বিসমিল্লাহ

হজে ছবি তোলার বাধ্যবাধকতা দূর হোক।
প্রযুক্তির সহায়তায় সহজ হোক হজের আনুষ্ঠানিকতা:


বিজ্ঞানের নব নব আবিষ্কার মানবজাতিকে চমকে দিচ্ছে।
যা আগে বিজ্ঞানের কল্পকাহিনী ছিল , সেগুলোই এখন বাস্তব হয়ে দেখা দিয়েছে।

বিজ্ঞানের আবিষ্কারের সাথে তাল মিলিয়ে হজের আনুষ্ঠানিকতা আরো উন্নত এবং আধুনিক করা জরুরী।

বর্তমানে
হাজীদের পরিচয় সনাক্ত করার জন্য কানসহ
পুরো মুখের ছবি তোলা বাধ্যতামূলক।
অথচ বহু বছর ধরেই আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে মানুষের পরিচয় নির্ধারণের সুবিধা চালু হয়ে গেছে।

আল্লাহর সৃষ্টির একটা অলৌকিক দিক হলো- পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষের মধ্যে একজনের
আঙ্গুলের ছাপ আরেকজনের সাথে মিলে না।
এমনকি যমজ ভাই বোনদের আঙ্গুলে ছাপ আলাদা।

সুবহান আল্লাহ।

আল্লাহ যেন মানুষের পরিচয় সনাক্ত করার জন্যই এভাবে আঙ্গুলের আগায় দিয়ে রেখেছেন প্রত্যেক ব্যক্তির অনন্য বৈশিষ্ট্য। এই আঙ্গুলের ছাপ তাকে আলাদা করেছে পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ থেকে।

এই প্রযুক্তিগত সুবিধা অনায়াসেই যে কোন দেশের বিমানবন্দর থেকে শুরু করে মক্কা-মদিনায়
চালু করা সম্ভব।

হজ পাসপোর্ট এর জন্য কানসহ ছবি তোলার বাধ্যবাধকতা উঠিয়ে দেওয়া এখন
ঈমানের দাবী।


মহান আল্লাহ সৌদি সরকারকে প্রভূত ক্ষমতা ও সম্মান
দান করেছেন।
আল মসজিদ আল হারাম এবং আল মসজিদ আল নববীর দায়িত্বভার তাদের হাতে।
এটা যে কত বড় সৌভাগ্য , সেটা মুসলমান মাত্রই বুঝবেন।

সারা দুনিয়া থেকে যেসব দ্বীনি ভাই বোন হজ্ব এবং ওমরা করতে সৌদিতে যান, তারা আল্লাহর মেহমান।--

আল্লাহর মেহমানদের যেন কোন অসুবিধা না হয়, হজে আসার কারণে তারা যেন কোন বিব্রতকর অবস্থায় না পরেন, সেটা দেখার দায়িত্ব
সৌদি সরকারের ।

এটা একটা খুবই গুরু দায়িত্ব।

এই দায়িত্ব পালনে অনিচ্ছা সত্ত্বেও যেন কোন অবহেলা না হয়, সেদিকে সৌদি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

হাজীদেরকে নানা উপহার দেওয়া, বিনা পয়সায় খাবার দেওয়া , শুক্রবার দিন হজ হলে সোনা উপহার দেওয়া-
এটুকুর মধ্যেই তাদের দায়িত্ব সীমাবদ্ধ না।

সৌদি আরবে আসার জন্য হাজীদেরকে প্রতি বছরই অকারণ কিছু আনুষ্ঠানিকতা পালন করতে হয়।
যেমন,
হজের পাসপোর্ট এর জন্য দ্বীনি বোনদেরকে কানসহ পুরো মুখ খুলে ছবি তুলতে হয়।
পর্দানশীন বোনদের জন্য এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক, বিব্রতকর ও ফরজ বিধান লংঘনকারী ।

একটা ফরজ পালন করতে গিয়ে ইসলামের অন্যতম ফরজ বিধান পর্দা প্রথার মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে এতে।

গায়ের মুহারিম পুরুষদের সামনে আমাদের নিকাবী বোনেরা বাধ্য হয়ে যখন পুরো কান বের করে ছবি তুলেন এবং যার ফলে অনিচ্ছাকৃতভাবে কিছু চুল বের হয়ে আসে,
তাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়।

ইসলামের পবিত্রতম দুই মসজিদের দুনিয়ার
অভিভাবককে আমাদের অন্তরের আর্তনাদ , কষ্ট জানালাম ।

ছবি তোলার বাধ্যবাধকতা তুলে দিয়ে শুধু আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে হজ পাসপোর্ট প্রদান করতে অনুরোধ করছি।

সারা পৃথিবীতে ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে।
আমাদের হিজাবী, নিকাবী বোনদেরকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় হেনস্থা করা হয় এবং তখন নাস্তিকরা হজের উদাহরণ তুলে ধরে। নাস্তিকরা মজা করে বলে, হজের সময় তোমাদের পর্দা কোথায় থাকে?
এই প্রশ্নের সঠিক জবাব তখন আমরা দিতে পারি না।
সৌদি সরকারের উপর দোষ চাপাতে আমরা তখন বাধ্য হই।


সব রকম সুযোগ থাকার পরেও কেন আধুনিকতম একটি প্রযুক্তি হজের সময়
চালু করা হচ্ছে না? পরীক্ষামূলকভাবে হলেও এটি যত দ্রুত সম্ভব চালু করা যেতে পারে।

সকল আলেম ও হজ এজেন্সিকে অনুরোধ : আপনারা সৌদি কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের এই দাবি পৌঁছে দেবেন।


জাবীন হামিদ
ফ্রিল্যান্স প্রতিবেদক