‘ভালবাসার দিন’কে না বলুন

Muslim Woman

Super Moderator
Messages
12,286
Reaction score
1,449
Gender
Female
Religion
Islam
:sl:




‘ভালবাসার দিন’ বা ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’র কাহিনী

অনুবাদ : জাবীন হামিদ

প্রশ্ন: আমি মুসলমান । জানতে চাই আমি কি ভালবাসা উৎসব পালন করতে পারবো ?
উত্তর . এই দিবস শুরু হলো কিভাবে ? চলুন আমরা প্রথমে সেটা জেনে নেই । আজ থেকে সতেরো শতাব্দী আগে “ভালবাসার দিন” ছিল রোমের মূর্তি উপাসকদের অন্যতম উৎসব । এটা ছিল তাদের ধর্মীয় বা আধ্যাত্মিক বিশ্বাসের প্রকাশ ।


রোমানদের এই উৎসবের সাথে অনেক গল্প - উপকথা মিশে ছিল যা পরে খ্রিস্টানদের মধ্যে চালু হয় । এসবের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত গল্পটি হলো - রোমের প্রতিষ্ঠাতা রমিউলাস এক মাদী নেকড়ের দুধ পান করে হয় শক্তিশালী ও জ্ঞানী ।


রোমানরা প্রতি বছর ফ্রেরুয়ারির মাঝামাঝিতে এই ঘটনাকে স্মরণ করে উৎসব করতো । উৎসবে কুকুর ও ছাগল বলি দেয়া হতো । দু’জন শক্তিশালী তরুণ নিজেদের সারা গায়ে এই মৃত কুকুর ও ছাগলের রক্ত মাখাতো , তারপর দুধ ঢেলে সেই রক্ত পরিষ্কার করতো । এরপর শুরু হতো বিশাল কুচকাওয়াজ যার সামনে থাকতো সেই দুই তরুণ ।


তারা হাতে চামড়ার টুকরা নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতো ও যে তাদের সামনে আসতো , সেই চামড়া দিয়ে তাদেরকে আঘাত করতো । রোমান নারীরা বিশেষ করে যাদের বাচ্চা হতো না তারা খুশীমনে যুবকদের এই আঘাত নিজেদের শরীরে গ্রহণ করতো ; কেননা , প্রচলিত বিশ্বাস ছিল এতে তাদের সন্তান হবে । তাছাড়া বাচ্চা হতে ভবিষ্যতে যাতে কোন সমস্যা না হয় , তারও প্রতিষেধক হিসাবে অনেক নারী নিজ দেহে এই আঘাত নিতো ।



এছাড়া মনে করা হতো নেকড়ে থেকে নিজেদের পশুর পাল নিরাপদ থাকবে । এই সব বিশ্বাস ইসলাম বিরোধী ; কেননা , শক্তি , জ্ঞান , সন্তান , সম্পদ - এসব কিছুর দান করার ক্ষমতা শুধু আল্লাহর।
সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন ও এই উৎসবের মধ্যে সম্পর্ক : সন্ত্ত ভ্যালেনটাইন সম্পর্কে বলা হয় যে ধর্মীয় বিশ্বাসের জন্য ২৯৬ খ্রীস্টাব্দে তিনি গথিক নেতা ক্লডিয়াসের অত্যাচারে রোমে ‘ শহীদ’ হন । তার স্মৃতিকে চিরস্থায়ী করতে তিনি যেখানে মারা যান সেখানে ৩৫০ খ্রীস্টাব্দে একটি গির্জা বানানো হয় ।



রোমানরা যখন খ্রিস্ট ধর্ম গ্রহণ করে তখন তারা এই উৎসবকে ‘ আধ্যাত্নিক ’ ভালবাসার বদলে ‘ শহীদের প্রতি ভালবাসা ’ হিসাবে পালন করা শুরু করে । তারা মনে করতো সন্ত্ত ভ্যালেনটাইন শান্তি ও ভালবাসার জন্য আত্মত্যাগ করেছেন । এই দিনকে প্রেমিক - প্রেমিকাদের উৎসব হিসাবেও চিহ্নিত করা হলো ।



এদিন বিবাহযোগ্যা নারীদের নাম কাগজে লিখে টেবিলের উপর রাখা হতো । এরপর তরুণদের ডাকা হতো নাম বাছাইয়ের জন্য । যে ছেলে যে মেয়ের নাম লেখা কাগজ তুলতো , পরের এক বছর সেই মেয়ের প্রতি সে নিবেদিত থাকতো ।



এভাবে একবছর মেলামেশার পর হয় সেই জুটি বিয়ে করতো , নয়তো পরের বছর আবার নতুন সাথী বাছাই করার জন্য ভালবাসার উৎসবে যোগ দিত । অনেক খ্রীস্টান ধর্মযাজক এই ঐতিহ্যের নিন্দা করেছেন , কেননা এটা তরুণ- তরুণীদের নৈতিক চরিত্র নষ্ট করে । ফলে রোমে এই প্রথা বন্ধ করা হয় । তবে পরে এটি আবারো চালু হয় যখন পশ্চিমা কিছু দেশে ‘ ভ্যালেনটাইনের বই ’ নামে ছোট ছোট কবিতার বই বিক্রি শুরু হয় ।



এই সব বইতে থাকতো প্রেমের কবিতা যা থেকে পছন্দমতো বেছে নিয়ে প্রেমিকা - প্রেমিকা একে অন্যকে শুভেচ্ছা হিসাবে পাঠাতো । কিভাবে প্রেমের চিঠি লিখতে হবে , এই বইগুলিতে সেসবও শেখানো হতো ।



আল - আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সৌদ ইবরাহীম সালেহ বলেন : ইসলাম শান্তি , মানবতা ও ভালবাসার ধর্ম । আল্লাহ বলেন : মুমিনগণ একে অন্যের ভাই ভাই ; সুতরাং তোমরা ভাইদের মধ্যে শান্তি স্থাপন কর ও আল্লাহকে ভয় কর যাতে তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হও ( সুরা হুজুরাত ; ৪৯ :১০ ) । ধর্মীয়ভাবে যা যা বৈধ , সেভাবে ভালবাসার প্রকাশ ঘটাতে হবে । সবচেয়ে বেশী গূরুত্ব পাবে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল صلى الله عليه وسلم এর প্রতি ভালবাসা ।



ভালবাসা দিবসকে না বলুন :


ভালবাসার দিনকে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করার জন্য আজকাল বলা হচ্ছে এটা শুধু প্রেমিক – প্রেমিকাদের জন্য নয় , বরং মা – বাবা , ভাই –বোন , আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুদের জন্যও । কিন্ত্ত বাস্তবে আমরা কী দেখি ? এই দিবস তরুণ – তরুণীরা কিভাবে পালন করে ? যে যার প্রেমিক – প্রেমিকাকে শুভেচ্ছা কার্ড দেয় , দামী উপহার দেয় , কখনো দু’জনে মিলে নির্জনে , কখনো দল বেঁধে পার্কে , রেস্তোরায় আড্ডা , কেক কেটে একে অন্যকে খাইয়ে দেয় , কোন পার্টিতে গিয়ে নারী- পুরুষের একসাথে নাচ - গান করে , নেশা করে অর্থাৎ পশ্চিমা সংস্কৃতির খারাপ যা যা আছে , তা উদভ্রান্তের মত এদিন নকল করা হয় ।



একবারের জন্যও কি এই তরুণ – তরুণী ও তাদের অভিভাবকদের মনে ভাবনা আসে যে ইসলামে নারী – পুরুষের এই অবাধ মেলামেলা বৈধ নয় ? এই নির্লজ্জতা তাদের কোন করুণ পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে পারে ? আল্লাহ বলেছেন , তোমরা প্রকাশ্যে বা গোপনে হোক , অশালীন কাজের কাছেও যেও না ( সুরা আন’আম; ৬ : ১৫১ ) ।


ভালবাসা দিবসে প্রেমিক – প্রেমিকা যখন প্রকাশ্যে বা নির্জনে ঘনিষ্ঠ হবে , তখন এই নির্লজ্জতাকে উৎসাহ দিতে তাদের সাথী হবে শয়তান । নির্লজ্জতার প্রতিযোগিতা : নির্লজ্জতা আজ মুসলমানদের মধ্যে ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়েছে ।
আল্লাহর রাসূল صلى الله عليه وسلم বলেছেন , “ শালীনতা ঈমানের অংশ । সব ধর্মেরই কোন না কোন বৈশিষ্ট্য আছে , ইসলামের বৈশিষ্ট্য শালীনতাবোধ” । আমরা যেন এটা ভুলে না যাই ও ভালবাসা দিবসে নির্লজ্জতার প্রতিযোগিতায় মেতে না উঠি ।

২৪/৩৬৫ :


সত্যি যদি মা –বাবা , আত্নীয়স্বজনের জন্য কিছু করতে চান , তা করতে হবে ২৪/৭ বা ২৪/৩৬৫ অর্থাৎ সপ্তাহের সাত বা বছরের প্রতিটি দিন ; নির্দিষ্ট কোন দিন – তারিখ হিসাব করে নয় । তাছাড়া , সবচেয়ে যেটা ভয়ের ব্যপার তাহলো এই ভালবাসা বা ভ্যালেন্টাইনস ডের মুলে রয়েছে শিরক – যা ইসলামে সবচেয়ে বড় পাপ । আল্লাহ বলেন : যে কেউ আল্লাহর শরীক করলে নিশ্চয়ই আল্লাহ তার জন্য জান্নাত নিষিদ্ধ করবেন ও তার আবাস জাহান্নাম ( সুরা মায়িদাহ : ৫ : ৭২ ) ।


রাসূল صلى الله عليه وسلم বলেছেন : কেউ যদি আপন মায়ের সাথে ব্যভিচার করে , তাহলেও সে একদিন বেহেশতে যাবে যদি শিরকের পাপ না করে ।



কুফরী বিশ্বাস ও অশালীনতায় ভরা ভালবাসার দিন মুসলমানদের জন্য কোন উৎসব হতে পারে না ।

আল্লাহর রাসূল صلى الله عليه وسلم বলেছেন , মুসলমানদের উৎসব দুইটি - ঈদ – উল –ফিতর ও ঈদ – উল আযহা ।


ভালবাসার দিন পালনের নামে কোন অশালীন কাজে আমরা যেন জড়িয়ে না পড়ি , সেজন্য ইনশাআল্লাহ নিজ নিজ পরকালের স্বার্থেই সবাই সতর্ক থাকবো ।

যাদের ফেইসবুকে একাউন্ট আছে , তারা ভ্যালেন্টাইনস ডে’ কে না বলুন – এইদলে যোগ দিন ।

তথ্যসূত্র : ১ .Valentines Day a No-No for Muslimshttp://www.facebook.com/#!/event.php?eid=192253310803142&index=1
২ . Valentine's Day From an Islamic Perspective http://www.islamonline.net/servlet/...FatwaE/FatwaE&cid=1119503544946#ixzz1DbvJb1Dl
 
বিসমিল্লাহ


আগামীকাল বৃহস্পতিবার ভালোবাসা দিবস পালন না করে সুন্নাহ সিয়াম পালন করুন।

সেহরির শেষ সময় ৫: ১৩ , ফজর শুরু ৫:১৯ মিনিট এ
 
Dukher bishoy hocche eshob joghonno Poshchima culture Bangladeshe aro beshi procharito hoche, thanks to Awami League.

Ajke Pohela Falgun chilo, bolte gele khub e baje obostha.
 
বিসমিল্লাহ

***কপি***

বিয়ের আগে একটু-আধটু জানাশোনা ও লিভ টু গেদার হলে বিবাহ-পরবর্তী বোঝাপড়াটা ভালো হয়, এ দাবি অনেকের।

অথচ অভিজ্ঞতা ভিন্ন কথা বলে। সরাসরি বিবাহ করা আগের জেনারেশনের পারস্পরিক বোঝাপড়া আজকের লিভ টু গেদার প্রজন্মের চেয়ে ভালো, তাদের ভালোবাসা আমাদের চেয়ে নিখাদ এবং তাদের সম্পর্ক আজকের জেনারেশনের চেয়ে বেশি টেকসই ছিলো।

সুতরাং প্রিয় তরুণ, দৃঢ়তার সাথে হারামকে না বলুন। হালাল সম্পর্কের জন্য অপেক্ষা করুন। শয়তানের ফাঁদে পা না দিয়ে মহান আল্লাহর নির্দেশিত পথে থাকুন।

জোয়ারে গা না ভাসিয়ে স্রোতের বিপরীতে চলতে শিখুন। শান্তির সৃষ্টিকর্তা তার অবাধ্যতার পথে শান্তি রাখেননি। যেটাকে আপনি সুখ ভাবছেন সেটা মূলতঃ মরীচিকা।

Shaikh Ahmadullah Hafizahullah©️
 

Similar Threads

Back
Top