বাংলাদেশে মেয়েদের উপর বিয়ে নিয়ে প্রচণ্ড চাপ থাকে।
কোন মেয়ের বয়স ৩০ পার হয়ে গেছে , এখনো অবিবাহিতা অথবা কোন কারণে তার তালাক হয়ে গেছে অথবা সন্তানসহ বিধবা হয়ে বাবার বাড়িতে অবস্থান করছে , এরা পারিবারিক ও সামাজিক চাপের মধ্যে থাকে।
অনেকে এই চাপ সহ্য করতে না পেরে মানসিক অস্থিরতায়, হতাশায় ভোগেন। এই সুযোগ নিতে চায় কিছু প্রতারক।
তারা বিজ্ঞাপনে লিখে ত্রিশোর্ধ , ডিভোর্সি বা সন্তানসহ পাত্রীতে তাদের আপত্তি নেই। এরপর যখন পাত্রী পক্ষ তাদের সাথে যোগাযোগ করে , সুন্দরভাবে কথা বলে তাদেরকে মোহিত করে ফেলে এরা। সুন্দর ভাবে কিভাবে মিথ্যা বলতে হয়, এরা খুব ভালোভাবে সেটা জানে।
কাল দুটো ঘটনা এরকম শুনলাম।
গত ১৬ ই জুলাই ২০১৯ এ প্রথম আলোতে একটা বিজ্ঞাপন এসেছিল : কানাডার সিটিজেন, আইটি ইন্জিনিয়ার , বয়স ৪৬ বিয়ে করার জন্য বাংলাদেশে এসেছেন। আমাদের পেইজের একজন পাত্রী নিজেই যোগাযোগ করলেন তার সাথে ( যদিও আমরা বহুবার পাত্রীদের সাবধান করে বলেছি অভিভাবকের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে ) ।
পাত্র তাকে বললেন, উনি এখন দেশের বাড়িতে আছেন। সেখান থেকে রওনা হয়ে ঢাকায় এসে তার সাথে দেখা করবেন।
এর কিছু পরে ফোন করে বললেন, তার গাড়ি এক ইজিবাইকে ধাক্কা দিয়েছে , যাত্রীরা আহত । এখন কমপক্ষে ১৫ হাজার টাকা না দিলে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়ে যাবে। উনার গ্রামের বাড়িতে এমন কেউ নেই যে তাকে এই মুহূর্তে এত টাকা দিতে পারে ।
উনি পাত্রীকে অনুরোধ করলেন যেভাবেই হোক টাকা ম্যানেজ করে বিকাশ করতে। উনি তার মার সাথেও পাত্রীকে কথা বলালেন। মা অনুরোধ করলেন তাদেরকে বিপদ থেকে উদ্ধার করতে।
পাত্রী সরল বিশ্বাসে টাকা বিকাশ করলেন।
পরদিন সকালে আবার ফোন। পাত্র জানালেন উনি মা বাবাকে রাতে একটা বাসে উঠিয়ে দিয়েছিলেন। গাড়ি ঠিক করার জন্য তাকে থেকে যেতে হয়েছিল । এখন রওনা দিয়েছেন কিন্তু উনার বাবার ১৫,০০০ টাকা খুবই জরুরী ।
উনার ঢাকায় পৌঁছাতে দেরি হবে তাই আবারো
অনুরোধ ১৫ হাজার টাকা বিকাশ করতে ।
আবারো পাত্রী বিকাশ করলেন। ঢাকাগামী সেই বাস জানি না কবে এসে পৌঁছাবে, আপাতত পাত্রীর সাথে পাত্রের যোগাযোগ বন্ধ।
একজন ছেলের সারা বাংলাদেশে কোন আত্মীয়-স্বজন পাড়া-প্রতিবেশী বন্ধু-বান্ধব নেই , যারা বিপদের সময় ১৫ হাজার টাকা ধার দিতে পারে।
বেকার ছেলে হলেও বুঝতাম , প্রবাসী ইঞ্জিনিয়ার।
তার নিজের কাছেও টাকা নেই আর সে এমন কাউকে চেনে না যে টাকা দিতে পারবে।
অচেনা অজানা একজন পাত্রী যার সাথে সামনাসামনি দেখা পর্যন্ত একবারও হয়নি, তার থেকেই টাকা চাইতে হবে , একবার না দুই দুইবার।
একটু চিন্তা করলেই বোঝা যেত এ প্রতারক। প্রবাসী ইঞ্জিনিয়ারের আর্থিক অবস্থা এত খারাপ । সে সারা রাত আর সকালের মধ্যেও নিজের জন্য, বাবার জন্য টাকা জোগাড় করতে পারে না। এ তাহলে কিভাবে বিয়ে করার জন্য দেশে আসলো?
দয়া করে সবাই সাবধান হোন। আপনার দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে যে টাকা পয়সা চাইবে, ধরে নিবেন সে প্রতারক।
অন্য ঘটনা আরও মারাত্মক । লন্ডন প্রবাসী ডাক্তার বাংলাদেশে এসে হাসপাতাল বানাবেন। তিনি বিদেশ থেকে মেশিনারি বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছেন। চট্টগ্রাম বন্দরে সেগুলো আটকে আছে।
উনার বাংলাদেশে তেমন কোন আত্মীয় নেই । তাই পাত্রীপক্ষকে অনুরোধ করলেন মেশিনগুলো ছাড়াবার ব্যবস্থা করতে।
উনি ধার হিসেবে টাকা চাইলেন । দেশে এসে বিয়ের সময় সব শোধ করা হবে।
বলুন তো পাত্রীপক্ষ কত টাকা দিয়েছিল ?
আমাদের আগের ঘটনার আপু ৩০ হাজার টাকার ক্ষতির উপর দিয়ে পার পেয়েছেন। আর এই আপুর পরিবারের গচ্চা গেছে কমপক্ষে ৩০ লাখ টাকা। থানা পুলিশ করে কোন লাভ হয় নি।
কালকে রাত থেকে মনটা খুব খারাপ হয়েছিল এগুলো শুনে। আজ সকালে উঠে যখন মেসেজ পেলাম, আমাদের পেজ এর উদ্যোগে গতকাল
একটা বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে , তখন মন খারাপ ভাবটা কেটে গেল।
এটি আমাদের পেজ এর উদ্যোগে ১৩ তম বিয়ে।
অনেক মুসলিমদের মনে ১৩ সংখ্যা নিয়ে কুসংস্কার আছে, কিন্তু এই ১৩ তম বিয়ের খবর কি যে আনন্দ আমাদের দিয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ।
আল্লাহ প্রতারণা থেকে সবাইকে মুক্ত রাখুন আর দুআ করবেন আল্লাহ যেন নবদম্পতির জীবনে বরকত দেন। আমীন।
Admin
Islamic Matrimony
Christ will never be proud to reject to be a slave to God .....holy Quran, chapter Women , 4: 172
Hey there! Looks like you're enjoying the discussion, but you're not signed up for an account.
When you create an account, we remember exactly what you've read, so you always come right back where you left off. You also get notifications, here and via email, whenever new posts are made. And you can like posts and share your thoughts.
Sign Up
Bookmarks