] যদি তোমরা এক স্ত্রীর স্থলে অন্য স্ত্রী পরিবর্তন করতে ইচ্ছা কর এবং তাদের একজনকে প্রচুর ধন-সম্পদ প্রদান করে থাক, তবে তা থেকে কিছুই ফেরত গ্রহণ করো না। তোমরা কি তা অন্যায়ভাবে ও প্রকাশ্য গোনাহর মাধ্যমে গ্রহণ করবে?
[004: 0২1] তোমরা কিরূপে তা গ্রহণ করতে পার, অথচ তোমাদের একজন অন্য জনের কাছে গমন এবং নারীরা তোমাদের কাছে থেকে সুদৃঢ় অঙ্গীকার গ্রহণ করেছে।
১২৮ আয়াতে স্বামীর নিষ্ঠুর আচরণ কে অভিযুক্ত করা হয়েছে । তাতে স্পষ্টতই আরো প্রমাণিত হয় যে মহান আল্লাহ কখনই স্ত্রী প্রহারের আদেশ দিতে পারেননা ।
[004: 128] যদি কোন নারী স্বীয় স্বামীর পক্ষ থেকে অসদাচরণ কিংবা উপেক্ষার আশংকা করে, তবে পরস্পর কোন মীমাংসা করে নিলে তাদের উভয়ের কোন গোনাহ নাই। মীমাংসা উত্তম। মনের সামনে লোভ বিদ্যমান আছে। যদি তোমরা উত্তম কাজ কর এবং খোদাভীরু হও, তবে, আল্লাহ তোমাদের সব কাজের খবর রাখ্রিয়া
উপসংহারঃ
সুরা নিসার ৩৪ নং আয়াত অনুসারে যদি স্বামি-স্ত্রীর বনিবনা না হয় , তবে তালাকের আগে নিম্নোক্ত ৩ টি পদক্ষেপ নিতে হবেঃ
১- তাদেরকে সদুপদেশ দিতে হবে , বোঝাতে হবে ।
২- তাতে কাজ না হলে স্বামি-স্ত্রী ভিন্ন ভিন্ন বিছানাতে শুবে ।
৩- তাতেও সমস্যার সমাধান নাহলে স্ত্রীকে স্বামীর ঘর ছেঁড়ে তার অভিভাবকের ঘরে চলে যেতে হবে ।
এই সমস্ত পদক্ষেপ নিতে হবে অত্যন্ত উত্তম আচরণ ও সদ্ভাবের সাথে । মারধর ইত্যাদি কোন সদাচরণ নয় ।
লেখকঃ আবরার শাহরিয়ার
ইমেইলঃ[email protected]
Last edited: