আমার বিয়ের জন্য কেউ কখনো চেষ্টা করেন নি

Muslim Woman

Super Moderator
Messages
12,286
Reaction score
1,449
Gender
Female
Religion
Islam
আমার বিয়ের জন্য কেউ কখনো চেষ্টা করেন নি :

আমার জন্য পরিবারের কেউ কখনো বিয়ের প্রস্তাব আনেন নি । এটা শুনলে অস্বাভাবিক মনে হতে পারে কিন্তু আসলেই এটা সত্যি।

বাবা মারা যাবার পর থেকেই মা অসুস্থ । আমার বিয়ের জন্য মা কাউকে কখনো বলেন না।

একদিন শুধু বলেছিলেন , তুই আমার এত আদরের মেয়ে । শ্বশুরবাড়িতে তোকে কষ্ট দিলে আমি সহ্য করবো কিভাবে ? বড় ভাই ভাবিও কখনোই আমার বিয়ের জন্য চেষ্টা করেন না।

খালা মামারা মাঝে মাঝে বিয়ের কথা তুললেও মার কথা ভেবেই পিছিয়ে আসেন। আমি শ্বশুরবাড়ি চলে গেলে তাদের এই অসুস্থ বোনের সেবা
যত্ন কে করবে ?

বড় ভাই ভাবির মনেও এই একই আতঙ্ক । আমার বিয়ে হয়ে গেলে অসুস্থ মায়ের সব দায়িত্ব তাদেরকে নিতে হবে। তাই নিজে থেকে চেষ্টা করা তো দূরের কথা, সহকর্মী বা পাড়া-প্রতিবেশী কেউ কোনো
প্রস্তাব আনলে নানা অজুহাতে ফিরিয়ে দেন।

ছেলের ঢাকায় বাড়ি নেই , ছেলের বাবা মার শিক্ষাগত যোগ্যতা কম , ওদের দেশের বাড়িতে পাকা বাড়ি নেই . আমাদের একটা মান সম্মান আছে না ? এখানে বিয়ে সম্ভব না। এভাবে বেশ কিছু প্রস্তাব ভাই ভাবি ফিরিয়ে দিয়েছেন।

কখনো আমার কাছে প্রস্তাব আসতেই পারে না। তার আগেই ভাই ভাবি নাকচ করে দেন। দু একটা প্রস্তাব ভাবি গোপনে তার নিজের বোনদের জন্য বাপের বাড়িতে পাঠিয়েছেন।

আমার বিয়ের বয়স পার হয়ে গেল। হয়তো চেষ্টা করলে বাচ্চা সহ
বিপত্নীক ডিভোর্স পাত্র পাওয়া যেত । কিন্তু মা ,ভাই , ভাবি কেউ না বললে আমি নিজে থেকে কিভাবে বলি এই কথা ? ঘর জামাই পাত্র দেখার কথাও কেউ বলল না।

মা চলে গেলেন একসময়।
ভাবী চাকরিতে ঢুকে গেছেন। ভাবির মেয়েকে আমি দেখে রাখি।
আমার মত বিশ্বাসী বিনা পয়সার একটা কাজের বুয়া থাকলে চাকরি করতে অনেক সুবিধা । কাজের লোককে বেতন কম দিলে বা বকাঝকা দিলে তারা
অন্য বাসায় চলে যায় ।

আমাকে বেতন দিতে হয় না , আর ধমক দিলেও আমার কোথাও যাবার জায়গা নেই।

অফিস থেকে ফেরার পর বাচ্চার জন্য ভাবির ভালোবাসা একদম উথলে পরে আর
আমি হই অপরাধী ।

কেন ভাবীর নির্দেশ মতো সব কাজ অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে পারি নি , সেগুলি আমার মহা অপরাধ হয়ে যায়।

আমি বিনা বেতনে ভাবির বাচ্চাকে
সারাদিন দেখে রাখি বলেই তো ভাবি চাকরি করতে পারছেন । কিন্তু সেটা ভাবি স্বীকার করেন না। উনি ভাবেন , আমাকে তাদের সাথে রেখেছেন, এটাই অনেক দয়া দেখানো হচ্ছে।

মা বাবা দুজনেই মারা যাবার পর আমি ভেবেছিলাম , হয়তো বা ওয়ারিশন সূত্রে কিছু টাকা হাতে পাব। তাহলে ইচ্ছামত একটু খরচ করতে পারতাম, নিজের জন্য আর চেনা পরিচিত গরিবদের জন্য । কিন্তু হাত খরচের সামান্য টাকা ছাড়া ভাইয়া কখনোই আমাকে টাকা দেন না।

এই টাকা দেবার সময় ভাবি এমন মুখ বানান, যেন আমি জোর করে তার স্বামীর রোজগারে ভাগ বসাই ।
অথচ এগুলো তো আমার প্রাপ্য টাকা। আমার মা বাবার রেখে যাওয়া সম্পত্তি থেকে এগুলো পাচ্ছি।

ভাই এর মেয়েটা খুব সুন্দর । ওর জন্য বিয়ের প্রস্তাব আসা শুরু হয়েছে। কিন্তু ও চায় না , ওর মা-বাবাও
চান না এখন বিয়ে। আগে পড়াশোনা , চাকরি , তারপর সব দিকে যোগ্য ছেলে পাওয়া গেলে তখন বিয়ের কথা ভাবা যাবে।

মাস্টার্স করার পর আমার ভাতিজি বায়না ধরল সে পিএইচডি করতে বিদেশে যাবে।
আমি একবার বলেই ফেললাম, বিয়ে করে বরের সাথে একসাথে গেলে হতো না ? কিন্তু সময় কম , সেমিস্টার শুরু হয়ে যাচ্ছে । ছেলে দেখার সময় নেই, ভাতিজি চলে গেল।

কিছুদিন পর খবর পেলাম ওর পিঠে খুব ব্যথা হয়, হাঁটতে কষ্ট হয়। ঔষধ খেয়ে ও ব্যথা কমায়।

ওর জন্য অনেক প্রস্তাব আসে কিন্তু ও তো দেশে থাকে এমন
ছেলে বিয়ে করবে না। ওর জন্য প্রবাসী খুঁজতে খুঁজতে আরো দিন পার হয়ে গেল। ভালো ছেলে পাওয়া যায় কিন্তু ও যে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ছে সেখানে নয়। অন্য জায়গায় গিয়ে ছেলে দেখার সময় নেই ভাতিজির , প্রবাসী ছেলেরাও ব্যস্ত । তাও সময় করতে পারতো কিন্তু আমার ভাতিজির আসলে এত তাড়াতাড়ি বিয়ের ইচ্ছা নেই। কেউ মেসেজ দিলে বা কল করলে ও ফোন ধরে না , মেসেজের জবাব দেয় না ।

এভাবে দুই বছর পার হয়ে গেল। ওর বয়স এখন তিরিশ ছুঁই ছুঁই। ভাইয়া ভাবী এখন চিন্তা করছেন
মেয়ের
বিয়ের কথা । কিন্তু ২৯ + বললে মানুষ ধরে নেয় বয়স ৩০ পার হয়ে গেছে । মেয়ের জন্য মানানসই প্রস্তাব আর তেমন আসছে না । মানানসই পাত্র পেলে দেখা যায় সে
ডিভোর্সড ।

শুনে ভাতিজি শিঁউরে উঠে , ভাইয়া ভাবী বিরক্ত হন। তাদের মেয়ের জন্য এমন অপমান জনক
প্রস্তাব যে নিয়ে আসে , তাকে নানা
কথা শুনিয়ে দেন ভাবি।

এই সময় ধরা পরল আমার ভাতিজির মেরুদন্ডের হাড়ে
যক্ষ্মা হয়েছে । এমন অসুখের কথা আমি আগে কখনো শুনি নি । ও শয্যাশায়ী হয়ে পরলো , পিএইচডি শেষ করতে পারলো না। অনেক দিন অসুখে ভুগলো ও। চোখের সামনে দেখছি ওর বিয়ের বয়স পার হয়ে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে ভাবি আমার কোন বদ দুয়া লেগে গেল না তো ?

আল্লাহ সাক্ষী, আমার ভাতিজির জন্য কখনো এমন কিছু আমি চিন্তা করি নি। ভাইয়া ভাবির প্রতি আমার অভিমান আছে , ওদের আচরণে আমি অনেক কষ্ট পেয়েছি।

আমার স্বামী নেই , সংসার নেই , বাচ্চা নেই, কোন ব্যাংক ব্যালেন্স নেই---এসব কিছুর জন্য ভাইয়া ভাবি দায়ী।

মা অসুস্থ , অসহায় ছিলেন কিন্তু ভাই ভাবি কেন আমাকে একাকী জীবনে রাখলেন ? ভাবি তার বাপের বাড়ি থেকে সম্পত্তি পেয়েছেন কিন্তু ননদকে সম্পত্তির অংশ দিতে কখনো স্বামীকে বলেন না।

কোন বাবা অথবা ভাই কি লেখাটা পড়ছেন ? দেখুন তো আপনার পরিবারে এমন কেউ আছেন কি না ? একাকী নিঃসঙ্গ জীবন তার।

আপনি তার বিয়ে নিয়ে কোন চিন্তা করছেন না অথচ উনি হয়তো এখনো মনের সংগোপনে ভাবেন : যদি একটা সংসার হত।

আপনার প্রতি আপনার বোন বা মেয়ের কোন অভিমান নেই তো ? সে নিরবে চোখের পানি ফেলছে না তো ?

বিধবা বা তালাকপ্রাপ্তা কারো চোখের পানি আর দীর্ঘশ্বাস আপনার জীবনে অভিশাপ হয়ে যেন ফিরে না আসে।

আর কোন মেয়েকে যেন বলতে না হয় , আমার বিয়ের জন্য কেউ কখনো চেষ্টা করে নি।
আমার স্বামী ,সংসার , বাচ্চা, ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স কিছুই নেই।

( ঘটকালির অভিজ্ঞতা থেকে লেখা )

Admin , Islamic Matrimony
 
No. In short , a sister said -no one ever tried for her Marriage. When her father died , mom became sick.

Her elder brother was afraid that if sis gets married , he and his wife will have to look after sick mom. Also , he did not give her any share from parents property.

Sis was saying , she does not have hubby , baby , a family life or any bank balance.
 
Hi
am a firm memver like you all.
I cannot make sense of what this sister is asking or what is question?
 
Bismillahir Rahmanir Rahim

This section is for Bangla /Bengali speaking
people.
 

Similar Threads

Back
Top