সা'ঈদ বললেন, 'উমার' আমি আপনাকে আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি, আমার উপর এ বিপদ চাপাবেন না, আমাকে এ দুনিয়ার দিকে টেনে আনবেন না।
উমার রেগে গিয়ে বললেনঃ
আপনার ধ্বংস হোক! খিলাফতের এ দায়িত্ব আমার কাঁধে চাপিয়ে এখন আমার থেকে দূরে থাকতে চান? আল্লাহর কসম আমি আপনাকে ছাড়বো না। একথা বলে তিনি সা'ঈদকে হিমসের গভর্ণর নিযুক্ত করেন। তারপর জিজ্ঞেস করেন, আপনার ভাতা নির্ধারণ করে দেব কি?
সা'ঈদ বললেনঃ আমীরুল মুমিনীন, আমি তা দিয়ে কি করবো? বাইতুল মাল থেকে যে ভাতা লাভ করে থাকি তাইতো আমার প্রয়োজনের তুলনায় বেশি হয়ে যায়। সা'ঈদ হিমসে চলে গেলেন।
কিছুদিন পর আমীরুল মুমিনীন উমার (রা) এর কতিপয় বিশ্বস্ত লোক হিমসে থেকে মদিনায় এলো।
উমার তাদের বললেনঃ তোমাদের গরীব-মিসকিনদের একটা তালিকা তোমরা আমাকে দাও। আমি তাদের কিছু সাহায্য করবো। তারা একটি তালিকা প্রস্তুত করে উমারকে (রা) দিল। তাতে অন্যান্যদের সাথে সা'ঈদ ইবন আমিরের নামটিও ছিল। খলিফা জিজ্ঞেস করলেন, 'এ সা'ঈদ ইবন আমির কে?' তারা বললো, আমাদের আমীর। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, 'তোমাদের আমীরও কি এতো গরীব?'
তারা বললোঃ হ্যাঁ। আল্লাহর কসম! একাধারে কয়েকদিন যাবত তাঁর বাড়িতে উনুনে হাড়ি চড়ে না।
একথা শুনে খলীফা 'উমার এত কাঁদলেন যে, চোখের পানিতে তার দাড়ি ভিজে গেল।
Christ will never be proud to reject to be a slave to God .....holy Quran, chapter Women , 4: 172
নবিজীর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কয়েকজন সাহাবী শেষ বয়সে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন- আসমা বিনতে আবু বকর, হাসসান বিন সাবিত, জাবির ইবনে আব্দিল্লাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহুম)। অন্যদিকে, নবিজীর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জীবদ্দশায় অন্ধ সাহাবীদের মধ্যে বিখ্যাত ছিলেন আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মি মাখতূম (রাদিয়াল্লাহু আনহু)।
আমাদের সমাজের একজন অন্ধ মানুষের কথা চিন্তা করুন। আমরা তাকে কী মনে করি? আমরা মনে করি সে সমাজের জন্য বোঝা! সে ঘর থেকে বাইরে বের হলে আমরা বলি- কোথায় গিয়ে পড়ে যাবা! তারচেয়ে ঘরে থাকো। আমরা তাকে কোনো কাজ দিতে চাই না। তাকে ঐভাবে সম্মান দিই না।
নবিজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সমাজে কাউকে অক্ষম, নির্ভার রাখতে চাননি। তিনি সমাজের সবাইকে এক্টিভ রেখেছেন। সবাইকে বুঝতে দিয়েছেন যে, সে-ও সমাজের অংশ। যে যুদ্ধে পারদর্শী, তাকে যুদ্ধের দায়িত্ব দিয়েছেন, যে কাব্যে পারদর্শী, তাকে কাব্য চর্চার, যে জ্ঞানার্জনে উৎসাহী, তাকে জ্ঞানার্জনে সময় দিতে বলেছেন।
আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মি মাখতূমের (রা মধ্যেও নবিজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গুণ খুঁজলেন। তিনি দেখতে পেলেন তাঁর তো সুরেলা কণ্ঠ আছে, তাঁর তেলাওয়াতও সুন্দর।
নবিজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিভিন্ন যুদ্ধ-অভিযানে মদীনার বাইরে যেতেন। মদীনায় তখন মহিলা সাহাবী এবং অনেক পুরুষ সাহাবী থাকতেন; সবাইকে নিয়ে তো আর একসাথে মদীনার বাইরে যেতেন না। মদীনা যেসব সাহাবীরা থাকতেন, তাঁদের তো নামাজ পড়তে হতো। নবিজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনায় নেই, তাই বলে কি জামআতে নামাজ পড়া লাগবে না?
ঠিক সেই মুহূর্তে তিনি আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মি মাখতূমের (রা গুণ কাজে লাগান। তাঁকে দায়িত্ব দিয়ে যান মদজিদে নববীতে, যেখানে নবিজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইমামতি করেন, সেখানে ইমামতি করার।
চিন্তা করা যায়, যে মসজিদে নবিজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইমামতি করতেন, তাঁর জীবদ্দশায় তাঁর অনুপস্থিতিতে সেই মসজিদে ইমামতির দায়িত্ব পান একজন অন্ধ সাহাবী?
যে মানুষ যে কাজের যোগ্য, নবিজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর যোগ্যতাকে কাজে লাগান। তাঁকে অক্ষম হয়ে বসে থাকতে দেননি।
আরেকটা জিনিস চিন্তা করুন। আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মি মাখতূম (রা তো অন্ধ। তিনি জানতেন না কখন কোন ওয়াক্ত হয়েছে।
সূর্য উঠেছে নাকি ডুবে গেছে। মানুষজন তাঁকে বলে দিতো। তিনি ইমাম হওয়া সত্ত্বেও বাকিদের সহযোগিতা লাগতো। তাহলে, তাঁর ব্যাপারে নবিজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাকিদের কী নির্দেশ দিয়ে যাবেন ভাবা যায়?
এটা স্পষ্ট অনুমেয়, তাঁকে যেনো কটাক্ষ না করেন এই ব্যাপারে সাহাবীদের প্রতি নবিজীর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নির্দেশনা ছিলো।
রামাদ্বান মাসে সেহরীর আগে মসজিদে নববীতে দুটো আজান হতো। একটি আজান দিতেন বিলাল (রা, আরেকটি আজান দিতেন আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মি মাখতূম (রা:।
নবিজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনার বাইরে গেলে ১৩ বার আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মি মাখতূম (রা: মসজিদে নববীর ইমামতির দায়িত্ব পালন করেন।
[৩২ জন সাহাবীর জীবনের গল্প নিয়ে ‘তারা ঝলমল’ প্রথম খণ্ড প্রকাশিত হয়েছে সন্দীপন প্রকাশন থেকে। সেখানে আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মি মাখতূমের (রা: পুরো জীবনী আছে।]
#আরিফুল ইসলাম
Christ will never be proud to reject to be a slave to God .....holy Quran, chapter Women , 4: 172
Hey there! Looks like you're enjoying the discussion, but you're not signed up for an account.
When you create an account, we remember exactly what you've read, so you always come right back where you left off. You also get notifications, here and via email, whenever new posts are made. And you can like posts and share your thoughts.
Sign Up
Bookmarks