যিলহজ্ব

Muslim Woman

Super Moderator
Messages
12,286
Reaction score
1,449
Gender
Female
Religion
Islam
বিসমিল্লাহ

***

#যিলহজ্ব_মাস____বাংলাদেশ
___________________________
♦১) কবে শুরু ?

১১ জুলাই রবিবার যিলক্বদ মাসের ২৯ দিন শেষ হবে। ঐ দিন সন্ধ্যাই চাঁদ দেখতে হবে।
♦২) রোযা রাখবো কবে?

যদি চাঁদ ১১ জুলাই সন্ধ্যাই দেখা যায় তাহলে ঐ দিন রাতেই সাহরি খেয়ে ১২ জুলাই সোমবার থেকে রোযা রাখা শুরু করতে হবে।
(সেই ভাবেই প্রস্তুতি গ্রহণ করবেন।)
আর যদি ১১ তারিখ চাঁদ দেখা না যায় তাহলে ১২ তারিখ সোমবার রাতে সাহরি খেয়ে ১৩ তারিখ মঙ্গলবার থেকে রোযা রাখতে হবে ।।
♦৩) কতগুলো রাখবো?

রোযা মোট ৯ টা ( ১~৯ যিলহজ্জ)। সবগুলো রাখাই উত্তম । সব না পারলে সাধ্যমত রাখবেন। অন্তত কিছু না হলেও শেষের দুটো রোযা ( ৮,৯ যিলহজ্জ ) বা শেষ ( ৯ যিলহজ্জ ) একটা রোযা রাখা উচিত।

এগুলো নফল রোযা । কেউ না রাখলে গুনাহ হবে না। কেউ আবার ভাববেন না যে রাখতেই হবে। আপনার ইচ্ছা । আপনি আপনার আখেরাত কেমন ভাবে গড়বেন।

যাদের রমজানের কাযা আছে তারা প্রথম ৭ টা কাযা রোযার নিয়তে আর শেষ দুটো নফলের নিয়তে রাখতে পারেন।।
♦৪) শুনেছি ঈদের আগের দিন রোযা রাখা হারাম?

ভুল শুনেছেন । বছরের ৫ দিন রোযা রাখা হারাম ।
শাওয়ালের ১ তারিখ ( রোযার ঈদের দিন ), যিলহজ্বের ১০,১১,১২,১৩ তারিখ ( কুরবানি ঈদের দিন ও পরের ৩ দিন )। মোট 5 দিন।

এছাড়া শুধু শুক্রবার একদিন ও শুধু শনিবার একদিন সাধারণ নফল রোযা রাখা নিষেধ । তবে এর সাথে আরো একটি করে রোযা রাখলে রাখা যায়।
♦৫) আমি তো কুরবানী দিবো না তাহলে?

এই রোযা গুলো নফল । কুরবানীর সাথে সম্পর্ক না। আপনি রাখলে সওয়াব পাবেন। না রাখলে সমস্যা নাই।
♦৬ ) শুনেছি যারা কুরবানী করবে তারা নখ চুল ইত্যাদি কাটবে না?

জি । যারা কুরবানী করবে তাদের জন্য সুন্নাত হলো যিলহজ্ব শুরুর পর থেকে কুরবানী না করা পর্যন্ত চুল নখ গুপ্তাঙ্গ পরিষ্কার না করা।
এজন্য যিলহজ্জ মাস শুরুর আগেই এই কাজ গুলো করে নিতে হবে ।
যারা কুরবানী করবে না তারাও এই আমল গুলো করলে সোওয়াব পাবে ইনশাআল্লাহ। নারী পুরুষ ছেলে মেয়ে সবাই করতে পারবে এই আমল।
এই আমল করতে চাইলে ১১ জুলাই সন্ধ্যার আগেই সব কিছু পরিষ্কার করে নিতে হবে । আপনি সেই ভাবেই প্রস্তুতি গ্রহণ করবেন।
♦৭) রোযা রাখতে গিয়ে যদি সাহরি খেতে না পারি ?

সাহরি খাওয়া সুন্নাত । ইচ্ছা করে ত্যাগ করা যাবে না। যদি ঘুমের কারনে টের না পাওয়া যায় তাহলে কিছু না খেয়ে শুধু নিয়ত করে রাখলেই রোযা হবে।।নফল রোযা রাখছি বললেই হবে।। অন্যদিকে রোযা রাখার জন্য সাহরি করলেই নিয়ত হয়ে যাবে( ইং শা আল্লাহ) মুখে না বল্লেও চলবে।।
♦৮ ) আরাফার দুআ ও তাকবীরে তাশরীক কি?

আরাফার দুআ আরাফার দিনে পড়তে হয়। তবে সেটা অন্যান্য যে কোন সময়ও পড়া যাবে। দুআ টি হলোঃ

لاَ إِلٰهَ إِلاَّ اللهُ
وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ
لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ
وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
#উচ্চারণঃলা ইলাহা ইল্লাল্লহু
ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু
লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু
ওয়াহুওয়া আলা কুল্লি শাই ইং কদির।
( আরবি উচ্চারণ কোন ভাষাতেই লেখা যায় না । এটা পড়ে শিখে নিবেন )
 
বিসমিল্লাহ

***

আগামীকাল সন্ধ্যায় জিলহজের চাঁদ উঠতে পারে। কাল না উঠলে পরদিন উঠবে। আমাদের উচিত আগামীকাল (১১/০৭/২১, রবিবার) বিকেল হওয়ার আগেই নিজেদের নখ, চুল ও শরীরের অন্যান্য পশম কেটে ফেলা; জিলহজ মাস শুরু হয়ে গেলে নখ, চুল, পশম না কাটা।
.
নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘তোমাদের কেউ জিলহজ মাসের চাঁদ দেখলে এবং কুরবানি করার ইচ্ছা করলে, সে যেন তার চুল ও নখ কাটা থেকে বিরত থাকে।’’ [মুসলিম, আস-সহিহ: ১৯৭৭]
.
এই হাদিস থেকে জানা গেলো, জিলহজ মাস শুরু হয়ে গেলে কুরবানিদাতা ১০ তারিখের আগে চুল ও নখ কাটবে না। তবে, অন্য হাদিস থেকে বোঝা যায়, যারা কুরবানি দেবে না, তারাও এই হুকুমের অন্তর্ভূক্ত। বিশেষত কুরবানিদাতার ক্ষেত্রে নখ ও চুল না কাটার এই হুকুমকে কোনো কোনো আলিম ‘ওয়াজিব’ (বাধ্যতামূলক) বলেছেন, আবার অনেকে ‘মুস্তাহাব’ (উত্তম) বলেছেন।
.
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘আমি কুরবানির দিন সম্পর্কে আদিষ্ট হয়েছি। আল্লাহ তা’আলা তা এই উম্মতের জন্য ঈদ হিসেবে নির্ধারণ করেছেন।’’ এক ব্যক্তি বললো, ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ্! যদি আমার কাছে শুধু একটি মানিহা থাকে (অর্থাৎ, অন্যের থেকে নেওয়া দুগ্ধ দানকারী একটি উটনী থাকে শুধু—তবুও কি কুরবানি দিতে হবে?)’ নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘‘না; বরং সেদিন (অর্থাৎ, ঈদের দিন) তুমি তোমার চুল কাটবে, নখ কাটবে, গোঁফ ও নাভীর নিচের পশম পরিষ্কার করবে। এটাই আল্লাহ তা’আলার কাছে তোমার পূর্ণ কুরবানি বলে গন্য হবে।’’ [আহমাদ, আল-মুসনাদ: ৬৫৭৫; আবু দাউদ, আস-সুনান: ২৭৮৯; ইমাম হাকিম, ইবনু হিব্বান, মুনযিরি, তাবারানি, যাহাবি, শুয়াইব আরনাউত্ব (রাহিমাহুমুল্লাহ্)-সহ মুহাদ্দিসগণ হাদিসটির সনদ হাসান (গ্রহণযোগ্য) বলেছেন]
.
এই হাদিসে ঈদের দিনে নখ ও চুল কাটতে বলা হয়েছে। অর্থাৎ, জিলহজ মাস শুরু হয়ে গেলে এর প্রথম ৯ দিনে না কেটে ১০ম দিন অর্থাৎ, একেবারে ঈদের দিনে কাটলে আল্লাহর নিকট পূর্ণ কুরবানির নেকি পাওয়া যাবে, ইনশাআল্লাহ। সুতরাং, আমাদের মধ্যে যারা কুরবানি দেবো আর যারা দেবো না, সবাই জিলহজ মাসের চাঁদ দেখার আগেই নখ ও চুল কেটে নেবো। এরপর এই ৯ দিন নখ ও চুল না কেটে আরেকবার ঈদের দিন পশু জবাইয়ের পরে কোনো একসময় কাটবো, ইনশাআল্লাহ।
.
আবারও বলছি, আগামীকাল সন্ধ্যায় জিলহজের চাঁদ উঠতে পারে। আর, আগামীকাল না উঠলে এর পরদিন অবশ্যই উঠবে, ইনশাআল্লাহ। সুতরাং চুল-নখ-পশম কালকের মধ্যে কেটে জিলহজ মাসকে বরণ করে নিতে প্রস্তুতি নিন। জিলহজের প্রথম ৯ দিন রোজা রাখা উত্তম। বিশেষ করে, নবম তথা আরাফার দিনের রোজা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। যারা ৯ দিন রাখতে পারবেন না, তারা সাধ্যানুসারে যে কয়টি সম্ভব রাখবেন।
.
#Tasbeeh
 
জ্বিলহ্বজের প্রথম ১০ দিনের আমল

#জিলহ্বজ মাস আল্লাহ তাআ’লার এক বিশেষ মাস। এ মাসের প্রথম দশ দিনের ফজিলত সম্পর্কে আমরা কম বেশি মোটামুটি সবাই জানি। এবার কিছু আমল লিস্ট করে শুরু করার নিয়্যাত করা যায়।

▪️জিলহজ্জ মাসের চাঁদ দেখার আগেই মানে সূর্যাস্তের পূর্বে চুল নখ কেটে নেয়া।

▪️আসমানে নতুন চাঁদ খোজা, চাঁদ দেখে দুয়া পড়া

▪️জিলহজ্বের ৯ টি সিয়াম করার নিয়্যাত করা

▪️প্রতিদিন কুরআন শরিফ থেকে একশটি আয়াত পড়া
তাহলে সারারাত্রিতে টানা তাহায্যুদ সালাত আদায় করার সাওয়াব পাওয়া যাবে ইন শা আল্লাহ। (সহিহুল জামে ৬৪৬৮)
(সূরা কদর থেকে সর্বশেষ সূরা নাস পর্যন্ত পড়া যায়।
কম সময়ে অতি সহজে ১০০ আয়াত পূর্ন হয় এতে)

▪️প্রতিদিন কুরআন শরিফ থেকে দশটি আয়াত তিলাওয়াত করা। তাহলে আমলনামায় কিন্তার পরিমান সাওয়াব লিখা হবে।
কিন্তার হল পৃথিবী ও তার মধ্যস্থ সকল কিছুর চেয়েও শ্রেষ্ঠ।
(সহিহ তারগিব ৬৩৮)

▪️বেশি বেশি "সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহি" জিকির করা।
একবার "সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহি" পাঠ করা হলো আল্লাহর রাস্তায় পাহাড় পরিমান স্বর্ণ দান করার চেয়েও উত্তম। (সহীহ আত তারগীব ১৫৪১, তাবারানি ফিল কাবির ৭৭৯৫)

▪️উম্মু হানি (র.) রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট এসে বলেন, “ইয়া রসূলুল্লাহ, আমি বৃদ্ধ ও দুর্বল হয়ে গিয়েছি, আমাকে এমন একটি আমল শিখিয়ে দিন যা আমি বসে বসে পালন করতে পারবো।
তিনি বলেনঃ "তুমি ১০০ বার "সুব'হানআল্লাহ" বলবে তাহলে ১০০টি ক্রীতদাস মুক্ত করার সমপরিমাণ সাওয়াব তুমি পাবে।
তুমি ১০০ বার "আলহামদুলিল্লাহ" বলবে, তাহলে আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধের জন্য ১০০ টি সাজানো ঘোড়ায় মুজাহিদ প্রেরণের সমপরিমাণ সাওয়াব পাবে।
তুমি ১০০ বার "আল্লাহু আকবার" বলবে, তাহলে ১০০টি মাকবুল উট কুরবানির সমপরিমাণ সাওয়াব তুমি পাবে।তুমি ১০০ বার "লা-ইলাহা ইল্লাহ" বলবে, তাহলে তোমার সাওয়াবে আসমান ও জমীন পূর্ণ হয়ে যাবে (এবং তোমার কোন পাপই বাকি থাকবেনা)।”
(মুসনাদে আহমাদ ৬/৩৪৪, সুনানু ইবনু মাজাহ ২/১২৫২,নং ৩৮১০, নাসাঈ, কুবরা ৬/২১১, মুসতাদারাক হাকিম ১/৬৯৫, মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/৯২; আলবানী সহীহাহ ৩/৩০২,৩৯০,নং ১৩১৬)

▪️পুরুষরা মসজিদে ফরয সালাত আদায় করতে গেলে বাড়ি থেকে ওযু করে যাবেন।
তাহলে আপনার আমলনামায় একটি কবুল হজ্জের সাওয়াব লেখা হবে। (মিশকাত ৭২৮)

▪️সূরা ইখলাস যতক্ষণ পারা যায় পড়তে থাকা
তিনবার সূরা ইখলাস পড়লে আমলনামায় পুরো এক খতম কুরআন পড়ার সাওয়াব লেখা হবে।
(সহীহ বুখারি ৫০১৫)

▪️প্রতিদিন কমপক্ষে ১ টাকা করে হলেও দান করুন।

▪️ বেশি বেশি দুরুদ পড়া “সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" একটা দুরুদ।

▪️দৈনন্দিন সকাল সন্ধ্যার জিকিরগুলো পড়া সাথে অন্যান্য জিকিরগুলো কাজের ফাকে, হাটতে চলতে করতে থাকা।

যেমনঃ সুবাহানআল্লাহ, আলহামদ-লিল্লাহ, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহি ইত্যাদি বেশি বেশি পাঠ করা

▪️বেশি বেশি ইস্তিগফার পাঠ করা।
ছোট্ট একটা ইস্তেগফার হলোঃ
"আস্তাগফিরুল্লাহি ওয়াতুবু ইলাইহি"।
অথবা শুধু “আস্তগফিরুল্লাহ”

▪️প্রতিদিন অন্ততপক্ষে দুই রাকাত করে হলেও নফল সালাত আদায় করা যায়।

▪️প্রতিক্ষন আল্লাহর কাছে তাওবা করা।

▪️বেশি বেশি দুয়া করা।

◾️আরাফার দুয়া
এই দুয়া সবসময়ই পড়া হয় তবে ঈদের দুইদিন আগে থেকে অবশ্যই নিয়ম করে পড়তে হবে।
‎لاَ إِلٰهَ إِلاَّ اللهُ
‎وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ
‎لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ
‎وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
উচ্চারণঃ
লা ইলাহা ইল্লাল্লহু
ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু
লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু
ওয়াহুওয়া আলা কুল্লি শাইয়্যিন ক্বদির।

▪️নিচের তাসবিহটাও বেশী বেশী পড়া যায়
‎سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ وَسُبْحَانَ اللهِ الْعَظِيْمِ
উচ্চারণঃ সুবহানাল্লহি ওয়াবিহামদিহি ওয়া সুবহানাল্লহিল আযীম ।

◾️আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো তাকবীরে তাশরীকঃ
জিলহজ্ব মাসের ৯ জিলহজ্ব ফজর থেকে ১৩ জিলহজ্ব আসর পর্যন্ত (২৩ ওয়াক্ত ) প্রত্যেক ফরজ সালাতের সালাম ফেরানোর পরপরই কোন প্রকার কথা না বলে একবার তাকবীর বলা ওয়াজিব।
পুরুষের জন্য আওয়াজ করে, আর মহিলাদের জন্য নীরবে নিজে শুনতে পারবে এমন ভাবে বলতে হবে।
তাকবির হলঃ
‎اَللهُ أَكْبَرُ، اَللهُ أكْبَرُ،
‎لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ،
‎وَاللهُ أَكْبَرُ، اَللهُ أَكْبَرُ
‎ﻭ ﻟِﻠّﻪ الحَمْدُ
আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার
লা-ইলাহা ইল্লাল্লহু
ওয়াল্লহু আকবার আল্লাহু আকবার
ওয়ালিল্লাহিল হামদ

▪️নিসাব পরিমান সম্পদ থাকলে মহিলাদের উপরও কুরবানী ওয়াজিব হয়। তাই কুরবানী করার ব্যবস্থা করা।

- Tahmina Islam
 
আমরা যারা রামাদানে সেভাবে ইবাদত করতে পারিনি, তাদের জন্য একটি সুবর্ণ সুযোগ আসছে। আর মাত্র o
আগামীকাল থেকে শুরু হবে জিলহজ মাস। এই মাসের প্রথম দশ দিনের মর্যাদা বছরের অন্যান্য দিনের চেয়ে অনেক বেশি।
▬▬▬▬▬▬▬◄❖►▬▬▬▬▬▬▬
প্রথমেই আমাদের জানতে হবে: জিলহজ হলো, আরবি চন্দ্রবছরের সর্বশেষ তথা ১২ তম মাস। আর, এর প্রথম দশ দিনেই হজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো সম্পন্ন হয়। জিলহজের প্রথম দশক রামাদানের শেষ দশকের সাথে তুলনীয়। আসুন, এই দশ দিনের সুমহান মর্যাদা ও ফজিলতের ১০ টি দিক সম্পর্কে জানি।
.
(১) এই দিনগুলোর আমল আল্লাহর নিকট সারা বছরের মধ্যে সবচেয়ে প্রিয় ও শ্রেষ্ঠ:
.
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘আল্লাহ তা‘আলার নিকট জিলহজের (প্রথম) দশ দিনের আমলের চেয়ে অধিক মর্যাদাপূর্ণ ও প্রিয় অন্য কোনো আমল নেই।’’ সাহাবিগণ বললেন, ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহ রাস্তায় জিহাদও কি এর চেয়ে উত্তম নয়?’ তিনি বললেন, ‘‘না। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও নয়। তবে যে ব্যক্তি তার জান ও মাল নিয়ে (জিহাদে) ঝাঁপিয়ে পড়লো এবং এর কোনোটি নিয়েই আর ফিরে এলো না (অর্থাৎ, শহিদ হয়ে গেলো, তার কথা ভিন্ন)।’’ [বুখারি, আস-সহিহ: ৯৬৯; আহমাদ, আল-মুসনাদ: ৬৫০৫; আবু দাউদ, আস-সুনান: ২৪৩৮]
.
এই দশদিনের ফরজ ইবাদত অন্যান্য মাসের ফরজ ইবাদতের তুলনায় অধিক মর্যাদার। এই দশদিনের নফল ইবাদত অন্যান্য মাসের নফল ইবাদতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। [ইবনু রজব, ফাতহুল বারি: ৯/১৫]
.
(২) আল্লাহ তা‘আলা জিলহজ মাসের প্রথম দশ রাতের শপথ করেছেন:
.
আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘শপথ ভোর বেলার, শপথ দশ রাতের।’’ [সুরা ফাজর, আয়াত: ১-২]
.
সাহাবিদের মধ্যে কুরআনের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যাখ্যাকার ইবনু আব্বাস (রা.), শীর্ষ তাবি‘য়িগণ ও মুফাসসিরগণের মতে, এখানে ‘দশ রাত’ দ্বারা জিলহজ মাসের প্রথম দশ রাতকেই বুঝানো হয়েছে। ইমাম ইবনু কাসির (রাহ.) বলেন, এটিই বিশুদ্ধ মত। [ইবনু কাসির, তাফসিরুল কুরআনিল আযিম: ৪/৫৩৫-৫৩৬; আলুসি, রুহুল মা‘আনি: ২০/৪২২]
.
(৩) এগুলো সেই ‘নির্দিষ্ট দিন’, যেগুলোতে আল্লাহর নাম স্মরণ করা হয় বিশেষভাবে:
.
আল্লাহ তা-‘আলা বলেন, ‘‘যেন তারা নিজেদের কল্যাণের স্থানসমূহে উপস্থিত হতে পারে এবং তিনি তাদেরকে চতুষ্পদ জন্তু থেকে যে রিজিক দিয়েছেন, তার ওপর নির্দিষ্ট দিনসমূহে আল্লাহর নাম স্মরণ করতে পারে।’’ [সুরা হজ, আয়াত: ২৮]
.
ইবনু আব্বাস (রা.), ইবনু উমার (রা.), হাসান বাসরি, আত্বা, ইবরাহিম নাখাঈ এবং ফিকহের প্রধান ইমামগণ (রাহিমাহুমুল্লাহ্)-সহ অধিকাংশ মুফাসসিরের মতে, এখানে ‘নির্দিষ্ট দিনসমূহ’ দ্বারা জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিনই উদ্দেশ্য। [ইবনু কাসির, তাফসিরুল কুরআনিল আযিম: ৩/২৮৯; বাগাবি, শারহুস সুন্নাহ: ৫/৩৭৯]
.
(৪) এই দিনগুলোর মধ্যেই আছে ঈদ তথা কুরবানির দিন, যা আল্লাহর নিকট সর্বাধিক মর্যাদাপূর্ণ:
.
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘আল্লাহর কাছে সর্বাধিক মর্যাদাপূর্ণ দিন হলো কুরবানির দিন, অতঃপর স্থিরতার দিন।’’ (অর্থাৎ কুরবানির পরবর্তী দিন, যেদিন হাজিগণ বিশ্রাম করেন) [আবু দাউদ, আস-সুনান: ১৭৬৫; হাদিসটি সহিহ]
.
(৫) এই দিনগুলোতেই অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইবাদত—হজ পালন করা হয়:
.
আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘হজের মাসগুলো সুবিদিত/সুনির্ধারিত।’’ [সুরা বাকারাহ, আয়াত: ১৯৭]
.
(৬) এই দিনগুলোর মধ্যেই আরাফার সুমহান দিনটি রয়েছে, যে দিনটি অনন্য ও অসাধারণ:
.
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘অন্যান্য দিনের তুলনায় আরাফার দিনে আল্লাহ তা‘আলা বান্দাকে সবচেয়ে বেশি জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন।’’ [মুসলিম, আস-সহিহ: ৩৩৫৪; নাসাঈ, আস-সুনান: ৩০০৩]
.
(৭) জিলহজ মাস সম্মানিত চার মাসের একটি:
.
আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট সংরক্ষিত ফলকে (বছরে) মাসের সংখ্যা বারোটি—আসমানসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে। তার মধ্যে, চারটি (মাস) সম্মানিত।” [সুরা তাওবাহ, আয়াত: ৩৬]
.
এই চারটি মাস হলো: মুহাররাম, রজব, জিলকদ ও জিলহজ।
.
(৮) এই দিনগুলোর ইবাদতে লাভ অধিক:
.
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘(জিলহজ মাসের প্রথম দশকে) এক দিনের রোজা অন্য সময়ের এক বছরের রোজার সমান এবং প্রতি রাতের ইবাদত লাইলাতুল কদরের ইবাদতের সমান (মর্যাদার)।’’ [তিরমিযি, আস-সুনান: ৭৫৮; ইবনু মাজাহ, আস-সুনান: ১৭২৮; হাদিসটি দুর্বল]
.
(৯) এই দিনগুলোতে সব মৌলিক ইবাদত সম্পন্ন হয়:
.
জিলহজ মাসের প্রথম দশকের বিশেষ বৈশিষ্ট্যের তাৎপর্য হলো, এতে সকল মৌলিক ইবাদতের সন্নিবেশ ঘটে। যথা: নামাজ, রোজা, সাদাকাহ, হজ ইত্যাদি। অন্যান্য সময়ে একসাথে এতগুলো ইবাদতের সন্নিবেশ ঘটে না। [ইবনু হাজার, ফাতহুল বারি: ২/৪৬০]
.
(১০) সালাফে সালিহিন তথা পূর্বসূরি নেককার ব্যক্তিগণ এই দিনগুলোর বিশেষ কদর করতেন:
.
বিখ্যাত তাবি‘য়ি সা’ঈদ ইবনু জুবাইর (রাহ.)-এর অভ্যাস ছিলো, তিনি জিলহজ মাসের প্রথম দশকে ইবাদতের জন্য কঠোরভাবে সাধনা করতেন। [দারিমি, হাসান সনদে]
.
#বছরের_শ্রেষ্ঠ_দশ_দিন (প্রথম পর্ব)
পরের পর্বে এই দশ দিনের আমলগুলো আলোচনা করা হবে ইনশাআল্লাহ।
.
#Tasbeeh
 
আলহামদুলিল্লাহ আমরা জিলহজ্জ মাস পেয়ে গেলাম। প্রথম দশদিনের আমল আল্লাহর নিকট অন্যান্য দিনের চেয়ে প্রিয় আমল। আমরা যেন বিন্দু মাত্র অবহেলা না করি।

এই দশদিনে কি আমল করবেন?

এই দশদিনের আমলঃ-

১) সিয়াম রাখাঃ- সম্ভব হলে নয়টি রোযা রাখবেন আর সম্ভব না হলে অবশ্যই আরাফার দিন ও আরাফার পূর্বের দিন রোযা রাখুন।

২) যিকির করাঃ এই দিনগুলিতে বেশি বেশি যিকির করা।
বিশেষ করে তাসবিহ ( সুবহানাল্লাহ), তাহমিদ (আলহামদুলিল্লাহ্-) তাহলিল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ), তাকবির (আল্লাহু আকবার) যিকির করা।

৩) ইস্তেগফার ও দরুদপাঠঃ অধিক হারে ইস্তেগফার ও দরুদপাঠ করুন।

৪) কুরআন তিলাওয়াত ও নফল নামায আদায় করাঃ কুরআন তিলাওয়াত করুন। কিয়ামুল লাইল ও তাহাজ্জুদ আদায় করুন।

৫) দু'আ করাঃ দু' আ কবুলের একটি বিশেষ সুযোগ পাচ্ছেন এই দিনগুলিতে। আন্তরিকতার সাথে দু'আ করুন।

৬) সাদকাহ করা। অল্প হলে সাদকাহ করুন।

৭) আরাফার দিনে বেশি বেশি দোয়া করা। দোয়া কবুলের অন্যতম একটি সময়।
আরাফার দিনের দুয়াঃ
ইখলাছ ও বিশ্বাসের সাথে এ দিনে নিম্নোক্ত কালিমাটি বেশী বেশী পড়া উচিত। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরাফার দিন এ কালিমাটি খুব বেশী পড়তেন। (মুসনাদে আহমাদঃ ৬৯২২ )
لَا اِلٰهَ اِلَّا اللهُ وَحْدَهٗ لَا شَرِيْكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ بِيَدِهِ الْخَيْرُ وَهُوَ عَلٰى كُلَّ شَيْئٍ قَدِيْرٍ
বাংলা উচ্চারণঃ লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহুওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু লাহুল মূলকু ওয়া লাহুলহামদু বিয়াদিহিল খাইরু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়্যিন ক্কদির।

৮) তাকবিরে তাশরীক পড়া।
যিলহজ্ব মাসের ৯ যিলহজ্ব ফজর থেকে ১৩ জিলহজ্ব আসর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরজ নামাযের পর একবার তাকবীর বলা ওয়াজিব। পুরুষের জন্য আওয়াজ করে, আর মহিলাদের জন্য নীরবে।
তাকবীর হলঃ
اَللهُ أَكْبَرُ، اَللهُ أكْبَرُ،
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ،
وَاللهُ أَكْبَرُ، اَللهُ أَكْبَرُ
ﻭ ﻟِﻠّﻪ الحَمْدُ
"আল্লহু আকবার, আল্লহু আকবার, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার আল্লহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ।"

৯) ঈদের রাতে ইবাদাত করা।

১০) কুরবানি করা।

১১) ঈদুল আযহার সালাত আদায় করা।

১২) ঈদ ও আইয়্যামের তাশরীকে সিয়াম পালন না করা।
সকলকে অনুরোধ রইলো আমলগুলো নিয়ে অবহেলা করবেন না।

সকল প্রকার হারাম কাজ থেকে দূরে থাকুন। অনুগ্রহ করে কেউ অবহেলা করবেন না এই দিনগুলি। এই দিনের উসিলাই আপনি ও পারেন আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে।

©
 
বিসমিল্লাহ

***কপি***

যিলহজ্ব মাসের সবচেয়ে উৎকৃষ্ট ও মর্যাদাপূর্ণ সময় হল আশারায়ে যিলহজ্ব বা যিলহজ্ব মাসের প্রথম দশ দিন।
রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ মাসের প্রথম দশ দিন অধিক এবাদত করতেন এবং হাদীসে এ দশ দিনে বেশি বেশি এবাদত করার গুরুত্ব প্রদান করেছেন।

কুরআন-হাদীসে এই দশকের বিশেষ ফযীলত ও অসীম গুরুত্ব ও তাৎপর্যের কথা বর্ণিত হয়েছে।
والفجر، وليال عشر
শপথ ভোরবেলার, শপথ দশ রাত্রির।-সূরা ফজর (৮৯) : ১-২

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস রা., হযরত আবদুল্লাহ ইবনে যুবাইর রা. ও মুজাহিদ রাহ. সহ অধিকাংশ সাহাবী, তাবেয়ী ও মুফাসসিরের মতে এখানে দশ রাত্রির দ্বারা যিলহজ্ব মাসের প্রথম দশ রাতকেই বুঝানো হয়েছে। হাফেয ইবনে কাসীর রাহ. বলেন, এটিই বিশুদ্ধ মত।-তাফসীরে ইবনে কাসীর

হাদীস শরীফে এই দশককে দুনিয়ার সবচেয়ে উত্তম ও মর্যাদাবান দশক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
.
হযরত জাবির রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
দুনিয়ার সর্বোত্তম দিনগুলো হল যিলহজ্বের দশ দিন। জিজ্ঞাসা করা হল, আল্লাহর রাস্তায়ও কি তার সমতুল্য নেই? তিনি বললেন, আল্লাহর রাস্তায়ও তার সমতুল্য নেই, তবে ঐ ব্যক্তি, যার চেহারা ধূলিযুক্ত হয়েছে, অর্থাৎ শাহদাতের মর্যাদা লাভ করেছে।
.
অন্য বর্ণনায় হযরত জাবির রা. হতে বর্ণিত:
যিলহজ্বের দশ দিনের চেয়ে কোনো দিনই আল্লাহর নিকট উত্তম নয়।
.
হযরত ইবনে আববাস রা. বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
আল্লাহর নিকট যিলহজ্বের দশ দিনের নেক আমলের চেয়ে অধিক প্রিয় অন্য কোনো দিনের আমল নেই। সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও (এর চেয়ে উত্তম) নয়? তিনি বললেন, না, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও নয়। তবে হ্যাঁ, সেই ব্যক্তির জিহাদ এর চেয়ে উত্তম, যে নিজের জানমাল নিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের জন্য বের হয়েছে, তারপর কোনো কিছুই নিয়ে ফিরে আসেনি।
.
হযরত উম্মে সালামা রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
তোমরা যদি যিলহজ্ব মাসের চাঁদ দেখতে পাও আর তোমাদের কেউ কুরবানী করার ইচ্ছা করে তবে সে যেন স্বীয় চুল ও নখ কাটা থেকে বিরত থাকে।-সহীহ মুসলিম

যে ব্যক্তি কুরবানী করতে সক্ষম নয় সেও এ আমল পালন করবে। অর্থাৎ নিজের চুল, নখ, গোঁফ ইত্যাদি কাটবে না; বরং তা কুরবানীর দিন কাটবে।
.
অন্য হাদীসে হযরত হাফসা রা. বর্ণনা করেন-
চারটি আমল নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো ছাড়তেন না। আশুরার রোযা, যিলহজ্বের প্রথম দশকের রোযা, প্রত্যেক মাসের তিন দিনের রোযা, ফজরের আগে দুই রাকাত সুন্নত নামায।
...…

তিনটি কাজ করা সুন্নত যথা-
১. কুরবানীর পশু যবেহ না করা পযর্ন্ত নখ, চুল, ইত্যাদি কর্তন না করা।
২. দশ তারিখ আগ পযর্ন্ত রোজা রাখা। অর্থাৎ নয় দিন রোজা পালন করা।
৩. রাতে যথাসম্ভব অধিকহারে যিকির ও নফল ইবাদত করা।

তিনটি কাজ করা ওয়াজিব যথা-
১. কুরবানী করা। যদি সামর্থ্য থাকে।
২. ঈদের নামাজ আদায় করা।
৩. তাকবীরে তাশরীক বলা।
 
বিসমিল্লাহ

***কপি***

সহজ কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল জেনে নিন; জিলহজের প্রথম দশ দিনকে কাজে লাগান (বিশেষত যে বোনেরা পিরিয়ডে আছেন, তাদের জন্য প্রতিটি আমল খুবই উত্তম হবে)
.
❖ চার ধরনের যিকর সবসময় পড়া:
.
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘আল্লাহ তা‘আলার নিকট জিলহজের দশ দিনের আমলের চেয়ে মহান এবং প্রিয় অন্য কোনো দিনের আমল নেই। সুতরাং, তোমরা সেই দিনগুলোতে অধিক পরিমাণে তাসবিহ (সুবহানাল্লাহ), তাহমিদ (আলহামদুলিল্লাহ), তাহলিল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্) ও তাকবির (আল্লাহু আকবার) পড়ো।’’ [আহমাদ, আল-মুসনাদ: ৫৪৪৬; হাদিসটির সনদ সহিহ]
.
এই চার ধরনের যিকর এই দিনগুলোতে ১০০ বার করে আদায় করা যায়, কারণ ১০০ বার করে পড়ার সীমাহীন সওয়াব ও মর্যাদা রয়েছে।
.
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মে হানি (রা.)-কে বলেন—
◉ তুমি ১০০ বার ‘সুবহানাল্লাহ’ বলবে, এটি তোমার পক্ষে ইসমাইল (আ.)-এর বংশের ১০০ ক্রীতদাস মুক্ত করার সমতুল্য হবে;
◉ তুমি ১০০ বার ‘আলহামদুলিল্লাহ্’ বলবে, এটি তোমার পক্ষে আল্লাহর রাস্তায় যু[দ্ধে]র জন্য ১০০ টি সাজানো ঘোড়ায় মু[জা]হিদ প্রেরণের সমতুল্য হবে;
◉ তুমি ১০০ বার ‘আল্লাহু আকবার’ বলবে, এটি তোমার পক্ষ থেকে ১০০টি মাকবুল (কবুলকৃত) উট কুরবানির সমতুল্য হবে;
◉ তুমি ১০০ বার ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলবে, এত সওয়াব পাবে, যার ফলে আসমান ও যমিন পূর্ণ হয়ে যাবে। [আলবানি, সহিহুত তারগিব: ১৫৫৩; হাদিসটি হাসান]
.
❖ অধিক পরিমাণে দরুদ পাঠ করা:
.
নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি আমার প্রতি একবার দরুদ পাঠ করবে, আল্লাহ তার প্রতি ১০ বার রহমত বর্ষণ করবেন, ১০ টি গুনাহ মোচন করবেন এবং তার জন্য ১০ টি স্তর উন্নীত করবেন।’’ [নাসায়ি, আস-সুনান: ১২৯৭; ইবনু হিব্বান, আস-সহিহ: ৯০৪; হাদিসটি সহিহ]
.
নামাজের শেষ বৈঠকে যে দরুদটি আমরা পড়ি, সেটি সর্বোত্তম দরুদ। এটি পড়াই উত্তম। তবে, এটি ছাড়া অন্য দরুদও পড়া যাবে।
.
❖ সাধ্যানুযায়ী দান-সদাকাহ করা:
.
নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “প্রত্যেক ব্যক্তি (হাশরের মাঠে) তার সদাকার ছায়াতলে থাকবে, যতক্ষণে লোকদের মাঝে ফয়সালা শেষ না হবে।” [আলবানি, সহিহুল জামি’: ৪৫১০; হাদিসটি সহিহ]
.
❖ ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম’ বেশি করে পড়া:
.
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, দুটি বাক্য এমন রয়েছে, যা উচ্চারণে সহজ, আমলের পাল্লায় অনেক ভারী এবং আল্লাহর কাছে অতি প্রিয়। তা হলো—
.
سُبْحَانَ اللّٰهِ وبِحَمْدِهِ سُبْحَانَ اللّٰهِ الْعَظِيمِ
.
(সুবহানাল্লাহি ওয়া বি‘হামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম)
.
অর্থ: আল্লাহ পবিত্র, প্রশংসা কেবল তাঁরই; মহান আল্লাহ ত্রুটিমুক্ত। [বুখারি, আস-সহিহ: ৬৪০৬]
.
❖ ‘লা ‘হাউলা ওয়া লা কুও-ওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ’ বেশি বেশি পাঠ করা:
.
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “ওহে আব্দুল্লাহ ইবন কায়েস! আমি কি জান্নাতের এক রত্নভাণ্ডার সম্পর্কে তোমাকে অবহিত করবো না?” আমি বললাম, নিশ্চয়ই হে আল্লাহর রাসুল! তিনি বলেন, “তুমি বলো—
.
لَا ﺣَﻮْﻝَ ﻭَﻻَ ﻗُﻮَّﺓَ ﺇِﻻَّ ﺑِﺎﻟﻠَّﻪِ
.
(লা ‘হাউলা ওয়ালা ক্বুও-ওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ)
.
অর্থ: আল্লাহর সাহায্য ব্যতীত (পাপ কাজ থেকে দূরে থাকার) কোনো উপায় নেই এবং (নেক আমল করার) কোনো শক্তি কারো নেই।’’ [বুখারি আস-সহিহ: ৪২০৬; মুসলিম, আস-সহিহ: ২৭০৪]

❖ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ খুব বেশি পরিমাণে পড়তে থাকা:
.
জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘‘সর্বশ্রেষ্ঠ যিকর হলো লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।’’ [তিরমিযি, আস-সুনান: ৩৩৮৩; হাদিসটি হাসান]
.
❖ তাওবাহ-ইস্তিগফার পাঠ করা:
.
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চেয়ে আর কাউকে এটি অধিক পরিমাণে পড়তে দেখিনি—
.
أَسْتَغْفِرُ اللّٰهَ وَأَتوبُ إِلَيْهِ
[আসতাগফিরুল্লাহা ওয়া আতূবু ইলাইহি]
.
অর্থ: আমি আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাচ্ছি এবং তাঁর নিকট তাওবাহ করছি। [ইবনু হিব্বান, আস-সহিহ: ৯২৮; হাদিসটি সহিহ]
.
এটি বেশি করে পড়া যেতে পারে। এটিতে তাওবাহ ও ইস্তিগফার উভয়টিই আদায় হবে। তবে, গুনাহ থেকে অনুশোচনা ও আন্তরিকতা জরুরি।
.
❖ দু‘আ করা:
.
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘দু‘আ হলো ইবাদত।’’ [আবু দাউদ, আস-সুনান: ১৪৭৯; হাদিসটি সহিহ]
.
আমরা দু‘আর ব্যাপারে নিঃস্পৃহ থাকি। অথচ দু‘আ নিজেই একটি স্বতন্ত্র ইবাদত।
.
❖ চারটি সম্মানিত মাসের একটি হলো জিলহজ; তাই এই মাসের সম্মানে যথাসম্ভব সকল গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা:
.
আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট সংরক্ষিত ফলকে (বছরে) মাসের সংখ্যা বারোটি—আসমানসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে। তার মধ্যে চারটি (মাস) সম্মানিত। এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান; সুতরাং এর মধ্যে তোমরা (গুনাহ করার মাধ্যমে) নিজেদের প্রতি অত্যাচার করো না।” [সুরা তাওবাহ, আয়াত: ৩৬]
.
এছাড়া মানুষকে সাহায্য করা, তাদের কষ্ট দূর করা, মা-বাবার খেদমত করা ইত্যাদি আমলগুলোও গুরুত্বপূর্ণ। পিরিয়ডে থাকা বোনেরা নামাজ, রোজা, কাবাঘর তাওয়াফ ও কুরআন তিলাওয়াত বাদে যেকোনো নেক আমল করতে পারবেন।
.
#বছরের_শ্রেষ্ঠ_দশ_দিন (পঞ্চম পর্ব)
:
Tasbeeh
 
বিসমিল্লাহ


ﺗَﻘَﺒَّﻞَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻣِﻨَّﺎ ﻭَﻣِﻨْﻜُﻢْ


উচ্চারণ :

তাকাব্বালাল্লাহু

মিন্না ওয়া মিনকুম।

অর্থঃ
আল্লাহ আমাদের এবং আপনাদের নেক আমলগুলোকে কবুল করুন আমীন

ঈদ মোবারক
 
Last edited:

Similar Threads

Back
Top